লক্ষদ্বীপে ‘অনুপ্রবেশ’ মার্কিন সামরিক জাহাজের, নৌবাহিনীর মুখে কুলুপ

গত ৭ এপ্রিল আমেরিকার নৌবাহিনীর সপ্তম বহর আরব সাগরে লক্ষদ্বীপ(Lakshadweep)-র কাছে ঢুকে পড়ে। যদিও ভারতীয় নৌবাহিনীর তরফে এখনও অবধি কোনও বিবৃতি মেলেনি।

লক্ষদ্বীপে 'অনুপ্রবেশ' মার্কিন সামরিক জাহাজের, নৌবাহিনীর মুখে কুলুপ
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Apr 09, 2021 | 8:01 PM

নয়া দিল্লি: সম্প্রতি হয়ে যাওয়া চতুর্দেশীয় কোয়াড বৈঠকে জাপান, অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি আমেরিকাও ইন্দো-প্রসান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি বজায় ও সহযোগিতার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছিল। এক মাস কাটার আগেই বিনা অনুমতিতে ভারতের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ঢুকে পড়ল আমেরিকার নৌবাহিনী। কূটনৈতিক মহলের তরফে এটিকে “সামুদ্রিক সুরক্ষার পরিপন্থী” বলা হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাখ্যা, “আন্তর্জাতিক আইনে এমন কোনও ব্যাখ্যা নেই এবং এটি কেবল একটি দেশের বিষয় নয়।”

সম্প্রতি আরব সাগরে লক্ষদ্বীপ(Lakshadweep)-র কাছে মার্কিন নৌবাবাহিনীর জাহাজ দেখা দিতেই গোটা বিষয়টি সামনে আসে। ভারতীয় সামুদ্রিক অঞ্চলে মার্কিন সেনার প্রবেশের ঘটনাটি অস্বীকার করা হয়নি সে দেশের তরফেও। গত ৭ এপ্রিল আমেরিকার নৌবাহিনীর সপ্তম বহর ভারতীয় সামুদ্রিক অঞ্চলে ঢুকে পড়ে। এ বিষয়ে জনসংযোগ বিভাগের তরফে বলা হয়, “৭ এপ্রিল জন পল জোন্স নামক জাহাজটি ভারতের লক্ষদ্বীপের পশ্চিমে অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রায় ১৩০ নটিক্যাল মাইল ভিতরে প্রবেশ করে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ভারতের কাছ থেকে এ বিষয়ে অনুমতি না নেওয়া হলেও অর্থনৈতিক অঞ্চলে সামরিক মহড়ার ক্ষেত্রে অনুমতির বিষয়টি ভারতের আইনে প্রযোজ্য হলেও আন্তর্জাতিক আইনে এই নিয়ম নেই।”

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইন অনুযায়ী, যে কোনও দেশের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল অবধি সামুদ্রিক অঞ্চল সে দেশের জলসীমা হিসাবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপুঞ্জের আইন অনুযায়ী, উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল অঞ্চলকে সে দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল (exclusive economic zone) বলা হয়। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের এই নিয়মে সাক্ষর করেনি আমেরিকা।

আরও পড়ুন: ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কাঁদছে শিশু! অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার বাবা-মায়ের রক্তাক্ত দেহ

বিবৃতিতে জানানো হয়, এটি কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। এতে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থানও বোঝানো হয় না। অতীতেও এইধরনের অভিযান চালানো হয়েছে ও ভবিষ্যতেও চালানো হবে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর তরফে এখনও অবধি কোনও বিবৃতি না মিললেও নৌসেনার এক সূত্রের দাবি, যদি এটি কেবলমাত্র যাতায়াতের জন্য হলে ভারতের তরফে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হবে না। তবে মার্কিন নৌবাহিনীর সপ্তম বহরের বিবৃতি দেখে এটি সামরিক অভিযান বলেই মনে হচ্ছে।

নৌবহরের স্বাধীন অভিযানের ক্ষেত্রেও এক দেশের জাহাজ অন্য দেশের জলপথ অতিক্রম করার সময় সেই দেশের একটি জাহাজ সঙ্গে থাকে, যা এক্ষেত্রে হয়নি। এই বিষয়ে নৌবাহিনীর প্রাক্তন কর্তা অরুণ প্রকাশ বলেন, “ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও আমেরিকার এই পদক্ষেপ অবাঞ্ছনীয়। তবে এটি চিনকে লক্ষ্য করে কড়া বার্তাও হতে পারে। যদিও বিবৃতির ভাষায় কড়া শব্দের ব্যবহার অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে।”

আরও পড়ুন: শতবর্ষের দোরগোড়ায় প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপ