Basanti Highway: মরণফাঁদ বাসন্তী হাইওয়ে! কেন বার বার দুর্ঘটনা ব্যস্ত রাজ্য সড়কে?
Road Accident in Basanti Highway: কেন বার বার এই পথ দুর্ঘটনা? খোঁজ নিল TV9 বাংলা। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন একাধিক কারণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রাজ্য সড়কের উপর। রাস্তার উপর বেপরোয়া ভাবে ট্রাক, লরি, ছোট মালবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকা। এর ফলে, রাস্তার অনেকটা অংশ আটকে যায়।
কলকাতা: মৃত্যুফাঁদ বাসন্তী হাইওয়ে (Basanti Highway)। সোমবারই দুর্ঘটনায় (Road Accident) প্রাণ গিয়েছে এক ট্রাফিক সার্জেন্টের। এখন অবশ্য রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এতদিন কী করছিল প্রশাসন? ঘুম কাটতে এত দেরি হল কেন? বাসন্তী রাজ্য সড়কের উপর পথ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা তো আকছাড় হচ্ছে। বড় দুর্ঘটনার সংখ্যাও নিতান্ত কম নয়। বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য মাংস কিনতে গিয়েছিলেন তাড়াহেদিয়ার বছর উনত্রিশের মাধব দাস। বাড়ি তিনি ফিরোছিলেন বটে, তবে শেষবারের জন্য। সাদা কাপড়ে মোড়া অবস্থায়। দুই শিশু সন্তান ও বয়স্ক শ্বশুর শাশুড়িকে নিয়ে কোনওরকমে সংসার চালাচ্ছেন স্বামীহারা সীমা দাস। এমন ঘটনা আরও রয়েছে। দুই কন্যা, বাবা-মা ও অল্প বয়সি স্ত্রীকে ফেলে অকালে পথ দুর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছে কড়াইডাঙার বছর ছাব্বিশের সুজয় সরদার। সংসারের হাল বয়স্ক শ্বশুড়ের কাঁধে। বেঁওতা গ্রামের একুশ বছরের আজহারউদ্দিন তরফদারের অবস্থা আরও করুণ। বাড়ির এক মাত্র সন্তান আজহার। ইঞ্জিন ভ্যান নিয়ে মাল আনতে গিয়েছিলো। আর ফেরা হল না। তারপর বাবা মাকে ফেলে স্ত্রী চলে গিয়েছে বাপের বাড়ি। অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি। এরা প্রত্যেকেই বাসন্তী রাজ্য সড়কে পথ দুর্ঘটনায় বলি হয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বিগত ছয় মাসে বাসন্তী রাজ্য সড়কের কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় প্রায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার সংখ্যা প্রায় একশোর উপর। ভাঙড় থানা এলাকায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার সংখ্যা এক্ষেত্রেও একশোর কাছাকাছি। কেন বার বার এই পথ দুর্ঘটনা? খোঁজ নিল TV9 বাংলা। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন একাধিক কারণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রাজ্য সড়কের উপর। প্রথমত রাস্তার উপর বেপরোয়া ভাবে ট্রাক, লরি, ছোট মালবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকা। এর ফলে, রাস্তার অনেকটা অংশ আটকে যায়। তার উপর রাস্তার পাশে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জায়গায় ইমারতি দ্রব্য মজুত করে রাখা হয়েছে। এসব তো রয়েছেই, তার উপর সরকারি নির্দেশিকার তোয়াক্কা না করেই ইঞ্জিন ভ্যান, টোটো, অটো চলাচল করে।
কারণ আরও অনেক রয়েছে। মাঝে মধ্যেই রাতে ট্রাফিক সার্জেন্টের দেখা মেলে না এখানে। তার উপর বাসন্তী রাজ্য সড়ক এক লেনের রাস্তা। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনা যেন একেবারে ওঁৎ পেতে বসে থাকে এখানে। রাস্তার পরিচর্চারও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এক লেনের রাস্তা অনুযায়ী আড়াআড়ি হিসাবে অনেকটা কম। লেদার কমপ্লেক্স এলাকার বামনঘাটা থেকে ভোজেরহাট খেলার মাঠ পর্যন্ত আড়াআড়ি ১০ মিটারের রাস্তা। অর্থাৎ মাত্র, ৩০ ফুট। এরপর ভোজেরহাট খেলার মাঠ থেকে ঘোষপুর পর্যন্ত রাস্তার আড়াআড়ি মাপ মাত্র ৭ মিটার অর্থাৎ ২১ ফুট। হাইওয়ের ক্ষেত্রে এই মাপ বেশ কম বলেই মনে করছেন অনেকে। এদিকে বাসন্তী হাইওয়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক, ফলে নিত্যদিন অত্যাধিক পরিমাণে যান চলাচল হয় এই পথে। বাসন্তী রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল করে ১৮টি রুটের। এ ছাড়া প্রত্যেক দিন গড় ৫০০-৭০০ ট্রাক যাতায়াত করে এই রাস্তা দিয়ে। ছোট মালবাহী গাড়ির সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়, প্রত্যেক দিনের গড় ৫০০-৭০০। এসবের পর রয়েছে অগুণতি অটো-টোটো।