Private School: ‘টাকা না নিলেই দায়িত্ব এড়াতে পারে রাজ্য?’, অনুমোদনহীন বেসরকারি স্কুল-মামলায় প্রশ্ন বিচারপতির

Private School: মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন শুনানিতে উল্লেখ করেন, স্কুল বৈধতা না থাকার কথা এখন জানা যাচ্ছে। আর তার জেরে অধিকাংশ অভিভাবকের রাতের ঘুম উড়েছে। এদিকে, এদিন জানা যায় স্কুলবাড়িটিরও বৈধতা নেই। শুনেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি।

Private School: 'টাকা না নিলেই দায়িত্ব এড়াতে পারে রাজ্য?', অনুমোদনহীন বেসরকারি স্কুল-মামলায় প্রশ্ন বিচারপতির
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুImage Credit source: টিভি নাইন বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 13, 2023 | 2:42 PM

কলকাতা: হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আচমকাই পড়ুয়ারা জানতে পেরেছেন অনুমোদনই নেই তাঁদের স্কুলের। বোর্ডের পরীক্ষার আগে প্রায় ৫০০ পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশনও আটকে গিয়েছে। খাস কলকাতার বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ সামনে আসার পর তৎপর হয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবার জানা গেল, সেই স্কুলটি যে বাড়িতে চলছে, তার কোনও কমপ্লিশন সার্টিফিকেট নেই। অবিলম্বে খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আদালত। বেসরকারি স্কুল মানেই যে সরকার দায় এড়িয়ে যেতে পারে না, এই বার্তাও দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। কয়েক দিন আগেই কলকাতার রিপণ স্ট্রিটের ওই স্কুলে এই অভিযোগ তুলে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা।

বুধবার আদালতে স্কুল বৈধতা না থাকার কথা স্বীকার করা নিয়েছে। স্কুলের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, “পড়ুয়াদের হাতে তো প্ল্যাকার্ড ধরিয়েছেন আপনারাই। ওদের হাত থেকে পেন ছাড়িয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে ধরনা দিতে শিখিয়েছেন। আপনাদের দায়িত্বহীনতা ওদের এটা করতে বাধ্য করেছে।” স্কুলের পরিচালন কমিটির ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন শুনানিতে উল্লেখ করেন, স্কুল বৈধতা না থাকার কথা এখন জানা যাচ্ছে। আর তার জেরে অধিকাংশ অভিভাবকের রাতের ঘুম উড়েছে। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, এই স্কুলের ক্ষেত্রে রাজ্য কোনও টাকা নেয় না, ফলে রাজ্যের কোনও দায়িত্ব নেই। এ কথা শুনে বিচারপতি বসু বলেন, “টাকা না নিলেই কি দায়িত্ব এড়াতে পারে রাজ্য?”

স্কুলের আইনজীবী জানান, বোর্ড অনুমোদন দিচ্ছে না স্কুলকে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এত কিছুর পরও কীভাবে স্কুলে নতুন পড়ুয়া ভর্তি করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। স্কুলকে বিচারপতির প্রশ্ন, নতুন ছাত্রছাত্রী কীভাবে ভর্তি করা হচ্ছে? তারা তো জানেই না যে ওই স্কুলের অনুমোদন নেই।

এদিকে, বিচারপতির প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে স্কুলের আইনজীবী জানান, স্কুলবাড়ির কোনও কমপ্লিশন সার্টিফিকেট নেই। ওই সার্টিফিকেট থাকলে তবেই পুরসভা অনুমোদন দেয়। বাড়িটির বেশিরভাগ অংশ ভেঙে পড়ছে বলেও জানিয়েছে স্কুল। এ কথা শুনে আরও ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি বলেন, “এর দায় কার? সিসি (কমপ্লিশন সার্টিফিকেট) নেই এমন বাড়িতে স্কুল চলছে কীভাবে? এটা একটা ক্রিমিনাল অফেন্স।” এফআইআর করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এই স্কুলের বোর্ডের প্রত্যেক সদস্যকে আদালতে আসতে বলেছেন বিচারপতি। কেন্দ্রের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্যকে স্পেশাল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করেছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি ওই স্কুলে গিয়ে সমস্যার কথা শুনবেন ও সোমবার আদালতে জানাবেন সেই তথ্য। তারপরই সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

গত বছরের ১৩ জুলাই ওই স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন বোর্ডের পরীক্ষার জন্য। স্কুলে সেই টাকাও জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। এবছর তারা দশম শ্রেণিতে পড়ছে। এখন স্কুল জানাচ্ছে তারা কোনও অনুমোদন পায়নি।