মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া ভাষণের খসড়া ‘অসাংবিধানিক’, বিধানসভায় পাঠ করতে নারাজ রাজ্যপাল

Governor Jagdeep Dhankhar: আগামী ২ জুলাই বিধানসভায় অধিবেশন বসছে। সেই অধিবেশনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার কথা।

মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া ভাষণের খসড়া 'অসাংবিধানিক', বিধানসভায় পাঠ করতে নারাজ রাজ্যপাল
ছবি- PTI
Follow Us:
| Updated on: Jun 28, 2021 | 10:31 PM

কলকাতা: ‘রাজ্যপালের নাম রয়েছে জৈন হাওয়ালার চার্জশিটে।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিস্ফোরক অভিযোগের পরই নতুন করে সপ্তমে উঠেছে রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকারের বিরোধ। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সোজাসুজি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানায় নিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। দু’জনের এই বিবাদের পত্তন ঠিক কোন জায়গা থেকে, সোমবার সেটাও খোলসা করেছেন রাজ্যপাল। একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভা অধিবেশনের জন্য রাজ্যের মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া ভাষণ তিনি পাঠ করবেন না। কারণ তাঁর মনে হয়েছে সেই খসড়া-ভাষণ সাংবিধানিক ‘মূল্যবোধের পরিপন্থী’।

নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর আগামী ২ জুলাই বিধানসভায় প্রথম অধিবেশন বসছে। সেই অধিবেশনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার কথা। রীতি অনুযায়ী, রাজ্যপাল কী ভাষণ দেবেন তা ঠিক করে দেয় রাজ্য সরকার। সূত্রে খবর, সেই মতো রাজ্য মন্ত্রিসভায় ভাষণের খসড়া পাস করে তা সোমবারই রাজ্য সরকার রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু, ভাষণের সেই খসড়া হাতে পাওয়ার পর তাতে যা লেখা ছিল তা সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে হয়নি রাজ্যপালের। যে কারণে তিনি একটি চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

কী লেখা ছিল সেই খসড়ায়? রাজ্যপালের বক্তব্য অনুযায়ী, “আমার মনে হল খসড়ায় এমন কিছু কথা লেখা রয়েছে যা নিয়ে আমার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। তাই আমি একটি চিঠি দেই তাঁকে।” সেই চিঠিতে তিনি লেখেন, “খসড়ায় আমার নজরে এমন কিছু বিষয় এসেছে যেগুলো নিয়ে আমি আগামিকাল আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে চাই।” রাজ্যপালের দাবি, এই চিঠি পাওয়ার পরই তাঁকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ফোন করে বলেন, ইতিমধ্যেই ওই খসড়া মন্ত্রিসভা থেকে পাস হয়ে গিয়েছে। যদিও রাজ্যপালের দাবি, ভাষণের খসড়ায় এমন কিছু বক্তব্য রয়েছে যা অবাস্তব।

আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: ডায়েরির পাতার ভাঁজে আডবাণী, যশবন্তদের নাম, কী সেই ‘হাওয়ালা-জৈন’ মামলা?

রাজ্যপালের দাবি অনুযায়ী, ঠিক এই ফোনালাপের পরই সাংবাদিক বৈঠকে বসে জৈন হাওয়ালা মামলা ‘অসত্য’ অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ধনখড় সাফ জানান, খসড়ায় যদি এমন কিছু লেখা হয় যা সংবিধানের পরিপন্থী, তবে তিনি তা পাঠ করবেন না। যদিও খসড়ায় কী এমন লেখা হয়েছে যা তিনি সংবিধান-বিরোধী মনে বলে মনে করছেন, সেটা প্রকাশ্যে জানাননি রাজ্যপাল। সাধারণত, রাজ্যের মন্ত্রিসভা যে ভাষণের খসড়া রাজ্যপালের কাছে পাঠান রাজ্যপালকে সেটাই পাঠ করতে হয়। কিন্তু, রাজ্যপাল সোমবার যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তাতে তিনি অন্য পথেই হাঁটতে পারেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় স্পষ্ট করেন, “ভাষণে যদি যা খুশি লিখে দেওয়া হয় যা সংবিধানের অনুরূপ নয়, তাহলে আমি কি তা পাঠ করতে পারি? আমি বলতে চাই না কী কী কথা লেখা হয়ে থাকতে পারে। প্রত্যেকটি ভাষণ সাংবিধানিক মূল্যবোধের উপর দাঁড়িয়ে তৈরি করতে হয়।”

আরও পড়ুন: ‘জৈন হাওয়ালা মামলার চার্জশিটে আমার নাম নয়, যশবন্ত সিনহার নাম ছিল’, পাল্টা বিস্ফোরক ধনখড়