West Bengal Panchayat Election 2023: মনোনয়নের প্রথম দিনই ‘নাকানিচোবানি’, বিরোধীদের প্রশ্ন দায় কার?
West Bengal Panchayat Election 2023: প্রথম দিন বহু জায়গায় দেওয়া যায়নি মনোনয়ন। মহা ফাঁপরে ব্লক প্রশাসন। ছন্নছাড়া দশার দায় কার? প্রস্তুতি ছাড়াই কেন মনোনয়নের দিন ঘোষণা?
কলকাতা: মনোনয়নের শুরুতেই ছন্নছাড়া দশা। সামনে এল প্রস্তুতির ফাঁকফোকর। সূত্রের খবর, প্রথম দিন বহু জায়গায় দেওয়া যায়নি মনোনয়ন। মহা ফাঁপরে ব্লক প্রশাসন। অশান্তির মাঝেই বিরোধীরা সোচ্চার হন। প্রশ্ন তোলেন, এই ছন্নছাড়া দশার দায় কার? প্রস্তুতি ছাড়াই কেন মনোনয়নের দিন ঘোষণা? মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রথম দিন, সোমবার সকাল থেকে ঘটনাপ্রবাহ যদি দেখা যায়, তাহলে সব থেকে উল্লেখ্যযোগ্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের পর্যবেক্ষণ। তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করতে হবে, আর তার গোটা দায়িত্বই নির্বাচন কমিশনের। এবং সেই দায়িত্ব নিতে হবে মনোনয়ন পেশের সময় থেকেই। কিন্তু বেলা যত গড়িয়েছে, ততই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মনোনয়ন ঘিরে অশান্তির খবর এসেছে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য বাঁকুড়ায় বিজেপি বিধায়কের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ঢোড়ারও অভিযোগ। বিজেপি বিধায়ককে হেনস্থা, গাড়ি ভাঙারও চেষ্টা রীতিমতো শোরগোল ফেলে দেয়। মুর্শিদাবাদের সালারে, ভরতপুরে সংঘর্ষ হয়। মুর্শিদাবাদের রানিনগরে সিপিএমকে মনোনয়নের ফর্মই তুলতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। উত্তরেও জলপাইগুড়িতে অশান্তি হয়।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যখন অশান্তির খবর আসতে শুরু করে, তখনই জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য পুলিশের ডিজি-র সঙ্গে। বৈঠকে স্থির হয় ফোকাস আপাতত মনোনয়ন। কোনওভাবে এখনই নির্বাচনকে তাঁরা ফোকাস করছেন না। বিশ্লেষকরা বলছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন এমনই একটা প্রক্রিয়া, যেখানে মনোনয়নকে ঘিরেই সব থেকে বেশি অশান্তি খবর আসে।
বৈঠকের একটি দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মনোনয়নের সময়সীমা যাতে কোনওভাবে বাড়ানো যায়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারও এই বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল। বৈঠকে খোদ তিনিই বলেছেন, “মনোনয়ন সবে শুরু হয়েছে। দু’দিন যাক। মনে হয় সময় বাড়াতে হবে। দেখব। আইনে সম্ভব হলে আমরা সময় বাড়াব।” হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণও ছিল, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে মনোনয়ন থেকে ভোটগ্রহণ পুরো সময়টি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে করা হচ্ছে। মনোনয়নে সময় খুবই কম দেওয়া হয়েছে। ভোটের নির্ঘণ্ট নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা উচিত।” সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্ন করতে আপাতত রাজ্য পুলিশের ওপরেই আস্থা রাখছে পুলিশ। বাড়তি পুলিশেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মনোনয়নের ক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য। প্রথম থেকেই বিরোধীরা দাবি করেছিলেন, যদি মনোনয়নপত্র ব্লক অফিসের বদলে এসডিও অফিসে দেওয়া হয়, বা জেলা ম্যাজিস্ট্র্যাটের অফিসে দেওয়া হয়, নিরাপত্তা অনেক বেশি থাকবে। সেরকম কোনও সিদ্ধান্ত আদৌ নেওয়া হবে কিনা, সেটা দেখার। তবে মনোনয়নের প্রথম দিন যা ‘ট্রেলর’ দেখল বাংলা, তা নিয়েই সরব বিরোধীরা। শনি ও রবিবার ছুটির দিন। সোমবার থেকে ফের মনোনয়ন জমা। নতুন করে কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় নাকি পরিস্থিতি সামলে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হবে কমিশন, সেটাই দেখার।