Protest against Medicine Price Hike: ‘মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা দয়া করে দেখা করবেন না’, কেন এমন বললেন চিকিৎসক যোগীরাজ রায়?
Medicine Price: ওষুধের দাম বাড়ায় রোগীর পরিজনদের যে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিদিন, সেই বিষয়টি যাতে ওষুধ প্রস্তুতাকারক সংস্থাগুলি পর্যন্ত পৌঁছায়, সেই বার্তায় দেওয়ার চেষ্টা করছেন চিকিৎসক যোগীরাজ রায়।
কলকাতা : প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে আমজনতার মধ্যে, চিকিৎসকদের সঙ্গে নাকি মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের একটি গোপন আঁতাত রয়েছে। কিন্তু সেই ধারণার একেবারে বিপরীত স্রোতে হাঁটলেন চিকিৎসক যোগীরাজ রায়। ওষুধপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবার একেবারে অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন তিনি। সব মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছেন। তাতে তিনি অনুরোধ করেছেন, কোনও মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ যেন তাঁর সঙ্গে দেখা না করেন। বিভিন্ন ওষুধের লিস্টের সঙ্গে সেই ওষুধের দামও উল্লেখ করতে বলেছেন তিনি। কিন্তু কেন এই ধরনের প্রতিবাদ করছেন তিনি?
ওষুধপত্রে দাম ক্রমেই বাড়তে থাকার ফলে রোগীর পরিজনদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকেই দামের কারণে ওষুধ কিনতে পারছেন না। রোগীর পরিজনরা অনেকেই সেই সমস্যার কথা জানান চিকিৎসককে। ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির এভাবে ঘুর পথে দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করেই প্রতীকী প্রতিবাদ জানাচ্ছেন চিকিৎসক যোগীরাজ রায়। ওষুধের দাম বাড়ায় রোগীর পরিজনদের যে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিদিন, সেই বিষয়টি যাতে ওষুধ প্রস্তুতাকারক সংস্থাগুলি পর্যন্ত পৌঁছায়, সেই বার্তায় দেওয়ার চেষ্টা করছেন চিকিৎসক যোগীরাজ রায়।
We are heading for an unaffordable modern medicine. Please consider the price hike in field of medicine. Most of the patients can not buy more than 3 drugs for chronic usage. #pricehikeofmedicines pic.twitter.com/VoOc0eVivi
— Yogiraj Ray (@IddocYogiraj) April 17, 2022
এই বিষয়ে চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, “আমাদের অনেককেই একাধিক ওষুধের উপর থাকতে হয়। যাদের অনেককগুলি কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের অনেকেকেই বিভিন্ন ধরনের ওষুধ নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের অনেকেরই একটি প্রবণতা থাকে, যাদের অনেকগুলি ওষুধ নিতে হয়, তাদের জন্য ভাল মানের এবং দাম কম, এমন ওষুধগুলি লেখার। কিন্তু এই দাম বৃদ্ধির ফলে, যতই কম দামের ওষুধ লেখার চেষ্টা করুন না কেন, তার মধ্যেও রোগীদের উপর চাপ পড়ছে। সরকারি সাপ্লাইও থাকে না সব ওষুধের। কিছু ওষুধ মানুষকে কিনতে হয়। কিন্তু সেগুলির দাম যদি বেড়ে যায়, তাহলে মানুষ আর সেগুলি কিনবে না। তাই ওষুধের দামের উপর অবশ্যই একটি নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। ওষুধ কেনার খরচ সবসময়ই বেশি। তার জন্য বিভিন্ন রকমের হেল্থ স্কিম আনতে গিয়ে ওষুধের দামও বেড়ে গিয়েছে। ফলে যে উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্কিম বা বীমা করা সে সব শেষ পর্যন্ত কাজে দেবে না।”
এই বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর পরিজনরা বলছেন, ডাক্তারবাবু ওষুধ কিনতে পারছি না। প্রচুর দাম ওষুধের। যদি আরও কম দামের কিছু ওষুধ দেওয়া যায়। আমরা আতান্তরে পড়ছি এই কথা শুনে। কারণ, আমার যেটা মনে হচ্ছে রোগীকে দেখে, সেই ওষুধটা তো আমায় দিতেই হবে। এই প্রথমবার একইসঙ্গে ১১ শতাংশ দাম বেড়েছে ওষুধের। এমনটা আগে কোনওকালে হয়নি। ফলে রোগীদের এবং পরিজনদের থেকে এমন প্রতিক্রিয়া তো আসবেই। সরকারি হাসপাতালের বাইরে থেকেও অনেকসময় ওষুধ কিনতে হচ্ছে। রোগীর পরিজনরা এসে বলছেন, ডাক্তারবাবু ওষুধটার বড্ড বেশি দাম।”
চিকিৎসক যোগীরাজ রায়ের টুইট প্রসঙ্গে মানস গুমটা জানিয়েছেন, “চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদটা এমনই হওয়া উচিত। যাঁরা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, তারাও এই আন্দোলনে সামিল। ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর জিএসটি কমাতে হবে, এই আন্দোলনেও তারা সামিল। কিন্তু একজন চিকিৎসক একা এই প্রতিবাদ করলে, তাতে কর্পোরেট সংস্থার কিছু যায় আসে না। এর বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলন দরকার।”
আরও পড়ুন : Body Recover: বাপ মরা ছেলেদের নিয়ে নতুন করে সংসার মহিলার, এমন সর্বনাশ ভাবতেও পারছে না পরিবার…