Corona Guidelines: আইন বিরুদ্ধ! সরকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খাস কলকাতায় স্কুল খুলে ‘অফলাইন পরীক্ষা’
Offline Exam in Kolkata: স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হল, "কেন অফলাইনে পরীক্ষা নিয়েছেন, স্কুল খোলার কি কোনও নির্দেশ আছে?" প্রশ্ন এড়িয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে একজন পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন, "আপনারা এসেছেন কেন?"
সুমন মহাপাত্র: রাজ্যে স্কুল কলেজ খোলার কোনও নির্দেশিকা এখনও সরকার দেয়নি। প্রথম লকডাউন থেকেই রাজ্যে শিক্ষাঙ্গন বন্ধ। মাঝে একবার স্কুল খোলা হলেও সেভাবে লাভ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুজোর পর স্কুল খোলার পরিকল্পনা রযেছে। কিন্তু উল্টো ছবি পিকনিক গার্ডেনের একটি বেসরকারি স্কুলে। মঙ্গলবার সকাল সকাল ওই বেসরকারি স্কুলের সামনে গিয়ে টিভি নাইন বাংলা দেখল স্কুলের মধ্যে পড়ুয়ারা প্রবেশ করছেন। জানা গেল, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের অঙ্ক পরীক্ষার জন্য ডেকেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এরপর টিভি নাইন বাংলার স্টিং অপারেশনে দেখা গেল, স্কুলের মধ্যে চলছে অফলাইনে পরীক্ষা। কালো কাচে ঢাকা অডিটোরিয়ামে চলছে পরীক্ষা পর্ব। শিক্ষিকাও স্বীকার করে নিলেন, তাঁরা অফলাইন ও অনলাইন, দুই ভাবেই পরীক্ষা নিচ্ছেন। এদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছিল ক্সে বসে পরীক্ষা। ২ ঘণ্টা পর শেষ হল অঙ্ক পরীক্ষা। পড়ুয়ারা বেরিয়ে এলেন স্কুল থেকে। সেই ছবিও ধরা পড়ল ক্যামেরায়। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হল, “কেন অফলাইনে পরীক্ষা নিয়েছেন, স্কুল খোলার কি কোনও নির্দেশ আছে?” প্রশ্ন এড়িয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে একজন পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন, “আপনারা এসেছেন কেন?”
এরপর টিভি নাইন বাংলা প্রশ্ন করে, “এই যে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারা স্কুলে এসেছে এই করোনা কালে, তাঁদের যদি কিছু হয়ে যায়, দায় কে নেবে?” প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। লাগাতার লুকোচুরি খেলতে থাকেন ক্যামেরার সঙ্গে। কোনও উত্তর মেলেনি। কোভিড কালে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে, স্কুল কর্তৃপক্ষের এই আচরণ কি মেনে নেওয়া যায়? এ বিষয়ে চিকিৎসক কাজল কৃষ্ণ বণিক বলেন, “এটা একেবারেই আইন বিরুদ্ধ। স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত হয়নি কোভিডের শেষলগ্নে এসে এই আচরণ করা। ওই পড়ুয়ারা ও ওই এলাকার বাসিন্দার করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা এড়াতে পারত স্কুল।” এ বিষয়ে এলাকার বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি কলকাতার বাইরে আছি। ফিরে গিয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নেব।”
এ বিষয়ে ওই স্কুলের অভিভাবকদের প্রশ্ন করা হলে, তাঁরা ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে নারাজ। তবে সূত্রের খবর, স্কুল নোটিস দেওয়ায় চাপে পড়েই পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল খুলেছে। রাজ্যেও স্কুল খোলার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু এখন নিয়ম না মেনে এইভাবে স্কুল খোলা আদৌ কি উচিত, সে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কারণ, করোনার মধ্যে স্কুল খুললে একাধিক বিধি মেনে চলতে হবে। যা এই বেসরকারি স্কুলে ছিল না। পড়ুয়াদের মুখে মাস্ক থাকলেও নামমাত্র সামাজিক দূরত্ব ছিল না। যা ভয় দেখাচ্ছে, আতঙ্কিত করছে আম আদমিকে। কারণ দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাটা এখন ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ ছাড়িয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন ৪ লক্ষ ৪৯ হাজারেরও বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন: Midland Nursing home: অঙ্গ বিক্রির মামলায় মৃত্যুর ৫ মাস পর গৃহবধূর ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ আদালতের