জাঁকজমকে নেই পার্থ, পুজোর বাজেট ছেঁটে টিকার জোগান বাড়াতে চান নাকতলা উদয়ন সংঘের কর্তা

ফি বছর শহরের পুজো যত জমকালোই হোক না কেন, একুশ সালে অন্তত বাজেটের বহর চাইছেন না তিনি।

জাঁকজমকে নেই পার্থ, পুজোর বাজেট ছেঁটে টিকার জোগান বাড়াতে চান নাকতলা উদয়ন সংঘের কর্তা
অলংকরণ-অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 03, 2021 | 11:45 PM

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: অতিমারিতে আড়ম্বরে নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফি বছর শহরের পুজো যত জমকালোই হোক না কেন, একুশ সালে অন্তত বাজেটের বহর চাইছেন না তিনি। পার্থবাবু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ঢাকঢোল পিটিয়ে পুজো হলে তাতে এ বার তিনি নেই। কোটি কোটি টাকার বাজেট কাটছাঁট করে যাতে সেই টাকা ভ্যাকসিনের অর্থ জোগানের জন্য খরচ করা হয়, ক্লাবগুলিকে সেই আবেদন করেছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী। সবার আগে পথ দেখিয়েছেন তিনি নিজেই। তাঁর তত্ত্বাবধানে হওয়া নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজোর বাজেট কেটে বাকি অর্থ কোভিডের জন্য ব্যবহার হবে বলে জানিয়েছেন পার্থ। পাশাপাশি চাইছেন, বাকি পুজোর আয়োজকরাও সেই পথ ধরেই হাঁটুন।

করোনার প্রথম ঢেউ যদি সমাজের একাংশকে আর্থিক বিপদের মুখে ঠেলে থাকে, দ্বিতীয় ঢেউ তবে মানসিকভাবেও তাদের বিপর্যস্ত করেছে। এই পরিস্থিতিতে স্পনসরদের টাকায়, বা চাঁদা তুলে বিরাট বাজেটের পুজো হোক, তা কোনও মতেই চাইছেন না পার্থবাবু। বরং কী ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেটাই এখন নিজের প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে স্পষ্ট করেছেন তৃণমূল মহাসচিব। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “ঢাকঢোল পিটিয়ে পুজো করলে আমি সেখানে যাব না। বড় পুজোয় আমি নেই।”

মঙ্গলবার বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক জানিয়ে দেন, এ বছর নাকতলা পুজোর বাজেটে কাটছাঁট হতে চলেছে। বাজেটের অর্ধেক অর্থই ব্যয় করা হবে কোভিডের জন্য। বাকি পুজোগুলিকেও তাঁর আবেদন, আলোকসজ্জা এবং বর্ণাঢ্য আয়োজনের ওজন কমিয়ে তা কোভিড পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের জন্য ব্যবহার করা হোক। এমনিতেই ২০১৭ সালের পর থেকে ছোট-বড় সব পুজোর বাজেট কমানো হয়েছে। স্পনসরের সংখ্যাও কমেছে। সেই তুলনায় পরিস্থিতি এখন আরও সঙ্গীন বলেই উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

শুধু তো নাকতলা উদয়ন সংঘের কর্তা পার্থবাবু নন, এর পাশাপাশি বেহালারও একাধিক পুজোর সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন তিনি। আবার তৃণমূলের যত প্রথম সারির নেতা মন্ত্রীরা রয়েছেন, প্রত্যেকের এক একটি পুজোর উপর একছত্র আধিপত্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, অরূপ বিশ্বাসে তত্ত্বাবধানে রয়েছে সুরুচি সংঘ, ফিরহাদ হাকিম চেতলা অগ্রণী এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায় একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের পুজোর দেখাশোনা করেন। ফলে নিজের সংযত অবস্থানের মাধ্যমে পরোক্ষে সেই নেতাদেরও পার্থবাবু কোথাও একটা বার্তা দিতে চাইলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

তৃণমূলের আরেকাংশের যদিও ব্যাখ্যা, বিষয়টিকে এভাবে দেখা ঠিক হবে না। কোভিডের সময়ও রাজ্যের শাসকদল মানুষের পাশেই ছিল, এখনও আছে। সেটা আলাদা করে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই আবেদন জানানোর আগেই অবশ্য রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমার মনস্থির করে ফেলেছেন, এই বছর একেবারেই ছোট করে তিনি পুজো করবেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে হওয়া ত্রিধারা সম্মিলিনী পুজোরও কম নামডাক নেই বাজারে। কিন্তু করোনারা কারণে বাজেটে কোপ দিয়েছেন তিনিও। এ বার দেখার বাকি ‘আয়োজকরা’ কী করেন। আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপিতে ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’ বাবুলের