মমতার নজরে বাংলার হিন্দিভাষীরা! নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত?

সাম্প্রতিক অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার বিজেপি নেতাদের বহিরাগত তকমায় অ্যাখ্যায়িত করতে দেখা গিয়েছে।

মমতার নজরে বাংলার হিন্দিভাষীরা! নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 28, 2021 | 9:19 PM

কলকাতা: একুশের কঠিন লড়াইয়ে ভোট ব্যাঙ্ক সুদৃঢ় করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম লক্ষ্য এবার বাংলার হিন্দিভাষী সম্প্রদায়। এই প্রথম তৃণমূল ভবনে বাংলার হিন্দিভাষী প্রতিনিধিদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)।

এদিনের এই বৈঠকে রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলার ২০ জন হিন্দিভাষী প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন । উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক, অধ্যাপক, ব্যবসায়ীদের মতো নানা পেশার মানুষ। এদিনের এই বৈঠকের পিছনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দু’টি উদ্দেশ্য দেখতে পাচ্ছেন।

প্রথম, বাংলার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হিন্দিভাষী। একুশের লড়াইয়ে তাঁরা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন। কারণ, হিসাব বলছে, ২০১৯-এ এই হিন্দিভাষীদের বড় অংশের ভোট গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতেই। ফলে একুশে তার পুনরাবৃত্তি রুখতে প্রথম থেকেই উদ্যোগী হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো?

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পোড়খাওয়া নেত্রী হিন্দিভাষীদের গুরুত্বের বিষয়টি আগাম বুঝেছেন বলেই প্রতিনিধিদের নিয়ে এদিন আলোচনায় করলেন এবং পাশে থাকার আবেদন জানালেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সময় মমতা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বলেন, “ওরা আমাকে কী হিন্দি শেখাবে? আমি কান ধরে ওদের হিন্দি শেখাব। বাংলার মতোই হিন্দি ভাষা শেখার অধিকার আমার আছে।” এদিন তিনি সুর চড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও।

এছাড়া, রাজনীতির পাশা খেলায় রয়েছে অন্য সমীকরণও। সাম্প্রতিক অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার প্রকাশ্যেই বিজেপি নেতাদের বহিরাগত তকমায় অ্যাখ্যায়িত করতে দেখা গিয়েছে। এই নিয়ে প্রশ্নেরও সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে. তবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালি-অবাঙালি ভেদ করছেন? অস্বস্তি এড়িয়ে নেত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, আসলে তিনি বাইরে থেকে আসা লোকদেরই বহিরাগত বলেছেন। অর্থাৎ, এ রাজ্যে বসবাসকারী হিন্দিভাষীরা যাতে নিজেগের বহিরাগত ভেবে দূরে সরে না যান, তা নিশ্চিত করতে চেয়েছেন মমতা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এক্ষেত্রে একটি প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিতে চাইছেন। কিছুদিন আগেই লালু-পুত্র নজরে এনেছিলেন বাংলাকে। এক্ষেত্রে অবিজেপি শক্তি হিসাবে মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই হাত ধরে বাংলায় পা রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, মমতা মূলত আসানসোল, রানিগঞ্জ. খড়্গপুরের একটি হিন্দিভাষী বলয়কে বেঁধে ফেলতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন, একুশের ভোটে বিজেপিকে ঠেকাতে তেজস্বী ইতিমধ্যেই বড়সড় চাল দিয়ে রেখেছেন। জোটের বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোর্টেই বল ঠেলে রেখেছেন তিনি। ফলে রাজনৈতিক মহল বলছে, অবাঙালি ভোটও নয়া সমীকরণের বার্তাবাহক একুশের নির্বাচনে।

আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ফিরেই অরূপ রায় ‘সেবক’এর ভূমিকায়! পুরনো ফ্লেক্স সাদা তাপ্তিতে নয়া সমীকরণ

এদিনের বৈঠকের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। এদিন কৃষক ইস্যুতেও আরও একবার সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ কেন্দ্রের বিতর্কিত তিন কৃষি বিল আইন বাতিলের দাবিতে সর্বদলীয় প্রস্তাব গৃহীত হয় বিধানসভায়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় সরাসরি “এই আইন প্রত্যাহার করুন, না হলে গদি ছাড়ুন” বার্তা দিয়েছেন।