Rehabilitation Center: সম্পত্তি হাতানোর জন্যই স্ত্রীকে ‘পাগল’ প্রমাণের চেষ্টা? হরিদেবপুরের রিহ্যাব সেন্টারে তুলকালাম
Haridebpur: ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার হরিদেবপুরের ওই রিহ্যাব সেন্টারের সামনে তুমুল উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। রিহ্যাব সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ দেখান সুজাতা দেবীর পরিবারের লোকেরা।
কলকাতা : আজব কাণ্ড দমদমে। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল স্ত্রীর সঙ্গে। আর এরই মধ্যে স্ত্রীকে মানসিক রোগী দাবি করে রিহ্যাব সেন্টারে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। অভিযোগ, দমদম পুরসভার সামনে থেকে সুজাতা মিত্র শর্মা নামে ওই মহিলাকে তুলে নিয়ে যান হরিদেবপুরের এক রিহ্যাব সেন্টারের কর্মীরা। আর এই গোটা বিষয়টি সুজাতা দেবীর স্বামী ইন্দ্র শর্মার নির্দেশের ভিত্তিতে। এমনই অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার হরিদেবপুরের ওই রিহ্যাব সেন্টারের সামনে তুমুল উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। রিহ্যাব সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ দেখান সুজাতা দেবীর পরিবারের লোকেরা।
জানা গিয়েছে, হরিদেবপুরের ওই রিহ্যাব সেন্টারে গত ১৩ জুলাই সুজাতা শর্মা নামে এক মহিলাকে ভর্তি করা হয়। দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে তাঁকে নিয়ে আসা হয় বলে জানা গিয়েছে। সুজাতা এবং ইন্দ্রর প্রতিবেশীদের বক্তব্য, ইন্দ্র শর্মা নামে ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর উপর অত্যাচার চালাত। কারণ, সুজাতা দেবী ছোট থেকে যেখানে লালিত-পালিত হয়েছেন, তাঁদের মৃত্যুর পর সেই পরিবারের সম্পত্তি পুরোটাই পেয়ে যান সুজাতা দেবী। স্থানীয় সূত্রে খবর, অন্যান্য সম্পত্তির পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটও রয়েছে। সেই সম্পত্তির জন্য স্ত্রীর উপর অত্যাচার চালাত ইন্দ্র শর্মা। এমনই দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৭ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক সুজাতা এবং ইন্দ্রর। পরিবারের অভিযোগ, বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে এই ভাবে অত্যাচার চলছিল সুজাতার উপর। শেষে স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মামলা করেছিলেন সুজাতা।
পাশাপাশি এমনও জানা গিয়েছে, এই নিয়ে সুজাতা শর্মা একটি মামলাও করেছিলেন। ১৮ জুলাই এই মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে যাতে সুজাতা শর্মা উপস্থিত থাকতে না পারেন, সেই কারণেই তাঁকে মানসিক রোগী হিসেবে দেখিয়ে রিহ্যাবে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এদিকে মহিলাকে রিহ্যাবে পাঠানোর পর সুজাতা দেবীর পরিবারের লোকেরা রিহ্যাব সেন্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁদের জানানো হয়েছিল, ৪৩ দিনের আগে দেখা করতে দেওয়া হবে না। এই নিয়েই মঙ্গলবার হরিদেবপুরের ওই রিহ্যাব সেন্টারের উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়।
হরিদেবপুর থানার পুলিশকর্মীও ওই রিহ্যাব সেন্টারের সামনে যান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। পরে সুজাতা দেবীর স্বামী ইন্দ্র শর্মাও ওই রিহ্যাব সেন্টারে এসে পৌঁছায় এবং তারপর পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় ইতিমধ্যেই ইন্দ্র বর্মার বাড়ির দুই জনকে আটক করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। এদিকে হরিদেবপুর থানার পুলিশকর্মীদের উপস্থিতিতে সুজাতা শর্মাকে তাঁর প্রতিবেশীদের কাছে ফিরিয়ে দেয় রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ। সুজাতা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন, তাঁর স্বামীর অত্যাচারের কথা এবং তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না, সেই কথাও জানিয়েছেন সুজাতা। সেই কারণে, স্বামীর সঙ্গে যেতে দেওয়া হয় না সুজাতাকে।
এদিকে গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চায়নি রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ। তবে তাদের বক্তব্য, প্রথমে তারা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তাই প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে মহিলাকে নিয়ে আসা হয়েছিল রিহ্যাবে। পরে ভুল বুঝতে পেরে এ দিন মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।