Manik Bhattacharya: OMR জালিয়াতি করতে ৫০ বছরের পুরনো Coding! মানিকের কিস্সায় স্তম্ভিত তদন্তকারীরা
Manik Bhattacharya: আইনজীবী যুক্তি, যদি কোনও নথির ডিজিট্যালি সংগ্রহের প্রয়োজন, তাহলে তার ছবি তুলে রাখা যায়, অথবা স্ক্যান করে রাখা যায়। কিন্তু বোর্ড অফ প্রাইমারি এডুকেশন সংরক্ষণের নামে যে কপি রেখেছে, তা এডিটেবল।
কলকাতা: মানিকের কিস্সা শেষই হচ্ছে না। প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের কীর্তিতে বিস্মিত তদন্তকারীরাও। সূত্রের খবর, চাকরি চুরির নথিতে ‘কোডিং’এর হদিশ পাওয়া গিয়েছে। ডিজিট্যাল ওএমআর-এর নামে রাখা হয়েছে কোডিংয়ের নথি। যাতে যে কোনও সময়েই এডিট করে পাল্টে ফেলা যায় নম্বর। সূত্রের খবর, এটা করতে ৫০ বছর আগের প্রোগ্রামিং ব্যবহার করা হয়েছে। অন্তত তেমনটাই বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু কেন ৫০ বছরের পুরনো প্রোগ্রামিং?
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, পরিকল্পিতভাবেই ওএমআর-এর স্ক্যান কপি রাখা হয়নি।ডিজিট্যালি ওএমআর শিটগুলোকে সংরক্ষণ করার জন্য ৫০ বছরের পুরনো প্রোগ্রামিং ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটা হল COBOL। এটি ব্যবসা সংক্রান্ত একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ়। ৫০ বছর পুরনো সিস্টেম COBOL। এখন বিলুপ্তপ্রায়। আগে এটি মূলত বিজ়নেস প্রোগ্রামগুলিতে ব্যবহার করা হত। কিন্তু এখন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও অ্যাডভান্স অনেক প্রোগ্রাম বাজারে এসেছে, যেমন JAVA, C++।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, COBOL ব্যবহার করার অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে। যেমন COBOL ব্যবহার করে তথ্য বিকৃত করা যেতে পারে সহজেই। ডিজিট্যালি OMR সংগ্রহে এই প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়েছিল, যাতে খুব সহজে ওএমআর শিটের ডেটা পরিবর্তন করা যায়। এভাবেই দুর্নীতির ফাঁদ পাতা হয়েছিল বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের এইচওডি নন্দিনী মুখোপাধ্যায় বলেন, “মর্ডান ল্যাঙ্গুয়েজে সিকিউরিটি যতটা স্ট্রং, কোবলে সেটা নয়। একটা পদ্ধতি আছে, যেটার মধ্যে দিয়ে কোবলে SQL কোড ঢুকিয়ে ডেটা এডিট করা যায়। টেটে কেন ব্যবহার করা হয়েছে, এরকম কোনও চিন্তাভাবনা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে। ডেটা পরিবর্তনের কোনও উদ্দেশ্য যদি থেকে থাকে, তাহলেই কোবল ব্যবহার করা হয়।”
আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “আগে ডিপিএসসি-র মাধ্যমে নিয়োগ হত। মানিক ভট্টাচার্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে নেন। আসল উদ্দেশ্য ছিল, কেন্দ্রীয় ভাবে কালেকশন হবে। নিয়োগটা বোর্ড করেছে। মানিক কিচ্ছু জানেন না। ধোঁয়া তুলসি পাতা, তেমনটা নয়।”
আইনজীবী যুক্তি, যদি কোনও নথির ডিজিট্যালি সংগ্রহের প্রয়োজন, তাহলে তার ছবি তুলে রাখা যায়, অথবা স্ক্যান করে রাখা যায়। কিন্তু বোর্ড অফ প্রাইমারি এডুকেশন সংরক্ষণের নামে যে কপি রেখেছে, তা এডিটেবল। অর্থাৎ যে কোনও সময়েই তা পরিবর্তন করা যায়। যে পয়সা দেবে, তার ওএমআর শিট এডিট করে তাকে পাশ করিয়ে দেওয়া হবে। এটাই স্পষ্ট হচ্ছে।
৫০ বছরের পুরনো প্রোগ্রামিং ব্যবহার করা নেপথ্যে দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন কর্তাব্যক্তিরাও। এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “একটা ছেলে কতটা পজিশন করেছে, তা নির্ভর করবে বোর্ড। ডিপিএসসি তো করতে পারবে না। খুব স্বাভাবিক কেউ কোনও প্রোগ্রাম ব্যবহার করে, লেটেস্ট মডেলই করবে। কেউ কেন পুরনো কোনও প্রোগ্রাম ব্যবহার করবে? যদি করে থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে, তার অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে।”