Justice Abhijit Gangopadhyay: ‘রাঘব বোয়ালের পেটে লাথি পড়েছে বলেই ষড়যন্ত্র করে সরানো হল’
Justice Abhijit Gangopadhyay: এই রায় অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, মন্তব্য বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির। দেখুন এক ঝলকে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে বাংলার কে কীভাবে দেখলেন?
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি বদল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। শুক্রবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ সামনে আসতেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় রাজ্যের বিভিন্ন মহলে। কেউ কেউ এদিনের সুপ্রিম নির্দেশকে স্বাগত জানালেও, বিভিন্ন পক্ষ আবার হতাশা ব্যক্ত করেছেন। এক ঝলকে সব প্রতিক্রিয়া।
KEY HIGHLIGHTS
- বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এই রায় অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিচারপতি গাঙ্গুলি যেভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন, আমার মনে হয় না এই লড়াই থামবে। মেরুদণ্ড সোজা রেখে লড়াইয়ের স্ফুলিঙ্গ তৈরি করেছিলেন। এতে অন্যরাও আলোকিত হয়েছেন। এবার বাকিরা এই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।”
- তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের প্রতিক্রিয়া, “গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে বিচারব্যবস্থা। সেই বিচার ব্যবস্থার যাঁরা ধারকবাহক, তাঁরা যদি এমন হয়, তাতে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে আদৌ বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষ রয়েছে কিনা। সেটা দেশের জন্য ভয়ঙ্কর। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে বিষয়ে বিচার করছেন, সে বিষয়ে টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। কোনও একটি পার্টিকুলার রাজনৈতিক দল যেভাবে ঢাক ঢোল পিটিয়ে তৃণমূলকে সরানোর চেষ্টা করছে, তাতে ইন্ধন জুগিয়েছেন। তিনি তৃণমূল মুখপাত্রদের দালাল বলছেন, দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে জেরা করা প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। বিচারপতি বলছেন লড়াই চলবে। তিনি কোন লড়াইয়ের কথা আদতে বলতে চেয়েছেন?”
- বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে মামলা থাকবে কী থাকবে না, সেটা বিতর্কের বিষয় নয়। তবে এতে এটা প্রমাণ হয় না যে দুর্নীতি হয়নি। দুর্নীতি তো দৃশ্যমান।”
- রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ শুভময় মৈত্রের বক্তব্য, “এই রায় বাংলার রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এবার দ্বন্দ্বটা হচ্ছে, এই রায়ে সামাজিক ন্যায়বিচারে কোনও অসুবিধা হবে কিনা? সে তো আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। এর বিরুদ্ধেও কেউ আদালতে যেতে পারেন। রায় সদ্য হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি এই নিয়ে অনুসিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে না।”
- আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে কিছু বলার নেই। বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায় মারাত্মক কাজ করেছেন। আমাদের হাইকোর্টের যে কোনও ডিটারমিনেশন পিরিয়ডিক্যালি চেঞ্জ হয়। তো সেই প্রসেসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কেও একদিন না একদিন সরতেই হত।”
- আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “যে প্রসেডিংটা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল, সেই প্রসেডিংটাকেই রিঅ্যাসাইন করা হয়েছে। আমি যতটা বুঝেছি তাতে সব মামলা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তা নয়।”
- প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর কথায়, “সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেনি, যে নিয়োগ দুর্নীতির যে তদন্ত চলছে, সেটা ভুল। কতগুলো পদ্ধতিগত প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের মনে হয়েছে, হাইকোর্টের বিচারপতির এহেন মন্তব্য করা উচিত হয়নি। সেটা প্রসেডিওরের প্রশ্ন। অন্য ব্যাপার। কেউ অস্বীকার করতে পারব না, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই প্রমাণ করে দিয়েছেন, বিচারপতিদের কলমের শক্তি কতটা।”
- এই নির্দেশের পর ধর্মতলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা। এক চাকরি প্রার্থী বলেন, “আমরা যুব সমাজ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশে আছে। কাল থেকে আমরা রাস্তায় নামব। আমাদের ভগবান অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। আমরা কোনও কথা শুনব না। রাঘব বোয়ালের পেটে লাথি পড়েছে বলে ওনাকে ষড়যন্ত্র করে সরানো হচ্ছে। এটা কালো দিন।”
- তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে যেহেতু এটা বিচারাধীন বিষয়, তাই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
- তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের একটা অভিযোগ ছিল, তিনি নির্ধারিত মামলার বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক উইশলিস্ট দিচ্ছেন। তিনি নির্দিষ্টভাবে একটি দল ও দলীয় নেতৃত্বকে বিদ্ধ করেছেন। সেটাও আইন বহির্ভূতভাবে। যে ধরনের সংলাপ দিয়েছেন, তাতে তাঁর ভিতরের কথা বেরিয়ে পড়েছে। তিনি বিরোধীদের উৎসাহিত করছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ন্যায়বিচার হয়েছে।”
- তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “আদালতের রায়কে আমরা সম্মান করি। ওঁ একটি রাজনৈতিক দলের প্রতীক তুলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি একজন রাজনৈতিক দলের নেত্রী সম্পর্কে বলেছিলেন। আমাদের যে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তাঁর মেয়ের চাকরির বদলে ববিতা চাকরি পেয়েছিলেন। ববিতাও যে চাকরিটা পেয়েছিল সেটাও ভুল নম্বর দেখিয়ে পেয়েছিলেন।”
- বিজেপি নেতা শুঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও বলা নেই, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাগুলিতে যে রায় দিয়েছে, তা ঠিক ছিল না। প্রসেডিংয়ে সমস্যা ছিল।”