Indian Criminal Laws: ‘শাস্তি দেওয়া নয়, বরং ন্যায়বিচারই লক্ষ্য’, ইংরেজদের তৈরি আইন পরিবর্তনে ৩ বিল পেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
Amit Shah: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোকসভায় বলেন, "পুরনো আইনগুলির মূল ভিত্তি ছিল ইংরেজ শাসনকে মজবুত করা। এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল দণ্ড দেওয়া, ন্যায়ের জন্য নয়। এর বদলে নতুন তিন আইন ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তাকে সুরক্ষা দেবে।"
নয়া দিল্লি: ২০২২ সালের স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) বলেছিলেন দেশ থেকে ব্রিটিশ শাসন ও দাসত্বের চিহ্ন মুছে ফেলতে হবে। বর্ষপূর্তির আগেই প্রধানমন্ত্রীর সেই ডাক আইন হিসাবে প্রস্তাবিত হল। শুক্রবার লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। ওই তিনটি বিলেই দেশের অপরাধমূলক বিচারব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ দিন লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “১৫ অগস্ট আজাদি কি অমৃত মহোৎসব শেষ হবে। ১৬ অগস্ট থেকে স্বাধীনতার ১০০ বছরের যাত্রা শুরু হবে। ১৬ অগস্ট থেকে স্বাধীনতার ১০০ বছরের যাত্রা শুরু হবে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী মোদী লালকেল্লা থেকে পাঁচটি শপথ নিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল দাসত্বের ইতি টানা। আজ আমি তিনটি বিল পেশ করব, যা ভারতের দণ্ডবিধি প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তন আনবে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (Indian Penal Code), ১৮৬০, ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড (Code of Criminal Procedure), ১৮৫৮ ও ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট (Indian Evidence Act), ১৮৭২- এই তিনটি আইনে পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইন আনা হবে। এই তিনটি বিলই আপাতত স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই আইনগুলিতে পরিবর্তনের প্রয়োজনের ব্য়াখ্যা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোকসভায় বলেন, “ঔপনিবেশিক শাসনকালে ইংরেজরা এই আইনগুলি তৈরি করেছিলেন। এর বদলে আমরা নতুন আইন আনছি। পুরনো এই আইনগুলির মূল ভিত্তি ছিল ইংরেজ শাসনকে মজবুত করা। এই আইনের উদ্দেশ্য ছিল দণ্ড দেওয়া, ন্যায়ের জন্য নয়। এর বদলে নতুন তিন আইন ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তাকে সুরক্ষা দেবে। এই আইনের উদ্দেশ্য, কাউকে শাস্তি দেওয়া নয়, বরং ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়া। অপরাধ বোধ তৈরির প্রয়োজন যেখানে, সেখানেই কেবল শাস্তির বিধান আনা হবে। ২০২৩ সাল অবধি যে ক্রিমিনাল জাস্টিস আইন মেনে চলা হচ্ছিল,তার বদলে এই আইন আনা হবে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ বলেন, ” মহিলাদের উপরে অত্যাচারের থেকে বড় অপরাধ আর কিছু হতে পারে না। নতুন আইনে মহিলাদের উপর অত্য়াচারকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মহিলা ও বালকদের উপরে অত্যাচারকে প্রথম অধ্যায় আনা হচ্ছে। এরপর হত্যা ও মানব শরীরের সঙ্গে অপরাধকে স্থান দেওয়া হয়েছে।”
আইনের এই পরিবর্তনের কারণ হিসাবে তিনি বলেন, “মোদীজি আমাদের আগেই বলেছিলেন আইনের পর্যালোচনা করে সময়োপযুক্ত আইন আনা উচিত। দীর্ঘ আলোচনা করে এই আইনগুলি আনা হয়েছে। ২০১৯ সালেই আমি সমস্ত বিচারপতি, আইন বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি লিখেছিলাম। পরে সাংসদদের চিঠি লিখি। সমস্ত পর্যালোচনা, আলোচনার পর আজ এই বিলগুলি আইনে পরিণত হচ্ছে। ৪ বছর ধরে এই বিল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।”
ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারী আইনে পরিবর্তনের বিশ্লেষণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সিআরপিসিতে ৫৩৩ ধারা থাকবে। ১৬০টি ধারা সংশেধন করা হয়েছে, ৯টি নতুন ধারা আনা হয়েছে। আইপিসিতে আগে ৫১১ ধারা ছিল। এবার ৩৫৬ ধারা থাকবে। ৮টি নতুন ধারা যোগ করা হয়েছে। ২২টি ধারা বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের ক্ষেত্রে করা আইন আনার প্রস্তাব দেওয়া হবে। এছাড়া গণধর্ষণে সর্বাধিক ২০ বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেষে বলেন, “এই তিন আইনে দাসত্বের চিহ্ন ভরপুর ছিল। পার্লামেন্ট অব কিংডমের উল্লেখ ছিল, নোটিফিকেশন বাই ক্রাউন, লন্ডন গেজেট, জুরির উল্লেখ রয়েছে। লাহোর সরকার, ইউনাইটেড কিংডম, আয়ারল্যান্ডের উল্লেখ ছিল। ৪৭৫ জায়গায় দাসত্বের চিহ্ন ছিল”।