Cabinet Reshuffle: মমতার ক্যাবিনেটে একঝাঁক নতুন মুখ, দেখে নিন তাঁদের রাজনৈতিক কেরিয়ার

Mamata Banerjee: বেশ কিছু নাম ঘিরে জল্পনা আগে থেকেই চলছিল। যেমন উদয়ন গুহ, পার্থ ভৌমিক, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সত্যজিৎ বর্মণ সহ বেশ কিছু নাম গত কয়েকদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছিল রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে।

Cabinet Reshuffle: মমতার ক্যাবিনেটে একঝাঁক নতুন মুখ, দেখে নিন তাঁদের রাজনৈতিক কেরিয়ার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 03, 2022 | 6:10 PM

কলকাতা : রাজ্য মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু নতুন মুখ নিয়ে আসা হয়েছে বুধবার। রয়েছেন জেলার রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিকদের দক্ষতাকে এবার রাজ্য মন্ত্রিসভায় কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছু নাম ঘিরে জল্পনা আগে থেকেই চলছিল। যেমন উদয়ন গুহ, পার্থ ভৌমিক, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সত্যজিৎ বর্মণ সহ বেশ কিছু নাম গত কয়েকদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছিল রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। তাঁরা যে মন্ত্রিসভার সদস্য হতে পারে, এমন কথা আগেই জানিয়েছিল TV9 বাংলা। একনজরে দেখে নেওয়া যাক মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের রাজনৈতিক কেরিয়ার।

পার্থ ভৌমিক – কিছুদিন আগেই তৃণমূলের তরফে জেলাস্তরে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কিছু বদল করা হয়েছিল। সেই তালিকায় ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ থেকে বাদ গিয়েছিল পার্থ ভৌমিকের নাম। জল্পনা তখন থেকেই চলছিল। শেষ পর্যন্ত তা মিলে গেল। এবার আরও বেশি দায়িত্ব পেলেন পার্থ ভৌমিক। মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য করা হয়েছে পার্থ ভৌমিককে। তিনি বর্তমানে নৈহাটির বিধায়ক। এলাকার রাজনীতির আঙিনায় বারবার সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। পর পর তিন বার নৈহাটির থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। ২০১১, ২০১৬,২০২১। তৃণমূল এ-রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে টানা বিধায়ক রয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, অর্জুন সিং যখন বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন, সেই সময় এলাকায় তৃণমূলকে শক্ত করে ধরে রাখতে পার্থ ভৌমিকের ভূমিকা ছিল যথেষ্ট।

উদয়ন গুহ – উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে অতি পরিচিত মুখ উদয়ন গুহ। দীর্ঘদিনে রাজনীতিক। আগে ছিলেন বাম শিবিরে। তাঁর বাবা কমল গুহ অতীতে বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে আসা। ২০১১ সালে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়কও হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে, ২০১৫ সালে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। ২০১৬ সালে এবং ২০২১ সালে তাঁকে দিনহাটা থেকে প্রার্থী করে তৃণমূল। দলের ভরসার মান রেখেছিলেন উদয়নও। এখন উদয়ন গুহকে আরও বেশি দায়িত্ব দিয়ে পূর্ণমন্ত্রী করে নিয়ে আসা হল রাজ্য মন্ত্রিসভায়।

স্নেহাশিস চক্রবর্তী – মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও এক বিশ্বস্ত সঙ্গী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। ভোট রাজনীতিতে বার বার স্নেহাশিস চক্রবর্তীর উপর ভরসা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালের রাজনৈতিক পালাবদলের সময়ে স্নেহাশিসকে জাঙ্গিপাড়া থেকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী যে ঠিক ঘোড়ার উপর বাজি রেখেছেন, তা বার বার প্রমাণ দিয়েছেন স্নেহাশিস। ২০১১ সালে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন। এরপর ২০১৬ এবং ২০২১ সালের নির্বাচনেও মমতা আস্থা রেখেছিলেন স্নেহাশিসের উপর। সেই ভরসার মর্যাদা রেখেছেন স্নেহাশিসও। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতা আসার পর থেকে টানা তিনবারের বিধায়ক তিনি জাঙ্গিপাড়া থেকে। এবার সেই স্নেহাশিসকে দেখা যাবে মমতার ক্যাবিনেটেও। তাঁকেও দেওয়া হয়েছে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব।

প্রদীপ মজুমদার – মমতার মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন প্রদীপ মজুমদার। তিনি বর্তমানে দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। রাজ্যের কৃষি ক্ষেত্রে বিকাশের জন্য তাঁর ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য রাজনীতিতে বেশ স্বচ্ছ ভাবমূর্তির রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিত তিনি। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৬ সালের নির্বাচনেও লড়েছিলেন তিনি তৃণমূলের টিকিটে। তবে সেই সময় অবশ্য শেষ হাসি হাসতে পারেননি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে অবশ্য তিনি জয়ী হন। এই পরিস্থিতিতে প্রদীপ মজুমদারকে রাজ্য মন্ত্রিসভা নিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিপ্লব রায় চৌধুরী – বিপ্লব রায় চৌধুরী বর্তমানে পাঁশকুড়ার বিধায়ক। পাশাপাশি রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প নিগমের ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন বিপ্লব বাবু। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। মুখ্যমন্ত্রীও যথেষ্ট ভরসা রাখেন তাঁর উপর। রাজ্যে পালাবদলের সময় তিনি পাঁশকুড়া থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। এরপর ২০২১ সালে আবারও জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়েছেন। বিপ্লব রায়চৌধুরীকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে এসে দলের নবাগত এবং পুরনো যোদ্ধাদের মধ্যে এক ভারসাম্য আনা হয়েছে বলেই মত রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের। বিপ্লব বাবু অতীতে ছিলেন কংগ্রেসের সৈনিক। কংগ্রেসের বিধায়কও ছিলেন অতীতে। পরবর্তী সময়ে মমতা কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূল গঠন করে বিপ্লব বাবুও তৃণমূলে যোগ দেন।

সত্যজিৎ বর্মণ – মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় এবার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সত্যজিৎ বর্মণকে। অতীতে তিনিও কংগ্রেসের নেতা ছিলেন। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে তিনি যোগ দেন তৃণমূল শিবিরে। বর্তমানে তিনি হেমতাবাদের বিধায়ক। প্রথমবারের এই বিধায়ককেও এবার দেখা যাবে মমতার মন্ত্রিসভায়।

তাজমুল হোসেন – প্রাক্তন বাম বিধায়ক তাজমুল হোসেনকেও এবার নিয়ে আসা হয়েছে মমতার মন্ত্রিসভায়। দেওয়া হয়েছে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। এককালের ফরওয়ার্ড ব্লক নেতার উপর এবার আরও দায়িত্ব বাড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে বামদের অতি গুরুত্বপূর্ণ এক মুখ ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে তিনি বামদের বিধায়ক ছিলেন। কিন্তু ২০১৬ সালের পর তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। এরপর ২০২১ সালে তিনি হরিশচন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন।