‘জাগো বাংলা’য় লেখার মাসুল, ৩ মাসের জন্য সাসপেন্ড হতে পারেন অনিল-কন্যা

Ajanta Biswas: প্রাথমিকভাবে সেই অবস্থান দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বলেওছিলেন তিনি। অজন্তার ঘনিষ্ঠমহল থেকে বলা হয়, বাংলার রাজনীতিতে নারী শক্তির অবদান নিয়ে লিখলে স্বাভাবিক ভাবেই মমতার ভূমিকা আসবে।

'জাগো বাংলা'য় লেখার মাসুল, ৩ মাসের জন্য সাসপেন্ড হতে পারেন অনিল-কন্যা
জাগো বাংলায় অনিলকন্যার লেখনী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 16, 2021 | 10:21 AM

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: ‘জাগো বাংলা’য় উত্তর সম্পাদকীয় লেখার জন্য প্রয়াত সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করতে পারে সিপিএমের দলীয় নেতৃত্ব। যদিও দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে, অজন্তা যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত সাসপেন্ড শাস্তির বিধান আছে। সর্বোচ্চ এক বছরের বদলে তিন মাসের জন্য সাসপেনশন হতে পারে। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, অনিল কন্যার ওপর কি কিছুটা হলেও নরম আলিমুদ্দিন?

ইতিমধ্যেই তাঁর ‘শাস্তি’র সুপারিশের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এরিয়া কমিটি অর্থাত্ যে পার্টি কমিটিতে অজন্তা বিশ্বাসের সদস্যপদ রয়েছে, সেখান থেকে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর কাছে বিষয়টি আসে। অধ্যাপকদের সংগঠনের তরফে আসা এই সুপারিশে সবুজ সঙ্কেত দেয় জেলা সম্পাদক মণ্ডলীও। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কলকাতায় জেলা কমিটির বৈঠক হবে। আর সেখানেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর তারপর সিপিএম গোটা বিষয়টি সামনে নিয়ে আসবে।

২৮ – ৩০ জুলাই পর্যন্ত জাগো বাংলায় ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারী শক্তি’ শীর্ষক উত্তর সম্পাদকীয় লিখেছিলেন সিপিআইএমের সদস্য অজন্তা। সেখানে কংগ্রেস ও বাম নেত্রীদের ভূমিকা সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরেন তিনি। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা তুলে ধরে প্রশংসা করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক। একইসঙ্গে সেখানে সিঙ্গুর নিয়ে দলীয় লাইনের বাইরে গিয়ে মত প্রকাশ করেন তিনি।

প্রথমত, ‘শত্রু পক্ষে’র মুখপত্রে লেখেন অজন্তা। দ্বিতীয়ত, সেখানে সিঙ্গুর নিয়ে দলীয় লাইনের বাইরে মত দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপত্রে। যা একজন পার্টি সদস্য হিসেবে শৃঙ্খলা ভঙ্গ। এমনকি, জাগো বাংলায় লেখা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে সেখানে মূল্যায়ন নিয়ে বেশ কয়েকদিন অবস্থানে অনড় ছিলেন অনিল তনয়া।

প্রাথমিকভাবে সেই অবস্থান দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বলেওছিলেন তিনি। অজন্তার ঘনিষ্ঠমহল থেকে বলা হয়, বাংলার রাজনীতিতে নারী শক্তির অবদান নিয়ে লিখলে স্বাভাবিক ভাবেই মমতার ভূমিকা আসবে। সেই মূল্যায়নই অজন্তা করেছেন। এতে ভুল বা অন্যায় কোথা থেকে আসছে।

আর তারপরেই সিপিএম স্থির করেছিল, অজন্তা ক্ষমা না চাইলে তাঁকে বহিষ্কারের পথে হাঁটবেন তারা। যদিও সিপিএম নেতৃত্ব এ-ও বলেছিলেন, অজন্তা ক্ষমা চাইলে বা অবস্থান বদলালে শাস্তি কিছুটা কমতে পারে।

ঘটনাচক্রে, তারপরেই অবস্থান বদলান অজন্তা। এরিয়া কমিটির কাছে নিজের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দিলেও কলকাতা জেলার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন অজন্তা। সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে এমন কোনও বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন এবং সতর্ক থাকবেন জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে এও জানিয়েছিলেন, তাঁর এই কর্মকাণ্ডে কেউ দুঃখ পেলে তিনি দুঃখিত।

তারপরেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেন সিপিআইএম নেতৃত্ব। সিদ্ধান্ত নেন, অনুমতি ছাড়া জাগো বাংলায় লেখা, সিঙ্গুর নিয়ে দলীয় অবস্থানের বিপরীতে হাঁটা-সহ যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য শাস্তি পেতেই হবে। আর তা সাময়িক সাসপেনশন হবে। সিপিআইএম নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদকের মেয়ে বলে ছাড় দিলে পার্টি সদস্য হয়ে যে কেউ যা খুশি করবে। তা কমিউনিস্ট দলের মতো সুশৃঙ্খল দলের চরিত্রের সঙ্গে একেবারেই মানানসই নয়। আরও পড়ুন: ‘বাচ্চা ছেলেদের পাঠায়, দুটো ঢিল মারল আর বিপ্লব শেষ!’ ত্রিপুরা কাণ্ডে ফের তৃণমূলকে খোঁচা দিলীপের