Na Bollei Noy: চৌরঙ্গীতে লাল স্রোত, ভিড়কে ভোটে পরিণত করতে কি পারবে বামেরা? যে কথা ‘না বললেই নয়’
Na Bollei Noy: আজ চৌরঙ্গীতে প্রচুর ভিড় হয়েছিল। কিন্তু বামেরা তো পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে জানে, ভিড় আর ভোট এক নয়। ভিড়কে ভোটে পরিণত করতে কি পারবে বামেরা?
কলকাতা: রামায়ণে (Ramayana) পড়েছি, একজোড়া জুতো মানে খড়ম রাজ্য শাসন করেছিল। তবুও জুতোর কোনও মানসম্মান নেই। কারও ওপর ভীষণ রাগ হলে, মানুষ জুতো বা চটি ছোড়ে। জনকল্যাণে জীবন উত্সর্গ করা নেতাদের জুতো দেখিয়ে গায়ের ঝাল মেটায় জনতা। অনুব্রত মণ্ডলকে জুতো দেখানো হয়েছিল আদালতে তোলার সময়। আবার, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একদিন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় চটি ছুড়েছিলেন এক মহিলা। নেতা মানেই যেন নিন্দার বিষয়। নেতারা যে কতটা পরোপকারী হতে পারেন, তা আর কে ভাবে?
এই ধরুন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথা। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তো তাঁর রক্তের সম্পর্ক নেই। অর্পিতার তিন কূলে কেউ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পূর্ব পরিচিত, এমন অভিযোগ পার্থবাবুর চরম শত্রুও করতে পারবে না। অথচ দেখুন, পার্থবাবুর কতটা দয়া মায়ার শরীর। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ৩১টি জীবনবিমার প্রিমিয়ামের দেড় কোটি টাকা নিয়ম করে জমা করতেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। অর্পিতার এলআইসি-র কাগজে তো নমিনি হিসেবে পার্থবাবুরই নাম ছিল, রিলেশন হিসেবে লেখা ছিল আঙ্কল। এখন, অচেনা-অজানা একজন মানুষের কাকা বা মামা হয়ে, তাঁর জীবনবিমার জন্য দেড় কোটি টাকা জমা করার দায়িত্ব নেওয়া কত বড় মনের পরিচয়, সেটা খালি একবার ভাবুন। কিন্তু, ইডি আধিকারিকদের সন্দেহবাতিক মন। তাঁরা এখন খুঁজছেন কেন অর্পিতার জন্য দেড় কোটি টাকা খরচ করতেন পার্থ? কোথা থেকে আসত এত টাকা? সিবিআই, ইডি-র মতো এজেন্সি যেভাবে আদাজল খেয়ে ময়দানে পড়ে আছে, কে জানে, হয়তো সত্যিটা তাঁরা ঠিক খুঁজে বের করবেন। গতকাল বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীই তো বলেছেন, তিনি চান যে কোনও এজেন্সি যেন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করে। কাজেই এজেন্সিগুলির দায়িত্ববোধ নিশ্চয়ই আরও বেড়ে যাবে। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে, নিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে গরু, কয়লা সব দুর্নীতির খুঁটিনাটি বের করবে তারা। সৌগত রায়ের মতো তৃণমূল নেতারা অবশ্য আজকেও বলেছেন, ইডি বা সিবিআই-কে ব্যবহার করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে বিজেপি। ওই যে গত বছর বিধানসভা ভোটে জিততে পারেনি বিজেপি, সেজন্য না কি চক্রান্ত করে তৃণমূল নেতাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। সৌগতবাবু নিশ্চয়ই, নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর সেই তালিকার বাইরে রাখবেন? কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ই তো গতকাল বিধানসভায় বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন নরেন্দ্র মোদী ইডি,সিবিআই-কে বাংলায় পাঠাননি। তার মানে তৃণমূলের কাছে নরেন্দ্র মোদী তো দুষ্টু লোক নয় তাই না? সৌগত রায় কিন্তু চমকে দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, মোদীকে সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়টা মমতা ব্যানার্জির ব্যক্তিগত বিষয়। তাঁর দলনেত্রীর পার্সোনাল মতামত নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি সৌগত বাবু। সিবিআই-ইডি-র চাপ সামলাতেই কৌশলে নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা মুখ্যমন্ত্রী করেছেন কি না, এবিষয়ে সৌগতবাবু কিছু বলতে না চাইলেও, বিরোধীদের মুখ তো বন্ধ নেই। আজ কলকাতায় এসএফআই-ডিওয়াইএফআই-এর কর্মসূচি ছিল। সেই সমাবেশে বলতে উঠে, মহম্মদ সেলিমের মুখে ফের এসেছে সেটিং তত্ত্ব।
আজ চৌরঙ্গীতে প্রচুর ভিড় হয়েছিল। কিন্তু বামেরা তো পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে জানে, ভিড় আর ভোট এক নয়। ভিড়কে ভোটে পরিণত করতে কি পারবে বামেরা? সিবিআই-ইডির সৌজন্যে তো রাজ্যে বিরোধীদের হাতে অস্ত্রের অভাব নেই? এসব নিয়েই কথা হবে আজ। যে কথাগুলো না বললেই নয়। না বললেই নয় দেখবেন টিভি নাইন বাংলায়। সময়? রাত ৮.৫৭।