State run pharmacies: দামি ওষুধ তো ছেড়েই দিন, সামান্য প্যারাসিটামল, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটও নেই সরকারি হাসপাতালের ফার্মাসিতে
West Bengal Health Facility: ফার্মাসির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলা তো বলেই দিলেন, এর আগেও তাঁকে হাজার টাকার ওষুধ বাইরে থেকে কিনে খেতে হয়েছে।
কলকাতা: কার্ডিওলজি থেকে চেস্ট মেডিসিন। ত্বকের জটিল রোগ হোক বা হাড়ের সমস্যা। বিনামূল্যে ওষুধের আশায় প্রতি দিন মহানগরের সরকারি হাসপাতালগুলির ফার্মাসিতে ভিড় করেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। কিন্তু বাস্তবে কটা ওষুধ বিনামূল্যে হাতে আসে তাঁদের? খোঁজ নিল টিভি নাইন বাংলা।
বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। সরকারি হাসপাতালের ফার্মাসিতে আদৌ নিখরচায় ওষুধ মিলছে কি? খোঁজ নিতে প্রথমে রাজ্যের অন্যতম সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে পৌঁছায় টিভি নাইন বাংলা। কী ছবি সেখানকার? আউটডোরে চিকিত্সা করাতে আসা রোগী ও পরিজনদের সঙ্গে কথা বললেন আমাদের প্রতিনিধি। রোগী ও তাঁদের পরিজনরা বলছেন, যেগুলি কম দামি ওষুধ, একমাত্র সেগুলিই দেওয়া হয় সরকারি হাসপাতালের ফার্মাসি থেকে। আর যেগুলির দাম একটু বেশি, সেগুলির কোনওটাই এখানে পাওয়া যায় না। ফার্মাসির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলা তো বলেই দিলেন, এর আগেও তাঁকে হাজার টাকার ওষুধ বাইরে থেকে কিনে খেতে হয়েছে।
অন্য এক মহিলা জানান, তিনি শুধু খাওয়ার ওষুধটিই পেয়েছেন এখান থেকে। কিন্তু ত্বকে লাগানোর মলম ফার্মাসিতে নেই। আবার কার্ডিওলজি বিভাগের এক রোগীর পরিজন বলছেন, চিকিৎসক ৬ টি ওষুধ লিখে দিয়েছেন প্রেসক্রিপশনে। কিন্তু ফার্মাসিতে এসে দেখলেন একটাও নেই। পরিস্কার বলে দেওয়া হয়েছে, সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে কারও ভাগ্যে অর্ধেক ওষুধ জুটছে, কারও আবার তাও জুটছে না।
আউটডোরের থিকথিকে ভিড়। কোনও মতে সেটি পেরিয়ে ডাক্তার দেখানো গেলেও ফার্মাসির সামনে ফের লাইন। তার উপর দুর্যোগ। সব কিছু উপেক্ষা করে ফার্মাসি পর্যন্ত পৌঁছালেও নিখরচায় কি ওষুধ পাচ্ছেন রোগী ও তাঁর পরিজনেরা? পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে একাধিক সরকারি হাসপাতালের ফার্মাসিতে অতি সাধারণ ওষুধগুলিও পাওয়া যাচ্ছে না। নেই প্যারাসিটামল কিংবা ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটের মতো ওষুধও। বিশেষ করে ৫০০ কিংবা ৬৫০ ক্ষমতাসম্পন্ন প্যারাসিটামল একেবারেই নেই অধিকাংশ জায়গায়। কোথাও কোথাও হাজার পাওয়ারের প্যারাসিটামল দিয়ে কোনওরকমে কাজ চালানো হচ্ছে।
শুধু এসএসকেএমেই নয়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ফার্মাসিতেও একইরকম বেহাল ছবি। ফার্মাসির সামনে লম্বা লাইন। অথচ কাউন্টারের সামনে পৌঁছাতেই অর্ধেক ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না।
সরকারি হাসপাতালের ফার্মাসি থেকে যাঁরা ওষুধ নিতে আসেন, তাঁদের বেশিরভাগই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে গেলে যে টাকা লাগবে, সেই টাকা খরচ করার ক্ষমতা নেই তাঁদের। আর তাই, বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়ার আশায়, দূর দূরান্ত থেকে এসে ওঁরা লাইন দেন এসএসকেএম কিংবা কলকাতা মেডিক্যালের ফার্মাসির সামনে। কিন্তু এই বেহাল চিত্র যদি আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে কী হবে এই মানুষগুলোর? ওষুধের অভাবে কী চিকিৎসা বন্ধ হবে ওঁদের? ওষুধ না পেয়ে ফার্মাসির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বিবর্ণ চোখে মুখে যেন সেই প্রশ্নগুলিই ঘোরাফেরা করছে।