Madhya Pradesh School: এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা দুই হাতে লিখতে পারে, কথা বলে পাঁচ ভাষায়!

Veena Vadini Public School in Madhya Pradesh: ব্যসাচী, অর্থাৎ যারা দুই হাতেই সমান দক্ষতায় লিখতে পারে। এটা সাধারণত জন্মগত প্রতিভা হলেও, মধ্যপ্রদেশের এই স্কুলে শিক্ষার্থীদের দুই হাতে লিখতে সক্ষম করে তুলতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে শেখানো হয় পাঁচটি ভাষা।

Madhya Pradesh School: এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা দুই হাতে লিখতে পারে, কথা বলে পাঁচ ভাষায়!
দুই হাতে লিখছে বীনা বাদিনী পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 18, 2022 | 9:08 AM

ভোপাল: আমাদের চারপাশে অধিকাংশ ব্যক্তিই ডান হাতে লেখেন। হাতে গোনা কয়েকজনকে দেখা যায় বাঁহাতে লিখতে। আর অত্যন্ত বিরল হল সব্যসাচীরা, অর্থাৎ যারা দুই হাতেই সমান দক্ষতায় লিখতে পারে। এটা তাঁদের জন্মগত প্রতিভা। তবে, মধ্য প্রদেশের (Madhya Pradesh) সিঙ্গরৌলি জেলায় এমন একটি স্কুল (Veena Vadini Public School) আছে, যেখানে সকল শিক্ষার্থীরাই দুই হাতে লিখতে পারে। এর জন্য তাদের স্কুল থেকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, এই স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা কথা বলতে পারে পাঁচটি ভাষায়। এই ভাষা শিক্ষাও দেয় স্কুলই। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই অদ্ভুত স্কুলটি সম্পর্কে।

সিঙ্গরৌলি জেলার বুধেলা গ্রামে অবস্থিত বীণা বাদিনী পাবলিক স্কুল। ১৯৯৯ সালে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখানে যেসব ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে, তাদের সকলকে সব্যসাচী হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের পাঁচটি ভাষায় দক্ষ করে তোলে – হিন্দি, ইংরেজি, সংস্কৃত, উর্দু এবং স্প্যানিশ। এখনও পর্যন্ত এই স্কুল থেকে ৪৮০ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। তারা প্রত্যেকেই দুই হাতে সহজেই লিখতে পারে এবং গড়গড়িয়ে বলতে-লিখতে-পড়তে পারে পাঁচটি ভাষা।

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বীনা বাদিনী পাবলিক স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র বলেছে, “প্রথমে আমি আমার ডান হাত ব্যবহার করেই লিখতাম। এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর আমি আমার বাঁ হাত ব্যবহার করে লিখতে শিখেছিলাম। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে আমি দুই হাত ব্যবহার করে লিখতে শিখে গিয়েছিলাম।” স্কুলের আরেক ছাত্র বলেছে, “যখন আমি নিচু ক্লাসে পড়তাম, তখন আমি শুধুই ডান হাত দিয়ে লিখতাম। তারপরে বাঁহাতেও লিখতে শিখেছি। আমরা পাঁচটি ভাষাও জানি।”

এই স্কুলে শিক্ষার্থীদের দুই হাতে লেখায় দক্ষ করে তুলতে বিশেষ ক্লাস নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি, সপ্তাহের পাঁচদিনের প্রতিদিন শিক্ষকরা একটি করে ভাষার শিক্ষা দেন। স্কুলের অধ্যক্ষ বীরাঙ্গদ শর্মা জানিয়েছেন, এই অভিনব উদ্যোগের পিছনে অনুপ্রেরণা হলেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ। তিনি বলেছেন, “প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ ছিলেন সব্যসাচী, দুই হাত ব্যবহার করে লিখতে পারতেন। আমরা এটিকেই অনুপ্রেরণা হিসাবে নিয়েছিলাম এবং আমাদের বাচ্চাদের একই দক্ষতা শিখতে সাহায্য করেছি।”

নিয়মিত অনুশীলনের ফলে এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা মাত্র ১১ ঘন্টায় ২৪,০০০ শব্দ পর্যন্ত লিখতে পারে বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ বীরাঙ্গদ শর্মা। তবে তিনি জানিয়েছেন, এটা কোনও যান্ত্রিক কার্যকলাপ নয়, বরং আধ্যাত্মিক অনুশীলন। তিনি বলেছেন, “যোগ, ধ্যান এবং ইচ্ছাশক্তির জোরেই এই প্রতিভা বিকাশিত হতে পারে। এই কারণেই স্কুলে প্রতিদিন এই বিষয়গুলি নিয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে চর্চা হয়। সব্যসাচী হওয়া স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটায়, মস্তিষ্ককে সচল রাখে এবং সবচেয়ে বড় কথা সময় সাশ্রয়ী।”

স্থানীয় মনোবিজ্ঞানী আশিস পান্ডের জানিয়েছেন, মানব মস্তিষ্ক দুটি ভাগে বিভক্ত। সাধারণত এক সময়ে আমরা মস্তিষ্কের একটি ভাগই ব্যবহার করতে পারি। বিনা বাদিনী স্কুলের শিক্ষার্থীদের এমন প্রশিক্ষণ পাওয়ার ফলে, মস্তিষ্কের উভয় অংশই ব্যবহার করতে সক্ষম।