‘সবকিছু সহ্য করে নেওয়ার মতো বড় ভুল… মৃত্যুর কারণ’, ফের বিস্ফোরক রূপা
বিজেপি ছেড়ে সিপিএমের মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন রূপা। তারপরই অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন যে তিনি রাজনীতিতে আর নেই।
কলকাতা: বিজেপিতে (BJP) যোগ দিয়েছিলেন মাস কয়েক মাসে। আর দিন কয়েক আগে অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য (Rupa Bhattacharjee) জানিয়েছেন তিনি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন। অভিনেত্রীর এই খবরে যখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি, তখন আরও এক ফেসবুক পোস্টে (Facebook Post) বিস্ফোরক রূপা। সরাসরি না বললেও তাঁর ইঙ্গিতবাহী পোস্ট যে তাঁর ছেড়ে আসা দলকে কটাক্ষ করে, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। তাঁর পোস্টে অভিনেত্রী রূপকের সাহায্য নিলেও মূল বক্তব্য হল, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে বিপদে পড়তে হতে পারে।
ওই পোস্টে ‘ব্রয়লিং ফ্রগ সিনড্রোম’ বা ফুটন্ত জলে একটি ব্যাঙের অবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। বলা হয়, একটা ব্যাঙকে জল ভর্তি পাত্রে রেখে এবং জল গরম করলে ব্যাঙটি জলের তাপমাত্রা সহ্য করার চেষ্টা করে। লাফ দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে না। পর জল বেশি গরম হয়ে গেএল ব্যাঙ পাত্র থেকে লাফানোর চেষ্টা করে কিন্তু ততক্ষণে সব শক্তি হারিয়ে ফেলায় পারে না সে।
এই রূপকের ব্যাখ্যা করে রূপা বলেছেন, ‘ব্যাঙের মৃত্যুর কারণটা আসলে গরম জল নয়, বিপজ্জনক পরিস্থিতির শুরুতে সেই পরিস্থিতি অস্বীকার করে লাফ না দেওয়াটা তার মৃত্যুর কারন। সব কিছু সহ্য করে নেওয়ার মতো বড় ভুল তার মৃত্যুর কারণ।’ রূপার দাবি, পাত্রের জল গরম কেন তার প্রতিবাদ না করে বরং তার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তেই মৃত্যু হয় ব্যাঙের। রাজনৈতিক মহলের মতে, রূপার দাবি যে তিনি দল তথা রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে না নিলে তাঁরও কোনও খারাপ পরিণতি হতে পারত। তবে তাঁকে ঠিক কোন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হচ্ছিল, তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি এখনও।
দিন দুয়েক আগেই টলিপাড়ার দুই অভিনেতা ও বিজেপি কর্মী রূপা ভট্টাচার্য ও অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যাদবপুরে সিপিএম-র শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল। রাজনৈতিক বিতর্কের শুরু সেখানেই। তবে কি শিবির বদল করছেন রূপা? এমন প্রশ্ন যখন উঠতে শুরু করেছে তখন রূপা নিজেই সাফ জানিয়ে দেন, ‘রাজনীতি ছাড়লাম। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলেই জয়েন করছি না। মানুষের ভালোর জন্য ন্যায্য কথা বলব। ভাল কাজকে সমর্থন করব। খারাপের প্রতিবাদ করব।’
এই বিতর্কে রূপা তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিলেন, ‘কোভিড-লকডাউনের সময় প্রত্যেক মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার যে চেষ্টা সেটিকে আমি কোনও রাজনৈতিক রঙে মেপে দেওয়ার ভীষণ বিরোধী। যারা এই অন্নটা তুলে দিচ্ছেন তাঁরা কি ভাত দেওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করেছেন আপনাকে ভাতটা দিচ্ছি, আমাকে কি ভোটটা দিয়েছেন? বিধানসভায় আসনসংখ্যা শূন্য হয়ে যাওয়ার পরেও যে স্পিরিটে ওঁরা কাজ করেছে সেই কাজকে কেউ সমর্থন জানাবে না এমন মানুষ বোধহয় নেই। সেই কারণেই এসেছি।’
অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিষয়টাকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাঁর দাবি, তারকারা দলের শোভা বাড়াতে এসেছিলেন। তাঁর মতে, দলে আদর্শের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছেন তাঁরা আছেন। কিন্তু যাঁরা সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতিতে এসেছিলেন, তাঁরা কেউ নেই। আরও পড়ুন: সিপিএম-এ বিজেপির রূপা, অনিন্দ্য!… ক্ষোভ উগরে দিয়ে দল ত্যাগের কথা রাহুল-শ্রীলেখার মুখে