Coal Smuggling Case: গরুর পর এবার কয়লা, কালীঘাটের বিনয় মিশ্রের নামে হুলিয়া জারি সিবিআইয়ের
Vinay Mishra: নিঃসন্দেহে এই হুলিয়া চাপ বাড়াল বিনয় মিশ্রের। সিবিআইয়ের দাবি, কয়লাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার ডান হাত ছিলেন বিনয় মিশ্র।
কলকাতা: গরু পাচারকাণ্ডে আগেই হুলিয়া জারি হয়েছিল বিনয় মিশ্রের নামে। এবার কয়লাকাণ্ডেও তাঁর নামে হুলিয়া জারি করল সিবিআই (CBI)। আসানসোলের সিবিআই আদালতে আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক হুলিয়া জারি করেন। একইসঙ্গে ২০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে বিনয়কে। এই সময়ের মধ্যে তিনি যদি আসানসোল সিবিআই আদালতে হাজির না হন তা হলে পরবর্তীতে তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিতে পারে আদালত। এর আগে গরু পাচারকাণ্ডেও এই ‘প্রভাবশালী’র নামে হুলিয়া জারি করা হয়েছিল। যদিও বিনয় মিশ্রের দাবি ছিল, তিনি এই মুহূর্তে ভারতের বাসিন্দা নন। দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াটুরের নাগরিকত্ব নিয়েছেন তিনি। যদিও তাতে বিশেষ সুবিধা হবে না বলেই সিবিআই সূত্রে দাবি। অন্যদিকে কয়লা পাচারকাণ্ডেও বিনয়ের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর পলাতকও ঘোষণা করেছিল আদালত। এবার জারি হল হুলিয়া। কোনও অভিযুক্তকে নাগালে পেতে তদন্তকারীরা হুলিয়া জারি করে।
তবে এই হুলিয়া জারির ক্ষেত্রে আগে আরও দু’টি ধাপ পেরোতে হয়। কারও বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ হাতে পাওয়ার পর তদন্তকারীরা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। যদি এই পরোয়ানা জারি করেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করা যায় সে ক্ষেত্রে পলাতক ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার একটা নির্দিষ্ট সময় পার করার পর অভিযুক্তকে নাগালে না পেলে আদালতের মাধ্যমে তদন্তকারীরা হুলিয়া জারি করে। এই হুলিয়া জারির পরও একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। বিনয় মিশ্রের ক্ষেত্রে ২০ জুন অবধি সময় দেওয়া হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির পরও তিনি যদি ধরা না দেন সেক্ষেত্রে এর পরের ধাপ হবে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা। আদালত সেই নির্দেশ দেবে। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত যদি বিদেশে গা ঢাকা দেন, সেক্ষেত্রে রেড কর্নার নোটিস জারি করা হবে।
আপাতত হুলিয়া জারি করা হয়েছে বিনয় মিশ্রের নামে। এবার সেই হুলিয়ার প্রচার শুরু করল সিবিআই। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপণ দেওয়ার পাশাপাশি কালীঘাট এলাকাতে এই নোটিস পোস্টার আকারে দেওয়া হয়েছে। হুলিয়ায় অভিযুক্তের নাম, ঠিকানা, ছবি, তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, কোন ধারায় মামলা রয়েছে সমস্ত কিছু থাকে। আদালতের সেই নির্দেশ কপি বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারিংয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। সিবিআই সেই প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে। কালীঘাট, রাসবিহারী এভিনিউ-সহ বিনয় মিশ্রের যে সমস্ত জায়গায় বাড়ি রয়েছে সে সব এলাকায় এই পোস্টার দেওয়া হচ্ছে।
দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজ থেকে অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করেন বিনয় মিশ্র। পাশাপাশি এলাকায় টিউশন পড়াতেন। কোটিপতি ব্যবসায়ীর বাড়ির ছেলে মেয়েদের অঙ্ক করাতে শুরু করেন বিনয়। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, এই অঙ্কের টিউশন করানোর সূত্র ধরেই এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় হয় বিনয়ের। সেখান থেকেই কয়লার কালো পথে হাঁটা শুরু। প্রসঙ্গত, সিবিআই এই ঘটনার তদন্তে নেমে যে কেস ডায়েরি তৈরি করেছিল, সেখানে বিনয়ের পরিচিতি ছিল রাজ্যের একজন প্রথম সারির নেতা এবং কয়লা পাচার চক্রের এক পাণ্ডার ‘প্রটেক্টর’ হিসাবে।
নিঃসন্দেহে এই হুলিয়া চাপ বাড়াল বিনয় মিশ্রের। সিবিআইয়ের দাবি, কয়লাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার ডান হাত ছিলেন বিনয় মিশ্র। অভিযোগ, যত প্রভাবশালীর কাছে লালার ‘কালো টাকা’ পৌঁছত, তাঁর লেনদেনের ভার ছিল বিনয়ের হাতে। বিশেষ করে কলকাতার যে সমস্ত প্রভাবশালীদের কাছে কয়লার টাকা যেত বলে অভিযোগ, তা দেওয়ার ভার বিনয় মিশ্রেরই ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে বিনয় নিজের বিভিন্ন ভুয়ো ব্যবসায়ও এই টাকা খাটাতেন বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই ইডি রাসবিহারীতে বিনয় মিশ্রের বাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে। সূত্রের খবর, বাড়ির মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। আরও যে সব জায়গায় বাড়ি রয়েছে পরবর্তীতে আদালত নির্দেশ দিলে তাও বাজেয়াপ্ত করতে পারে তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: Weather Update West bengal: জুড়াল দহনজ্বালা, স্বস্তির ঝড়বৃষ্টি কতদিন, জানাল হাওয়া অফিস