CM Mamata Banerjee: ‘আগামী দিনে লড়াইয়ে পথ দেখাবে জয় বাংলা…’, নেতাজির জন্মদিবস পালনের মঞ্চ থেকে স্লোগান মুখ্যমন্ত্রীর

আমার সমালোচক বন্ধু থাকবে না, এটা ভাবার দরকার নেই, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

CM Mamata Banerjee: 'আগামী দিনে লড়াইয়ে পথ দেখাবে জয় বাংলা...', নেতাজির জন্মদিবস পালনের মঞ্চ থেকে স্লোগান মুখ্যমন্ত্রীর
নেতাজির জন্মদিবস উদযাপন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 23, 2023 | 8:13 PM

কলকাতা: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৬ তম জন্মবার্ষিকীতে কলকাতায় বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে সাইরেন এবং শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে নেতাজির জন্মগ্রহণের মুহূর্তকে স্মরণ জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে শঙ্খ বাজান। তারপর মঞ্চে বক্তৃত্বা দিতে উঠে নেতাজির জয়গান করে তাঁকে স্বাধীনতা-পরবর্তী পরিকল্পনার বাহক বলেও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পরিকল্পনা কমিশন তুলে দেওয়া সহ আন্দামানে ‘শহিদ’ ও ‘স্বরাজ’ নামক দুটি দ্বীপ করা প্রসঙ্গে নাম না করে কেন্দ্রকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সুফল বাংলারও উদ্বোধন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য একনজরে…

  1. আমি গর্বিত ভারতীয়, নেতাজির জন্মভূমিতে বাস করি। আগামী দিনে লড়াইয়ে পথ দেখাবে জয় হিন্দ, বন্দে মা তরম, জয় বাংলা। নেতাজির জন্মদিবস উদযাপনের মঞ্চ থেকে এমনই স্লোগান তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  2. নাম না করে কেন্দ্রকে তোপ দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চালাকির দ্বারা মহৎ কাজ হয় না।
  3. আজ দেশ বড় অসহায়। বাংলা আমরা কোনরকমে সামলাচ্ছি। ৩৬৫ দিনে কিছু না কিছু মোকাবিলা করতে চাই। আমরা আন্দোলন থেকে, নবজাগরণের মাটি থেকে গড়ে ওঠা লোক বলে আমরা লড়তে পারি। অনেকে এজেন্সির ভয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু, আমি যাই না।
  4. দেশের বিভিন্ন সংস্থা বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে তোপ দেগে বলেন, যা আছে নিয়ে যাও। কিন্তু, দেশটাকে বেচে দিও না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নিয়ম লঙ্ঘন করা মানে গণতান্ত্রকে উলঙ্ঘন করা।
  5. কেন্দ্রের বাংলার প্রতি সৌজন্যমূলক আচরণ করা উচিত বলেও নাম না করে দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা, যিনি বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। বন্দে মা তরম গানও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম বসু- সকলে বাংলার। যাঁদের এতকিছু আছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে একটু সৌজন্য বোধ করতে হয়।
  6. বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি আসা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন একটা আরশোলা কামড়ালেও কেন্দ্রীয় দল চলে আসে। কথায়-কথায় বাংলাকে হেনস্তা করে। তবে আমি ভয় করব না।
  7. পরিকল্পনা কমিশন তুলে দেওয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভের সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী পরিকল্পনাও নেতাজি করে গিয়েছিলেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু পরিকল্পনা কমিশন করেছিলেন। আজ দুর্ভাগ্য, সেটা নেই। না আছে প্ল্যানিং, না আছে প্ল্যানিং কমিশন।
  8. ভারতীয় সেনাবাহিনী তৈরি করেছিলেন নেতাজি। তাঁর জয় হিন্দ সারা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। আমাদের অনেক প্রকল্পের নাম রয়েছে জয় হিন্দ।
  9. রবীন্দ্রনাথ নেতাজিকে দেশনেতা, দেশপ্রেমিক বলেছিলেন। যারা সঠিক অর্থে দেশনেতা হয়, তাদের কারও কাছে সার্টিফিকেট নিতে হয় না। জন্ম থেকেই তাঁদের হৃদয়ে গাঁথা থাকে। আমরা তো রাজনীতির কথা বেশি বলি। তাঁরাও রাজনীতির কথা বলেছেন, কিন্তু তাঁদের কথায় মাধুর্য ছিল।
  10. আন্দামানের বিভিন্ন দ্বীপের নামকরণ প্রসঙ্গেও পরোক্ষে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর কথায়, আজ কেউ নাম কেনার জন্য বলতেই পারেন, আমরা করলাম শহিদ দ্বীপ, স্বরাজ দ্বীপ। কিন্তু এটা অনেক আগে নেতাজি যখন আন্দামানে গিয়েছিলেন, তখন করেছিলেন।
  11. আমার সমালোচক বন্ধু থাকবে না, এটা ভাবার দরকার নেই। আমি রাস্তা দিয়ে গেলে কেউ কিছু বলতেই পারেন। এটা বিক্ষোভ ভাববেন না। মানুষ ক্ষোভ উগরে দিল। বলার তো জায়গা চাই। বর্তমানে দিদির দূত কর্মসূচিতে দিকে-দিকে বিক্ষোভ চলছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রসঙ্গে বিষয়টি এভাবে হালকা করতে চাইছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
  12. অনেকের টাকা আছে, কিন্তু কথা বলার কেউ নেই। সেই টাকার কী লাভ। আমরা বিত্তবান নয়, ভবিষ্যৎ করে যেতে চাই।
  13. নেতাজি চাইতেন, কৃষকেরা স্বনির্ভর হোক। সেজন্য আজ সুফল বাংলার উদ্বোধন করলেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।