TMC-Congress: হিমাচলে কংগ্রেসের সাফল্যকে কি ‘খাটো’ করছে তৃণমূল? ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য কুণালের

Himachal Pradesh Election Results: হিমাচলে কংগ্রেসের জয়কেও ঈষৎ কটাক্ষের সুরেই ব্যাখ্যা করলেন কুণাল। বললেন, হিমাচলে মানুষ যেভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখিয়ে ছিল, তাতে কংগ্রেসের আরও ভাল ফল করা উচিত ছিল।

TMC-Congress: হিমাচলে কংগ্রেসের সাফল্যকে কি 'খাটো' করছে তৃণমূল? ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য কুণালের
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 08, 2022 | 6:35 PM

কলকাতা: গুজরাটে বিজেপির একতরফা জয় হলেও, মোদী-ভূমে বেশ কয়েকটি আসন নিজেদের ঝুলিতে রেখেছে কংগ্রেস। খাতা খুলতে পেরেছে আম আদমি পার্টিও। আর হিমাচল প্রদেশে বিজেপিকে কার্যত পর্যুদস্ত করে ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস ভাল ফল করতেই তাদের সাফল্যকে ‘খাটো’ করে দেখানোর প্রক্রিয়া শুরু ঘাসফুল শিবিরে। তৃণমূল (Trinamool Congress) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এদিন বললেন, গুজরাটে কংগ্রেস পারেনি তাই বিজেপি স্যুইপ করেছে। তাঁর সাফ কথা, ‘গুজরাটে বিজেপি জেতেনি, গুজরাটে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে।’ আবার হিমাচলে কংগ্রেসের জয়কেও ঈষৎ কটাক্ষের সুরেই ব্যাখ্যা করলেন কুণাল। বললেন, হিমাচলে মানুষ যেভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখিয়ে ছিল, তাতে কংগ্রেসের আরও ভাল ফল করা উচিত ছিল।

এদিকে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দিল্লির পুরনিগম ভোটের পর আম আদমি পার্টিকে শুভেচ্ছা জানাল না তৃণমূল। আবার এক ধাপ এগিয়ে আজ কুণাল ঘোষ বলেই ফেললেন, জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রশ্নে মমতা বাকিদের থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে। নাম না করে খোঁচা দিলেন রাহুলকেও। বললেন, ‘কথা না বলে হঠাৎ পদযাত্রার ডাক দিলে জোট হয় না।’ অর্থাৎ কংগ্রেস নেতৃত্ব নিয়ে নিজেদের রক্ষণশীল অবস্থানেই অটুট থাকল তৃণমূল। কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক বরাবরই বেশ নাতিশীতোষ্ণ।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করেন, রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে তৃণমূলের খানিক না-পসন্দ ব্যাপার রয়েছে। অর্থাৎ, কংগ্রেসে রাজি থাকলেও রাহুলের নেতৃত্বে আপত্তি। অবস্থান খানিকটা এমনই বলে মনে করেন রাজনীতির কারবারিরা। কিন্তু এবারের নির্বাচনের পর যখন বিভিন্ন পকেটে বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলি নিজেদের অবস্থানের জানান দিচ্ছে, ঠিক তখনই বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলির পরস্পর বিরোধিতার ছবিটাও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

যদি আম আদমি পার্টি কিম্বা কংগ্রেসকে তাদের জয়ের জন্য শুভেচ্ছা বার্তা জানাত তৃণমূল? তাহলে চিত্রটা কেমন হত? বলাই বাহুল্য, বিজেপি বিরোধী জোটের সমীকরণ নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যেত দেশ জুড়ে । অথচ, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীদের এক সুতোয় বাঁধার প্রক্রিয়া নিয়েও চাপানউতোর অব্যাহত থেকে যাচ্ছে। আর এই চাপানউতোরের সুফল বকলমে পেয়ে যেতে পারে বিজেপি শিবির। এমনটাই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।

প্রসঙ্গত, একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত লাইন ছিল অবিজেপি অকংগ্রেসী তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার। সেই লাইন একসময় বামেরাও নিয়েছিল। নয়ের দশকে সেই লাইন ধরে সাফল্যও এসেছিল জাতীয় রাজনীতিতে। সাম্প্রতিককালে বার বার প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে, কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে। তবে এবারে হিমাচল প্রদেশের ভোটের ফলে আবারও একবার প্রমাণ হল জাতীয় স্তরে কংগ্রেস আদৌ হারিয়ে যায়নি। বিজেপির থেকে হিমাচল ছিনিয়ে নিয়ে কংগ্রেসের এহেন ঘুরে দাঁড়ানোর দিনে তৃণমূল মুখপাত্রের মুখে এমন কটাক্ষ নিঃসন্দেহে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

অন্যদিকে গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশের ভোট লড়াইয়ে বিরোধীদের আরও জোটবদ্ধ লড়াই হলে ফলফলে কি আরও খানিক প্রভাব ফেলতে পারত বিরোধী দলগুলি? এমন প্রশ্নও ইতিমধ্যে ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কংগ্রেসের ও অন্যান্য শক্তিশালী বিজেপি বিরোধী দলগুলির জোট গড়ার বিষয়ে কি আরও একটু নমনীয় হওয়া উচিত ছিল না? ২০২৪ সালের মহারণের আগে এখনও বেশ কিছুটা সময় বাকি। এখন দেখার এই সময়ের মধ্যে বিরোধী রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেয়? এই চিড় কি আরও বড় হয়ে ফাটল দেখা দেবে? নাকি ঐক্যবদ্ধ জোটের পরিসর আরও মসৃণ হবে? সেই উত্তরের অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল।