পোস্টমর্টেম: মিরর ইমেজ নেই, হার্ড ডিস্ক নেই, SSC-র হাতে শুধু ‘পেনসিল’?
SSC-OMR: পরীক্ষা হওয়ার পর এসএসসি-র দফতরেই ডেটা স্ক্যানটেক স্ক্যানিং-এর কাজ করে। তারাই ওএমআর শিটগুলিকে ডিজিটাল ডেটায় রূপান্তরিত করে। তারপর সেটা নাইসার কাছে যায়। নাইসা ওই ওএমআর-এর মূল্যায়ন করে। সেই অনুযায়ী ফল প্রকাশ হয়।

কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর। চাকরি যাওয়ার কারণ হিসেবে শীর্ষ আদালতের রায়ে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে ওএমআর শিটের কোনও ডিজিটাল কপি বা হার্ড কপি নেই। সেটা থাকলে যোগ্যদের বেছে নেওয়া যেত সহজেই। সেটা নেই বলেই গোটা প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
এসএসসি এই ওএমআর শিট মূল্যায়নের দায়িত্ব দিয়েছিল ‘নাইসা’ নামে এক সংস্থাকে। নাইসা আবার সেই ওএমআর স্ক্যান করার বরাত দিয়েছিল ‘ডেটা স্ক্যানটেক’ নামে আর এক সংস্থাকে।
পরীক্ষা হওয়ার পর এসএসসি-র দফতরেই ডেটা স্ক্যানটেক স্ক্যানিং-এর কাজ করে। তারাই ওএমআর শিটগুলিকে ডিজিটাল ডেটায় রূপান্তরিত করে। তারপর সেটা নাইসার কাছে যায়। নাইসা ওই ওএমআর-এর মূল্যায়ন করে। সেই অনুযায়ী ফল প্রকাশ হয়।
এই খবরটিও পড়ুন




এই পুরো ডেটা রাখা ছিল হার্ড ডিস্কে। সেই হার্ড ডিস্কের একটা কপি এসএসসি-র কাছেও ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তদন্ত শুরু হলে জানা যায়, সেই হার্ড ডিস্ক আর এসএসসি-র কাছে নেই, হারিয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ একটিমাত্র হার্ড ডিস্ক পড়েছিল নাইসার কাছে।
সিবিআই তদন্তে নাইসার ওই হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয় পঙ্কজ বনশলের কাছ থেকে, যিনি আগে নায়সায় কর্মরত থাকলেও পরবর্তীতে তিনি একটি নিজের কোম্পানি খুলে ফেলেছেন।
এবার বারবার যে মিরর ইমেজের কথা বলা হচ্ছে, তা হল আসলে ওএমআর শিটের ‘রেপ্লিকা’। সেটা এসএসসি-র কাছে নেই। সেই মিরর ইমেজ থাকার কথা ছিল এসএসসি-র সার্ভারে। কিন্তু সিবিআই তদন্ত করে দেখেছে কমিশনের সার্ভারে কোনও মিরর ইমেজ নেই। হার্ড ডিস্কের ডেটা এসএসসি হারিয়ে ফেলেছে। এবার যখন কেউ আরটিআই করে কোনও তথ্য জানতে চাইত, তখন এসএসসি-কে ওএমআর নিতে ছুটতে হত নাইসার কাছে। সেখান থেকে ওএমআর এনে আরটিআই-এর উত্তর দিত তারা।
হাইকোর্টে ও সুপ্রিম কোর্টে পরে এসএসসি স্বীকার করে নিয়ে বলে যে, আমরা আমাদের কপি বলে যেগুলো দিতাম, সেগুলো আসলে নাইসার কপি।
সুপ্রিম কোর্ট বলছে, এসএসসি-র কাছে যদি ডিজিটাল কপি বা ওএমআর শিট থাকত, তাহলে সবার চাকরি বাতিল করার প্রয়োজন পড়ত না। তাহলে শুধুই অযোগ্যদের নাম বাতিল করা হত। প্রশ্ন হল, তাহলে কোন ওএমআর দিতে চাইছে এসএসসি?
শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বৈঠকে চাকরিহারাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে কোনও মিরর ইমেজ তাদের কাছে নেই। তাহলে কী আছে? তথ্য বলছে, গাজিয়াবাদ থেকে সিবিআই যে ওএমআর উদ্ধার করেছে, সেটাই আছে। এখন সেটা প্রকাশ করলেই সেটা এসএসসি-র হয়ে যাচ্ছে না। আদতে সেটা সিবিআই-এর। তাহলে সেই কপি প্রকাশ করে কি যোগ্য অযোগ্য বিচার করা সম্ভব? সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে।





