DYFI-SFI: অনুমতি নেই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে, ‘ইনসাফ সভা’ হবে ওয়াই চ্যানেলে

Minakshi Mukherjee: কিন্তু শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল করতে হল ডিওয়াইএফআই - এসএফআই নেতৃত্বকে। ভিক্টোরিয়া হাউস নয়, ইনসাফ সভা করা হবে ওয়াই চ্যানেলে।

DYFI-SFI: অনুমতি নেই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে, 'ইনসাফ সভা' হবে ওয়াই চ্যানেলে
মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 19, 2022 | 11:40 PM

কলকাতা: মঙ্গলে বাম ছাত্র-যুবদের মেগা ইভেন্ট। ডিওয়াইএফআই – এসএফআই-এর ‘ইনসাফ সভা’। কথা ছিল ধর্মতলায় সভা করার। কিন্তু পুলিশ প্রথম থেকেই এই সভার অনুমতি দিচ্ছিল না। এদিকে বামেদের তরফ থেকেও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, যাতে ‘ইনসাফ সভা’ ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই করা যায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল করতে হল ডিওয়াইএফআই – এসএফআই নেতৃত্বকে। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে নয়, ইনসাফ সভা করা হবে ওয়াই চ্যানেলে। কলকাতা জেলা কমিটির তরফে পার্ক স্ট্রিট থেকে মিছিল করে যাওয়া হবে ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত। এর পাশাপাশি শিয়ালদহ স্টেশন ও হাওড়া স্টেশন থেকেও মিছিল করে ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত যাওয়ার কথা রয়েছে।

ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই সভা করতে দিতে হবে, দাবিতে অনড় ছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। পুলিশের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন বৈঠক, টেলিফোনে কথা – সব কিছুতে বারবার সভাস্থল নিয়ে পুলিশকে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথাই জানিয়েছিলেন সিপিআইএমের তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশের (পুলিশ ভিক্টোরিয়া হাউস বাদে যে কোনও জায়গায় সভা করতে দিতে চেয়েছিল) কাছে স্নায়ুর যুদ্ধে হার মানতে হয়েছে তাঁদের। কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, যে বিপুল জমায়েতের আশা করছেন মীনাক্ষী, কলতান দাশগুপ্ত, সৃজন ভ্টাচার্যরা, তাতে সভা করতেই হতো তাঁদের। এদিকে লাল পতাকার সভা, মিছিলে ভিড় বাড়ছে একটু একটু করে। এমন পরিস্থিতিতে পুজোর মুখে আইন অমান্য বা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়ে ধর্মতলাকে অবরুদ্ধ করলে আমজনতার কাছে তা ভাল ছবি হত না। সেই অবস্থায় মানুষকে উৎসবের সময়ে গোলমালের মধ্যে ফেললে যে ভরসা স্থল তৈরি হচ্ছে, তাতে চিড় ধরার সম্ভাবনা থেকে যেত। সেই কারণে সামান্য পিছু হটে ভিক্টোরিয়া হাউসের অদূরে ওয়াই চ্যানেলে সভা করতে মীনাক্ষীদের রাজি হওয়া বলে সিপিআইএমের অন্দরে খবর।

উল্লেখ্য, ধর্মতলায় ‘ইনসাফ সভা’র আয়োজন করা নিয়ে শুরু থেকেই টানাপোড়েন চলছিল পুলিশের সঙ্গে। লালবাজার পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, ধ্রুবজ্যোতি সাহার মতো নেতারা। কলকাতা পুলিশের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয় ধর্মতলার সভার অনুমতি প্রসঙ্গে। কিন্তু টানা কয়েক ঘণ্টার বৈঠকেও সেই জট কাটেনি। সূত্রের খবর, পুলিশের তরফ থেকে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউস বাদে অন্যান্য আরও একাধিক বিকল্প সভাস্থলের কথা বলা হয়েছিল বাম ছাত্র-যুব নেতৃত্বকে। কিন্তু বামেরা সভাস্থল বদলে একেবারেই নারাজ ছিল। তবে এবার শেষ পর্যন্ত সভাস্থল বদল করতে হল। ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের বদলে ওয়াই চ্যানেলে হবে বাম ছাত্র – যুবদের ‘ইনসাফ সভা’।

আনিস খানের মৃত্যুর তদন্ত এবং ঘটনার জড়িতদের যোগ্য শাস্তির দাবিতে ইনসাফ সভার ডাক দিয়েছে বাম ছাত্র-যুবরা। শুধু আনিস ইস্যুই নয়, এর পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সহ রাজ্যে সাম্প্রতিক যে দুর্নীতির অভিযোগগুলি উঠে এসেছে, সেই সবের বিরুদ্ধেই আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যেই ইনসাফ সভার ডাক দিয়েছে বাম ছাত্র যুব নেতৃত্ব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইনসাফ সভা নিয়ে প্রচুর পোস্টও করা হচ্ছে ডিওয়াইএফআই-এসএফআই-এর তরফে। তবে শেষ মুহূর্তে সভাস্থল বাতিল করা নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। এখন দেখার মঙ্গলবার বাম ছাত্র-যুবদের মনোবল চাঙ্গা করতে কী বার্তা দেন মীনাক্ষীরা।

পঞ্চায়েত ভোটের দামামা ইতিমধ্যেই বেজে গিয়েছে কার্যত। ইতিমধ্যেই তৃণমূল ঘর গোছাতে শুরু করেছে। গেরুয়া শিবিরও ভোটের রণকৌশল স্থির করতে শুরু করেছে। এমনকী, কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিও তুলতে শুরু করেছে ওই শিবিরের নেতাদের কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে তরুণ প্রজন্মের শক্তি প্রদর্শন করাই মঙ্গলবারের সভার মূল লক্ষ্য মীনাক্ষীদের। একইসঙ্গে একটি রাজনৈতিক বার্তাও দিতে চান তাঁরা। যার সুর বাঁধবেন সেলিম। আর সেই সুরেই উৎসব মরসুম কাটলেই দলীয় নেতৃত্বের দেওয়া বার্তাকে সঙ্গী করে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে বিরোধী পরিসরে নিজেদের জায়গা করে নিতে চান সিপিআইএমের বিভিন্ন স্তরের কর্মী সমর্থকরা।