Supreme Court: চাকরি তো গেল, এবার জেনে নিন সুদে-আসলে ২০১৬ থেকে এখন পর্যন্ত মোট কত টাকা ফেরত দিতে হবে চাকরিহারাদের?
Supreme Court: এসসিসি-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংখ্যাটা ৫ হাজার ৪৮৫ জন। প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও যারা চাকরি পেয়েছেন, যারা সাদা খাতা জমা দিয়ে কিংবা ওএমআর শিটে নম্বর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সমস্ত বেতন ফেরত দিতে হবে। সঙ্গে গুনতে হবে সুদের টাকাও।

শ্রাবন্তী সাহা: চাকরি বাতিল মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। অর্থাৎ ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হল। শুধু চাকরি বাতিলই নয়, ২০১৬ সাল থেকে পাওয়া বেতনও ফেরত দিতে হবে। কিন্তু কাদের? এবং কত?
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ২৬ হাজার চাকরি সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেল। হাইকোর্টের রায়ের পর সকলের ধারণা ছিল, সুুপ্রিম কোর্ট হয়তো মানবিকতার কারণে বেতন ফেরতের অর্ডারটা পুর্নবিবেচনা করতে পারে। কিন্তু সেই অর্ডারটাও সুপ্রিম কোর্ট বহাল রেখেছে। বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে।” কিন্তু কাদেরকে? সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, যাঁরা চিহ্নিত অযোগ্য, তাঁদের বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে তিনটে ক্যাটাগরি করে দেওয়া হয়েছে। কারা কারা ব্ল্যাঙ্ক OMR শিট জমা দিয়েছিল, তাঁদের নামের তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি করা রয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে সেই তালিকা জমা পড়ে। তাঁদেরকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। এতদিন তাঁরা যে বেতন পেয়ে এসেছেন, অর্থাৎ ২০১৬ সাল থেকে, তার ১২ শতাংশ সুদের হারে টাকা ফেরত দিতে হবে। ফ্রেশ সিলেকশন প্রসেসে তাঁরা বসতে পারবেন না।
কত জন তাহলে এই বেতন ফেরত দেওয়ার তালিকার মধ্যে রয়েছেন?
এসসিসি-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংখ্যাটা ৫ হাজার ৪৮৫ জন। প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও যারা চাকরি পেয়েছেন, যারা সাদা খাতা জমা দিয়ে কিংবা ওএমআর শিটে নম্বর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সমস্ত বেতন ফেরত দিতে হবে। সঙ্গে গুনতে হবে সুদের টাকাও। সব মিলিয়ে তা মোটা অঙ্ক দাঁড়াবে। তবে উল্লেখ্য, এই তালিকা কেবল এসসিসি-র তরফে দেওয়া হয়েছে। এরপর বোর্ড ও রাজ্যের তরফেও আলাদা আলাদা করে তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাই সংখ্যাটা কত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনামা সামনে আসলে সংখ্যাটা স্পষ্ট হবে। তবে বিশিষ্ট আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, সংখ্যাটা পাঁচ হাজারের কম হবে না।
হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, বেআইনিভাবে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, ১২ শতাংশ সুদে টাকা ফেরত দেবেন তাঁরা। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি-তে বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে এই টাকা ফেরাতে হবে। সেটাই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
যা খবর, নবম দশমে চাকরির ক্ষেত্রে একজন ৪০ হাজারের কম বেশি মাইনে পান। এটা তাঁর স্টার্টিং স্যালারি। ২০১৯ থেকে বেতন পেলে ২০২৪-এর মার্চ অবধি সেটা প্রায় ২৪ লক্ষের কাছাকাছি। এরপর বেতন বাড়তেও পারে। সেক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরও বেশি।
একাদশ-দ্বাদশের ক্ষেত্রে স্টার্টিং স্যালারি মোটামুটি ৪৪ হাজারের আশেপাশে। এই হিসাবে এগোলে ২০২৪ অবধি প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা বেতন হবে ওই শিক্ষকের। এরপর টাকা বাড়লে বাড়বে মোটের পরিমাণও। উল্লেখ্য, ২০২৪ সাল পর্যন্তই ধরা হচ্ছে, কারণ হাইকোর্ট গত বছরেই এই মামলায় বেতন ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিল।
গ্রুপ সির ক্ষেত্রে চাকরির একেবারে শুরুতে একজন ২৬-২৭ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেন। তাঁদের বেতন বৃদ্ধি হয়। স্টার্টিং স্যালারি ধরে এগোলে মোটামুটি ২০২৪ অবধি ১৬ লক্ষর টাকার আশেপাশে হবে। গ্রুপ ডির ক্ষেত্রে শুরু ১৯ হাজার টাকা ধরলে, ২০২৪ অবধি তা ১১ লক্ষের মতো হয়। এরপর টাকা বাড়লে বাড়বে মোটের পরিমাণও। অর্থাৎ কয়েক লক্ষ টাকা ফেরাতে হবে এই চাকরিহারাদের।





