জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য যেন না হয়ে ওঠে আফগানিস্তান, কড়া বার্তা দিল্লির

Afghanistan : কোনওভাবেই যেন প্রতিবেশী দেশগুলিকে হুমকি দেওয়ার পথে না এগোয় আফগানিস্তান। কড়া বার্তা ভারতের।

জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য যেন না হয়ে ওঠে আফগানিস্তান, কড়া বার্তা দিল্লির
জন পরিষেবায় নরেন্দ্র মোদীর ২০ বছরের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০ দিন ব্যাপী সেবা ও সমর্পণ অভিযান নিয়েছিল বিজেপি। ছবি ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 09, 2021 | 7:22 PM

নয়াদিল্লি : ব্রিকস সম্মেলনে আফগানিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোনওভাবেই যেন প্রতিবেশী দেশগুলিকে হুমকি দেওয়ার পথে না এগোয় আফগানিস্তান। একইসঙ্গে মাদক পাচার এবং সন্ত্রাসবাদকেও যেন কোনওভাবে মদত দেওয়া না হয়। অন্তর্বর্তীকালীন তালিব সরকারকে শুরুতেই সতর্ক করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

আফগানিস্তানের নবগঠিত তালিব সরকারকে এখনও পর্যন্ত কোনওরকম স্বীকৃতি দেয়নি ভারত সরকার। আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তানের নাগরিকরা দশকের পর দশক ধরে নিজেদের অধিকারের জন্য এবং তাঁদের দেশ কেমন হবে, তা ঠিক করার জন্য সংগ্রাম করেছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়া সহ ব্রিকসগুলির সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানরা।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও আফগানিস্তানের সঙ্কটময় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, “আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলি সেনা সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে সেখানে আরও একটি নতুন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এখনও আমাদের কাছে কোনও স্পষ্ট ধারনা নেই এই সঙ্কট আঞ্চলিক এবং বিশ্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কীভাবে প্রভাবিত করবে।

তাঁর বক্তব্য, বিশ্ব নিরাপত্তা এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। পরিস্থিতি ক্রমেই তলানিতে এসে ঠেকেছে। আফগানিস্তান ইস্যুতে সতর্ক নজর রাখছে রাশিয়া। রাশিয়া এবং ব্রিকসের অন্যান্য সদস্য দেশগুলি বারবার আফগানিস্তানের মাটিতে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা ফেরানোর কথা বলে আসছে। উল্লেখ্য সম্প্রতি ব্রিকসে সন্ত্রাসবাদ দমনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

১৫ অগস্ট তালিবরা কাবুলের দখল নেওয়ার পরই চিন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বেজিং থেকে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে যে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল (আশরাফ গনির আমলে) তা থেকে মুক্তির জন্য এই পদক্ষেপ অবশ্যম্ভাবী। তালিবানও জানিয়েছে, তাদের সরকারের সবথেকে বড় অংশীদার হতে চলেছে চিন। আর তারপর এই ঘটনা যে শুধু সময়ের অপেক্ষা, তা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন অনেকেই।

আবার পাকিস্তানও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তালিবদের আফগানিস্তানের তখতে স্বাগত জানিয়েছে ইসলামাবাদ। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, আফগানিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের ডেরা হয়ে উঠতে পারে। আইসিস থেকে শুরু করে আলকায়েদা, প্রত্যেকেই নিজেদের জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করতে পারে কাবুলের মাটি।

আর যদি সরষের মধ্যেই ভূত থাকে তাহলে তা আরও সহজ। আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করছে তালিবান। অনেক প্রতিশ্রুতি ছিল। বলা হয়েছিল, নতুন প্রজন্মের তালিবরা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করবে না। কিন্তু সরকার গঠন হতেই স্পষ্ট, তালিবান আছে তালিবানেই। কোনও পরিবর্তন নেই। অন্তর্বর্তীকালীন তালিবান সরকারে ঠাঁই পেয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকাভুক্ত পাঁচ জঙ্গি নেতা। একজন রয়েছেন কট্টর ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ। আর একজন মন্ত্রীর মাথার উপর তো এক কোটি মার্কিন ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

১৫ অগস্ট তালিবানরা কাবুল দখলের পর সুপ্রিম লিডার হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজ়াদা বক্তব্য ছিল, তালিবরা আন্তর্জাতিক আইনের মেনে চলবে। ইসলামিক আইনকে আন্তর্জাতিক আইন ও সমঝোতার পথে বাধা হতে দেবে না। তালিব নেতাদের প্রতিশ্রুতির পর গোটা বিশ্বের কূটনৈতিক মহল আশায় ছিল, আফগানিস্তানের নতুন তালিবান সরকার গঠনমূলক হবে। আফগানিস্তানের সব প্রান্তের, বিশেষ করে আফগানদের সরকারে জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু সময় আসতেই নিজেদের মুখোশ খুলতে শুরু করে দিয়েছে তালিবান।

আরও পড়ুন : এক ঝাঁক ‘জঙ্গি’ মন্ত্রিসভায়, তাদের মাথার দাম শুনলে আঁতকে উঠবেন