Supreme Court: ‘আমরা হৃৎস্পন্দন বন্ধ করতে পারি না’, ২৬ সপ্তাহের গর্ভপাতের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টের
Medical Termination of Pregnancy Act: গর্ভপাত আইনের অধীনে বিবাহিত মহিলারা গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে পারেন। ধর্ষিতা বা অন্যান্য অত্যাচারের শিকার হওয়া মহিলা, নাবালিকা এবং বিশেষভাবে সক্ষম মহিলারাও গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করাতে পারেন। ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা মহিলার গর্ভপাতের আবেদনের শুনানিতে আইনের সেই ধারা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই চন্দ্রচূড়।
নয়া দিল্লি: গর্ভস্থ শিশুর অধিকার রক্ষা করাও সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দায়িত্ব বলে জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই চন্দ্রচূড়। সবদিক বিবেচনা করে সোমবার অবশেষে ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা (26 weeks pregnancy) মহিলার গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। গর্ভস্থ শিশুটির কোনও অস্বাভাবিকতা মেডিক্যাল রিপোর্টে ধরা পড়েনি। তাই গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য, “আমরা হৃৎস্পন্দন বন্ধ করতে পারি না।”
গর্ভপাত আইনের অধীনে বিবাহিত মহিলারা গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে পারেন। ধর্ষিতা বা অন্যান্য অত্যাচারের শিকার হওয়া মহিলা, নাবালিকা এবং বিশেষভাবে সক্ষম মহিলারাও গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করাতে পারেন। ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা মহিলার গর্ভপাতের আবেদনের শুনানিতে আইনের সেই ধারা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, “২৬ সপ্তাহ ৫ দিনের গর্ভবতী। মায়ের কোনও বিপদ নেই এবং গর্ভস্থ ভ্রূণের মধ্যেও কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। সেখানে গর্ভপাতের অনুমতি দিলে সেটা MTP (Medical Termination of Pregnancy) আইনের ৩ ও ৫ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করবে।” তবে গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করলেও শিশুটির ভূমিষ্ঠ হওয়ার যাবতীয় খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে বলে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুটির দায়িত্ব রাষ্ট্রও নিতে পারে বলে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে। তবে শিশুটিকে তার বাবা, মা নিজেদের কাছে রাখবেন নাকি রাষ্ট্রকে দত্তক দেবেন, সে ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, ২৬ সপ্তাহের গর্ভবতী এক মহিলা সম্প্রতি গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পাতিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে। এটা তাঁর তৃতীয় সন্তান হবে। কিন্তু, এই সন্তান প্রতিপালন করার জন্য আর্থিক, মানসিক ও শারীরিক সামর্থ্য তাঁর নেই। গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই তিনি অবসাদে ভুগছেন। তাই গর্ভপাতের অনুমতি চাইছেন। কিন্তু, ২৬ সপ্তাহ পর গর্ভপাতের অনুমতি চাওয়ায় বিরক্ত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “এতদিন কী ঘুমোচ্ছিলেন?”
মহিলার গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া উচিত কি না তা নিয়ে শীর্ষ আদালত রীতিমতো দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। ওই মহিলা ধর্ষিতা বা নাবালিকাও নন। তবু তাঁর ইচ্ছার গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে অন্যান্য বিচারপতি জানিয়েছেন। পাল্টা প্রধান বিচারপতি বলেন, “গর্ভবতী মহিলার ইচ্ছাকে মূল্য দিলেও আমরা গর্ভস্থ শিশুর অধিকার উপেক্ষা করতে পারি না।” তবে শিশুটি কোনও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মালে কেউ তার দায়িত্ব নেবে না বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাই শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এইমস-কে দায়িত্ব দেন তিনি। এইমসের সেই রিপোর্টে গর্ভস্থ ভ্রূণের কোনও অস্বাভাবিকতা নেই।