India vs New Zealand: নিউজিল্যান্ডকে দুরমুশ করে যাত্রা শুরু রাহুল-রোহিত জুটির
ধোনির শহর রাঁচিতে জিতে সিরিজ পকেটে পুরেছিল ভারত। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শহরে নিয়মরক্ষার ম্যাচকেই মধুর বদলায় পাল্টে ফেলল রাহুল দ্রাবিড়ের টিম। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল নিউজিল্যান্ডকে।
অভিষেক সেনগুপ্ত
ভারত ১৮৪-৭ (২০ ওভারে) নিউজিল্যান্ড ১১১ (১৭.২ ওভারে)
মধুর প্রতিশোধ বললে কি ভুল হবে? একেবারেই না! যে টিমের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক কালে শুধুই হারের খতিয়ান, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যে টিমের কাছে হেরে ছিটকে যাওয়া, তাদের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে বদলা নিল রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) টিম। ধোনির শহর রাঁচিতে জিতে সিরিজ পকেটে পুরেছিল ভারত। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শহরে নিয়মরক্ষার ম্যাচকেই মধুর বদলায় পাল্টে ফেলল রাহুল দ্রাবিড়ের টিম। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল নিউজিল্যান্ডকে (New Zealand)।
দু’বছর আগে ইডেন গার্ডেন্সে শেষবার হয়েছিল কোনও ক্রিকেট ম্যাচ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেই গোলাপি টেস্টের পর আবার ক্রিকেট ফিরল কলকাতায়। উপচে পড়া গ্যালারির সামনে সেই ম্যাচেই কিউয়ি-বধের কোলাজ সাজিয়ে ফেললেন অক্ষর-হর্ষল প্যাটেলরা। রাতের ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা কখনওই সহজ হয় না। ১৮৫ রানের লক্ষ্য থাকলে তো আরও কঠিন। ভারতের ১৮৪-৭ এর জবাবে ১১১ রানে শেষ হয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। ৭৩ রানে জয় পেল রোহিতের টিম। ক্যাপ্টেন হিসেবে এর থেকে ভালো অভিষেক আর কী হতে পারত!
That's that from the Eden Gardens as #TeamIndia win by 73 runs and clinch the series 3-0.
Scorecard – https://t.co/MTGHRx2llF #INDvNZ @Paytm pic.twitter.com/TwN622SPAz
— BCCI (@BCCI) November 21, 2021
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তটাই ম্যাচের ভাগ্য মোটামুটি ঠিক করে দিয়েছিল। লোকেশ রাহুল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়। রাহুলের বদলে খেলেন ঈশান কিষাণ। অশ্বিনের পরিবর্তে যুজবেন্দ্র চাহাল। রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন ঈশান। ২১ বলে ২৯ করে ফিরে যান তিনি। কিন্তু ক্যআপ্টেন রোহিত অনবদ্য। জয়পুরে প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৪৮। রাঁচিতে তাঁর ব্যাটে ৫৫ রানের ঝলক ছিল। আর ইডেনে, ৩১ বলে ৫৬ করে গেলেন। ৩টে ছয় ও ৫টা চার দিয়ে সাজিয়েছেন ইনিংস। সিরিজের সেরা তিনি ছাড়া আর কে-ই বা হতে পারতেন।
ঈশান যখন আউট হলেন, স্কোরবোর্ডে তখন ১-৬৯। সেখান থেকে মিচেল স্যান্টনারের ভেল্কি শুরু। নিউজিল্যান্ডের বাঁ হাতি স্পিনার প্রথম ওভারে বল করতে এসে ফিরিয়ে দিলেন ঈশান ও সূর্যকুমার যাদবকে। সেট হওয়ার আগেই তাঁর শিকার ঋষভ পন্থও (৪)। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন স্যান্টনার। ঈশ সোধির বলে রোহিত আউট হতেই চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। সেখান থেকে টিমকে আবার টেনে তোলেন শ্রেয়স ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার। শ্রেয়স করেন ২৫, ভেঙ্কটেশের ব্যাট থেকে এল ২০। সেখান থেকে ভারতকে অবশ্য বড় রানে নিয়ে গেলেন দুই পেসার। হর্ষল প্যাটেল ১১ বলে ১৮ করে গেলেন। আর দীপক চাহার ৮ বলে নট আউট ২১।
কেন উইলিয়ামসন নিজেকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে সরিয়ে নেওয়ায় ব্ল্যাক ক্যাপদের সেই গভীরতা নেই। বিশ্বকাপে চমৎকার পারফর্ম করা ড্যারেল মিচেলও সে ভাবে খেলতে পারছেন না। যা খেলছেন মার্টিন গাপ্টিল। ৩৬ বলে তাঁর ৫১ রানের ইনিংসটা বাদ দিলে বাকি আর কেউই খেলতে পারলেন না। স্যান্টনারের পাল্টা হিসেবে নিউজিল্যান্ডকে ভাঙলেন ভারতের বাঁ হাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল। মিচেল (৫), মার্ক চ্যাপম্যান (০), গ্লেন ফিলিপসকে (০) ফেরালেন পর পর। তার পর আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব ছিল না কিউয়িদের। ৩ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা অক্ষরই।
এই প্রথম ভারতীয় টিমে একই পদবীর একজোড়া ক্রিকেটারকে দেখা গেল। অক্ষর প্যাটেল-হর্ষল প্যাটেল, শ্রেয়স আইয়ার-ভেঙ্কটেশ আইয়ার। পদবীতে মিল যেমন পারফরম্যান্সেও কেউ পিছিয়ে নেই কারও থেকে। তরুণ প্রজন্মের ভারত স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে দিল। রাহুল-রোহিত জুটির এই ম্যাজিকটাই তো দেখতে চেয়েছিল জয়পুর, রাঁচি, ইডেন। আর সেই সঙ্গে সারা দেশ!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১৮৪-৭ (রোহিত ৫৬, ঈশান ২৯, শ্রেয়স ২৫, স্যান্টনার ৩-২৭, সোধি ১-৩১, বোল্ট ১-৩১)। নিউজিল্যান্ড (গাপ্টিল ৫১, শিফার্ট ১৭, অক্ষর ৩-৯, হর্ষল ২-২৬, চাহাল ১-২৬)।