চলে গেলেন ‘দাদাজি’, রেখে গেলেন ২০০০ কোটির সাম্রাজ্য

দৈনিক ২০ টাকা আয় থেকে সম্পত্তি ২০০০ কোটি টাকায় নিয়ে যান কেবল পরিশ্রম ও একনিষ্ঠতার মাধ্যমে। সদা হাস্যমুখ ধর্মপাল গুলাটি অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনেই বিশ্বাস করতেন।

| Updated on: Dec 03, 2020 | 1:58 PM
TV9 বাংলা ডিজিটাল: "আসলি মশলা সচ সচ, এমডিএইচ এমডিএইচ"-বিজ্ঞাপনে আর দেখা যাবে না সেই মিষ্টি হাসি মুখের বৃদ্ধ দাদাজিকে। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে নয়া দিল্লির এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন এমডিএইচ মশলা (MDH Masala) কস্পানির কর্ণধার ধর্মপাল গুলাটি (Dharampal Gulati)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।

TV9 বাংলা ডিজিটাল: "আসলি মশলা সচ সচ, এমডিএইচ এমডিএইচ"-বিজ্ঞাপনে আর দেখা যাবে না সেই মিষ্টি হাসি মুখের বৃদ্ধ দাদাজিকে। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে নয়া দিল্লির এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন এমডিএইচ মশলা (MDH Masala) কস্পানির কর্ণধার ধর্মপাল গুলাটি (Dharampal Gulati)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।

1 / 12
২০০০ কোটি টাকার বিপুল সাম্রাজ্য, বার্ষিক ২১ কোটি টাকা বেতন-এই তথ্যগুলি জানলে ইর্ষা হওয়াটাই স্বাভাবিক, তবে এই অগাধ সম্পদের পিছনে পরিশ্রমের কথা অনেকেই জানেন না।

২০০০ কোটি টাকার বিপুল সাম্রাজ্য, বার্ষিক ২১ কোটি টাকা বেতন-এই তথ্যগুলি জানলে ইর্ষা হওয়াটাই স্বাভাবিক, তবে এই অগাধ সম্পদের পিছনে পরিশ্রমের কথা অনেকেই জানেন না।

2 / 12
১৯২৩ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তান (Pakistan)-র শিয়ালকোটে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মপাল গুলাটি। তাঁর জন্মের আগে থেকেই 'মহশিয়ান দি হাট্টি' নামে একটি মশলার দোকান চালাতেন তাঁর বাবা। তিনি ১৯১৯ সালে তৈরি করেন এই মশলার দোকান।

১৯২৩ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তান (Pakistan)-র শিয়ালকোটে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মপাল গুলাটি। তাঁর জন্মের আগে থেকেই 'মহশিয়ান দি হাট্টি' নামে একটি মশলার দোকান চালাতেন তাঁর বাবা। তিনি ১৯১৯ সালে তৈরি করেন এই মশলার দোকান।

3 / 12
দেশভাগের যন্ত্রণা সয়ে ১৯৪৭ সালে ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন। আশ্রয় নেন অমৃতসরের একটি রিফিউজি ক্যাম্পে (Refugee Camp)। পরে কাজের খোঁজে সপরিবারে দিল্লিতে আসেন ধর্মপাল গুলাটি। সেখানে তাঁদের ঠাই হয় ভাইঝির বাড়িতে। সেখানে না ছিল জলের ব্যবস্থা, না বিদ্যুৎ। এমনকি শৌচালয়ও ছিল না সেই বাড়িতে।

দেশভাগের যন্ত্রণা সয়ে ১৯৪৭ সালে ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন। আশ্রয় নেন অমৃতসরের একটি রিফিউজি ক্যাম্পে (Refugee Camp)। পরে কাজের খোঁজে সপরিবারে দিল্লিতে আসেন ধর্মপাল গুলাটি। সেখানে তাঁদের ঠাই হয় ভাইঝির বাড়িতে। সেখানে না ছিল জলের ব্যবস্থা, না বিদ্যুৎ। এমনকি শৌচালয়ও ছিল না সেই বাড়িতে।

4 / 12
পঞ্চম শ্রেণীর গণ্ডিও যিনি পার করেননি, তাঁর হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি হল কীভাবে? নিজের জীবনীতে তিনি জানান, বাবার সঙ্গে ব্যবসায় যোগ দেওয়ার আগে রাস্তার ধারে মেহেন্দি বিক্রি করতেন তিনি, দৈনিক আয় ছিল ২০ টাকা।

পঞ্চম শ্রেণীর গণ্ডিও যিনি পার করেননি, তাঁর হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি হল কীভাবে? নিজের জীবনীতে তিনি জানান, বাবার সঙ্গে ব্যবসায় যোগ দেওয়ার আগে রাস্তার ধারে মেহেন্দি বিক্রি করতেন তিনি, দৈনিক আয় ছিল ২০ টাকা।

5 / 12
সংসারের হাল টানতে ধর্মপাল গুলাটির বাবা তাঁর হাতে ১৫০০ টাকা তুলে দেন। সেই টাকা থেকে ৬৫০ টাকা দিয়ে তিনি 'টাঙ্গা' (ঘোড়ার গাড়ি) কেনেন। কনৌট প্লেস থেকে করোল বাগ অবধি টাঙ্গা চালালেও প্রতিনিয়ত যাত্রীদের অপমান সহ্য না করতে পেরে একদিন বিক্রি করে দেন টাঙ্গা।

সংসারের হাল টানতে ধর্মপাল গুলাটির বাবা তাঁর হাতে ১৫০০ টাকা তুলে দেন। সেই টাকা থেকে ৬৫০ টাকা দিয়ে তিনি 'টাঙ্গা' (ঘোড়ার গাড়ি) কেনেন। কনৌট প্লেস থেকে করোল বাগ অবধি টাঙ্গা চালালেও প্রতিনিয়ত যাত্রীদের অপমান সহ্য না করতে পেরে একদিন বিক্রি করে দেন টাঙ্গা।

6 / 12
পারিবারিক ব্যবসাতেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। টাঙ্গা বিক্রির টাকা দিয়ে ১৯৪৮ সালে করোল বাগেই শুরু করেন মশলার ব্যবসা। ফের যাত্রা শুরু করে 'মহশিয়ান দি হাট্টি', সংক্ষেপে এমডিএইচ।

পারিবারিক ব্যবসাতেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। টাঙ্গা বিক্রির টাকা দিয়ে ১৯৪৮ সালে করোল বাগেই শুরু করেন মশলার ব্যবসা। ফের যাত্রা শুরু করে 'মহশিয়ান দি হাট্টি', সংক্ষেপে এমডিএইচ।

7 / 12
প্রথম দোকানের সাফল্যের পর ১৯৫৩ সালে চাঁদনি চকে দ্বিতীয় দোকান খোলেন। ১৯৫৪ সালে করোল বাগে তৈরি করেন 'রুপক স্টোর'। এটিই ভারতের প্রথম আধুনিক মশলার দোকান ছিল। ১৯৫৯ সালে দিল্লির কীর্তিনগরে জমি কিনে নিজস্ব মশলার ফ্যাক্টরি শুরু করেন। এরপর আর ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে।

প্রথম দোকানের সাফল্যের পর ১৯৫৩ সালে চাঁদনি চকে দ্বিতীয় দোকান খোলেন। ১৯৫৪ সালে করোল বাগে তৈরি করেন 'রুপক স্টোর'। এটিই ভারতের প্রথম আধুনিক মশলার দোকান ছিল। ১৯৫৯ সালে দিল্লির কীর্তিনগরে জমি কিনে নিজস্ব মশলার ফ্যাক্টরি শুরু করেন। এরপর আর ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে।

8 / 12
টিভির পর্দায় 'দাদাজি' নামে পরিচিত ধর্মপালের অভিনয় জগতে প্রবেশ কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়াই ঘটেছিল।  বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ে এক অভিনেতা অনুপস্থিত থাকায় তিনিই বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন। সেই থেকেই এমডিএইচ-র প্রতিটি বিজ্ঞাপনে কোনও তারকা নয়, নিজেই অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন।

টিভির পর্দায় 'দাদাজি' নামে পরিচিত ধর্মপালের অভিনয় জগতে প্রবেশ কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়াই ঘটেছিল। বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ে এক অভিনেতা অনুপস্থিত থাকায় তিনিই বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন। সেই থেকেই এমডিএইচ-র প্রতিটি বিজ্ঞাপনে কোনও তারকা নয়, নিজেই অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন।

9 / 12
বর্তমানে ৬০ ধরনের বেশি মশলা তৈরি করে এই সংস্থা। শুধু দেশে নয়, সুইজ়্যারল্যান্ড, আমেরিকা, জাপান, কানাডা, ইউরোপ, সৌদি আরবের মতো দেশ-মহাদেশেও রপ্তানি করা হয় এমডিএইচ-র মশলা।

বর্তমানে ৬০ ধরনের বেশি মশলা তৈরি করে এই সংস্থা। শুধু দেশে নয়, সুইজ়্যারল্যান্ড, আমেরিকা, জাপান, কানাডা, ইউরোপ, সৌদি আরবের মতো দেশ-মহাদেশেও রপ্তানি করা হয় এমডিএইচ-র মশলা।

10 / 12
সম্পত্তির পরিমাণ বাড়তেই তিনি নিজের বাবার নামে 'মহাশয় চুনীলাল চ্যারিটেবল ট্রাস্ট' তৈরি করেন। ২৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল ছাড়াও দিল্লির চার জায়গায় ২০টি স্কুল খোলেন ও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সাহায্য করেন।

সম্পত্তির পরিমাণ বাড়তেই তিনি নিজের বাবার নামে 'মহাশয় চুনীলাল চ্যারিটেবল ট্রাস্ট' তৈরি করেন। ২৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল ছাড়াও দিল্লির চার জায়গায় ২০টি স্কুল খোলেন ও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সাহায্য করেন।

11 / 12
২০১৭ সালে 'পদ্মভূষণ' (Padma Bhushan) সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে।

২০১৭ সালে 'পদ্মভূষণ' (Padma Bhushan) সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে।

12 / 12
Follow Us: