স্নেহার নেতৃত্বে মানুষকে আরও সুন্দর করে তুলছে ‘মিস মেডেলিন’
স্নেহার জীবনে কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না! বলা যায়, ভাগ্যের ফেরেই স্নেহা বর্তমানে নিজেকে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। স্নেহা পেশায় মনস্তত্ববিদ
নিজেকে সুন্দর দেখাতে কে না চায়? জেল্লাদার ত্বক, মখমলে রেশমের চুল, আরও কত কী – যে রূপের বাহার নিমেষে কেড়ে নিতে পারে যে কারও মন! মানুষকে সেই সুন্দর দেখানোর তাগিদেই বাজার ছেয়ে গিয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ও রূপচর্চার সামগ্রীতে। এমন বাজারে দাঁড়িয়েও নিজের মতো করে ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন স্নেহা ভট্টাচার্য্য।
তবে স্নেহার জীবনে কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না! বলা যায়, ভাগ্যের ফেরেই স্নেহা বর্তমানে নিজেকে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। স্নেহা পেশায় মনস্তত্ববিদ। মানুষের মন বুঝেই সময় কাটত তাঁর। খানিকটা শখের বশেই শুরু করেছিলেন সাবান তৈরি। কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষ সেই সাবান পছন্দ করতে শুরু করেন। বিভিন্ন সময়ে খোঁজ আসত স্নেহার সাবানের।
এ ভাবেই চলতে থাকে অনেকগুলো দিন। স্নেহা সিদ্ধান্ত নেন, এই বিষয়ের আরও গভীরে যাবেন। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। ফর্মুলা বোটানিকা নিয়ে ডিপ্লোমায় ভর্তি হন স্নেহা। ধীরে ধীরে ব্যবসাও শুরু করেন। তৈরি করেন নিজের ব্র্যান্ড — মিস মেডেলিন। স্নেহা বিশ্বাস করেন যে ব্যক্তি ধীর, বুদ্ধিমান এবং লক্ষ্যে স্থির, তার জয় অবশ্যম্ভাবী। তাই মিস মেডেলিন তাদের প্রতিটি পণ্যই অত্যন্ত বিবেচনা করে তৈরি করে। যা আখেরে সংশ্লিষ্ট পণ্যটির কার্যকারিতা বাড়াতেও সাহায্য করে। পথ্যের মতো সেই পণ্যকে গ্রহণ করে সাধারণ মানুষ।
মিস মেডেলিন-এর মূল হাতিয়ার হল ফমূর্লা এবং ফলাফলভিত্তিক ব্যক্তিগত পণ্য। সেই সঙ্গে নজরকাড়া দাম এবং আকর্ষণীয় প্যাকেজিং তো রয়েছেই। আর সেই কারণেই মাত্র ৪ বছরেরও কম সময়ে কলকাতার অন্যতম সেরা হ্যান্ডমেড ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে তারা।
জীবনের এই পর্যায়ে পৌঁছে স্নেহা নিজেকে মেলে ধরেছেন। চেষ্টা করছেন আরও নতুন পণ্য তৈরি করার। খুব ছোট বয়সে তাঁকে ছেড়ে চলে যান মা। তবুও স্নেহার বিশ্বাস, মায়ের আশীর্বাদেই স্নেহা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছেন। তিনি যেন স্নেহার সঙ্গেই রয়েছেন। সেই সঙ্গে স্নেহার ব্যবসায় সব সময় পাশে ছিলেন শাশুড়ি সুনীতা মহাশেঠ।
স্নেহার সুদক্ষ নেতৃত্বে অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় নিজেকে আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে মিস মেডেলিন। গতে বাধা ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে গ্রাহকদের পছন্দের সামগ্রী উপহার দিচ্ছে তারা। স্নেহা জানাচ্ছেন, “মিস মেডেলিন হল সেই ব্র্যান্ড, যারা ত্বকের যত্নে লিঙ্গ নিরপেক্ষতার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে নিয়েছে। কারণ সমাজ যখন প্রগতির দিকে এগোচ্ছে, তখন চুল ও ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে কোনও একটি নির্দিষ্ট লিঙ্গকে গুরুত্ব দেওয়া অপ্রাসঙ্গিক।” পাশাপাশি রয়েছে মিস মেডেলিনের নিজস্ব বড় একটি দলও। যারা মিস মেডেলিনকে অন্য এক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।
কোন জাদুতে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে মিস মেডেলিন:
- ফলাফলভিত্তিক পণ্য উৎপাদন
- সাধ্যের মধ্যে দাম
- প্রতি সপ্তাহে নতুন উৎপাদন
- বিচক্ষণ এবং টার্গেট ওরিয়েন্টেড ফর্মুলা
- নজরকাড়া প্যাকেজিং
সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কোন কোন পণ্য?
সিরাম, টোনার, পাউডার ক্লিনজার, ফেস মাস্ক এবং হেয়ার টনিক
ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছেন স্নেহা। নিজস্ব পরিচিতি তৈরি করেছে মিস মেডেলিন। তবে অনেকটা পথ চলা এখনও বাকি। এই প্রসঙ্গে স্নেহা বলেন, “আমরা আরও গবেষণা ভিত্তিক প্রোডাক্ট তৈরি করতে চাই। যা আগামীদিনে গ্রাহকদের নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করবে।” পাশাপাশ প্যাকেজিং নিয়েও আরও বিশদে ভাবছেন স্নেহা। তিনি বলেন, “আমরা প্যাকেজিংয়ের জন্য পরিবেশ বান্ধব বিকল্প খুঁজছি। প্লাস্টিকের বোতলের অপচয় কমাতে আমরা ইতিমধ্যেই পাউডার আকারে বডি ওয়াশ তৈরির কাজ শুরু করেছি। আগামী দিনে আমরা আরও অনেকগুলি সমাধান নিয়ে আসতে পারব।”