তৃণমূলীদের নেওয়ার আগে দিলীপকে আরও সাবধানী হওয়ার বার্তা শাহ-নাড্ডার
যে হারে নাম-গোত্রহীন নেতারা ঝাঁকে ঝাঁকে বিজেপিতে আসছেন, তাতে ভালোর থেকে খারাপ বেশি যাতে না হয়, সেই কারণেই এই সাবধানবাণী।
নয়া দিল্লি: বাংলা জয়ের আত্মবিশ্বাসে হঠাৎ সামান্য সন্দেহ দেখা যেতেই রাজ্য নেতাদের দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল শীর্ষ বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। সেই মতো এদিন সন্ধে থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) বাসভবনে তাঁর উপস্থিতিতে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার বৈঠক করেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)-মুকুল রায়রা (Mukul Roy)। সূত্রের খবর, বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনের দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি যাবতীয় প্রস্তুতির প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়। একই সঙ্গে, আরও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিতে ভোটযুদ্ধের একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়। পাশাপাশি, তৃণমূল ভেঙে বিজেপিতে আসতে চাওয়া নেতাদের দলে নেওয়ার বিষয়ে আরও সাবধানী হওয়ার নির্দেশ এদিন দেওয়া হয়েছে।
৬ কৃষ্ণমেনন মার্গের শাহি বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিতির তালিকায় বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন।
এদিনের বৈঠকে দরজায় কড়া নাড়া বাংলা ভোটের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। সূত্রের খবর, এক অন্তবর্তী সমীক্ষার ফল হাতে আসার পরই নড়েচরে বসে দিল্লি ডেকে পাঠানো হয় দিলীপদের। কী ছিল সেই সমীক্ষায়! জানা যায়, এই মুহূর্তে যদি বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তবে তৃণমূল ও বিজেপির ভোট বিন্যাস হবে ৫০-৫০ শতাংশ। এই পূর্বাভাস যে দিল্লির নেতাদের কাঙ্খিত নয়, তা আগে থেকেই জানা ছিল। এবং সেই মতো ডেকে পাঠানো হয় দিলীপদের। বৈঠক থেকে বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বকে আরও বেশি করে উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতির উপর জোর দিতে বলা হয়েছে বলে খবর সূত্রের।
ঠিক কোন পথ ধরে আগামী বিধানসভা নির্বাচন লড়তে বিজেপি এগোবে, সেই নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা এদিনের বৈঠকে হয়েছে। একই সঙ্গে, তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের বিজেপিতে শামিল করার আগে আরও দীর্ঘ বিচার-বিবেচনা করার প্রয়োজন রয়েছে বলেও এদিনের বৈঠকে রাজ্য নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। যে হারে নাম-গোত্রহীন নেতারা ঝাঁকে ঝাঁকে বিজেপিতে আসছেন, তাতে ভালোর থেকে খারাপ বেশি যাতে না হয়, সেই কারণেই এই সাবধানবাণী।
আরও পড়ুন: সাংগঠনিক রদবদল এবার মালদাতেও, চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত মোয়াজ্জেম
দিনকয়েক আগের নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামের সভার দৃষ্টান্ত এখনও জ্বলন্ত। স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল নেতার বিজেপিতে শামিল হওয়া নিয়ে যেভাবে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন, তা সিঁদুরে মেঘ দেখাচ্ছে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যে শাহ-নাড্ডারা চান না, সেই বার্তাও পরিষ্কারভাবে দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশের পিছনে নাগপুরের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেননা আরএসএস চাইছে না দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতারা বিজেপিতে এসে গেরুয়া শিবিরকেও কালিমালিপ্ত করুক।
এর মধ্যেই আবার রাজ্যে এসে আইনশৃঙ্খলা ইস্যুতে প্রশাসনের উপর চাপ বাড়িয়ে গিয়েছেন ডেপুটি কমিশনার সুদীপ জৈন। সূত্রের খবর, এই ইস্যুতে চাপ আরও বাড়াতে আগামিকালই নির্বাচন কমিশনে যেতে পারেন মুকুল রায়। রাজ্যে সঠিক পদ্ধতিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানো যায়, সেই দাবি জানাবেন তিনি।
আরও পড়ুন: মমতার পাশেই আছি, দিল্লি যাচ্ছি না: শতাব্দী