Mohammedan Sporting: বিরিয়ানির স্বাদে-গন্ধে মজেছেন সমর্থকদের ‘নিকোলদা’

জোকারের থেকে কী শিখেছেন? সাদা-কালোর সার্বিয়ান প্লে মেকার বললেন, 'ওর থেকে তো অনেক কিছুই শেখার। তবে নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম-এই দুইয়ের সংমিশ্রণ থাকলে রোখা কঠিন। আমাদের দেশে ওকে 'লায়ন' বলে ডাকা হয়। সিংহের মতো রাজকীয় মেজাজ থাকলে তবেই তো সব কিছু জয় করা সম্ভব।'

Mohammedan Sporting: বিরিয়ানির স্বাদে-গন্ধে মজেছেন সমর্থকদের 'নিকোলদা'
নিকোলা স্তোজানোভিচ। ছবি: টুইটার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 30, 2021 | 6:24 PM

কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়

প্রায় ৩ দশক আগে মোহনবাগান যখন নিয়ে এল কৃষ্ণাঙ্গকে, এক নতুন নামে চিনেছিল ময়দান— চিমাদা! দীপেন্দু বিশ্বাসের (Dipendu Biswas) সেই আদরের ডাকই আরও একবার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে ময়দানে— নিকোলদা!

ইনি নিকোলা স্তোজানোভিচ (Nikola Stojanovic)। বিদেশি যেমন ‘দাদা’য় আচ্ছন্ন, তেমনই ভেসে যাচ্ছেন বিরিয়ানির স্বাদে গন্ধে। হাসতে হাসতে ফোনের ওপার থেকে বললেন, ‘সার্বিয়ায় মাছের অভাব নেই। কিন্তু বিরিয়ানি, পৃথিবীর অনেক জায়গায় ঘুরেছি, কলকাতার এই জিনিসটা লা-জবাব।’

মাছ, মিষ্টি অ্যান্ড মোর-র মতো বলা যেতে পারে দাদা, বিরিয়ানি অ্যান্ড ফুটবলের ত্রিভূজে দাঁড়িয়ে নোভাক জকোভিচের দেশের ফুটবলার। সাদায়-কালোয় বর্ণময় নিকোলা স্তোজানোভিচ। এই মিডফিল্ডার কটা গোল করেছেন? সেই পরিসংখ্যানের দরকার নেই। এই নিকোলাকে ময়দান চিনতে শুরু করেছে গোল করানোর জন্য।

সার্বিয়ান সুপারস্টার নোভাক জকোভিচের (Novak Djokovic) সঙ্গে এক বারই দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁর এক বন্ধুর বন্ধু জোকার। সেই সুবাদেই বিশ্বের অন্যতম সেরা টেনিস সুপারস্টারের সঙ্গে দেখা করার সৌভাগ্য হয়েছিল। জোকারের থেকে কী শিখেছেন? সাদা-কালোর সার্বিয়ান প্লে মেকার বললেন, ‘ওর থেকে তো অনেক কিছুই শেখার। তবে নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম-এই দুইয়ের সংমিশ্রণ থাকলে রোখা কঠিন। আমাদের দেশে ওকে ‘লায়ন’ বলে ডাকা হয়। সিংহের মতো রাজকীয় মেজাজ থাকলে তবেই তো সব কিছু জয় করা সম্ভব।’

রবিবারের ফাইনালে মহমেডানের (Mohammedan Sporting) প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া (FC Goa)। পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই ডুরান্ড (Durand Cup) খেলতে এসেছেন এদু বেদিয়ারা। তাই চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে আইএসএলের (ISL) অন্যতম সেরা দলকে হারিয়েই খেতাব জিততে হবে। নিকোলা কিন্তু দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তাঁর কথায়, ‘মহমেডান সমর্থকদের জন্য চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। অনেক দিন এই ক্লাবে ট্রফি আসেনি। সেই খরা কাটাতে চাই। শুধু আমি একা নই, আমাদের পুরো দলই আমাদের শক্তি। সতীর্থদের পাশাপাশি কোচিং স্টাফ, ফিজিও, টিমের ডাক্তার সবাই আমরা একটা ইউনিট হয়ে কাজ করছি। এফসি গোয়াকে ফাইনালে হারাতে আমরা আমাদের সেরাটা উজাড় করে দেব। গ্যালারিতে আমাদের সমর্থকরা তো থাকবেই। ওটা আমাদের বাড়তি শক্তি।’

কলকাতায় এসে এখানকার সমর্থকদের আবেগ দেখে মজেছেন সার্বিয়ান তারকা ফুটবলার। নিকোলা বলেন, ‘সমর্থকদের ফুটবলপ্রেম দেখে আমি আরও উজ্জীবিত। আমার দেশে ফুটবল এবং বাস্কেটবলের জনপ্রিয়তা আছে। এখানকার মানুষের মধ্যেও ফুটবলের উন্মাদনা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি।’

কলকাতা লিগ এবং ডুরান্ডে ঝলক দেখানো নিকোলাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ফুটবলমহলও। দেশের এক নম্বর লিগ আইএসএলে খেলার হাতছানিও আসতে পারে তাঁর কাছে। তবে সেসব নিয়ে ভাবতে নারাজ এই সার্বিয়ান মিডিও। তিনি বলেন, ‘আইএসএল নিয়ে ভাবার কোনও জায়গা নেই। মহমেডানের ইতিহাস জেনেই এখানে খেলতে এসেছি। প্রথম লক্ষ্য, রবিবারের ফাইনাল জিতে দলকে ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন করানো। দ্বিতীয় লক্ষ্য, আই লিগ জেতানো।’

সতীর্থরাও মজেছেন নিকোলার খেলায়। পুরো দলের খেলাকে যেন একাই কন্ট্রোল করছেন। মাঠে আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন এই বিদেশি। মানুষ নিকোলাও সতীর্থদের অনেক কাছের হয়ে উঠেছেন। সার্বিয়ান ফুটবলারকে নিয়ে শেখ ফৈয়াজ যেমন বললেন, ‘খুব কম বিদেশিকে আমাদের সঙ্গে মিশে যেতে দেখেছি। তাঁর মধ্যে নিকোলা একজন। সোনি নর্ডিকে দেখেছিলাম এ রকম মিশে যেতে। একসঙ্গে আড্ডা দিতে। নিকোলা সে রকমই। ও খুব মিশুকে। আচমকাই ঘরে এসে আড্ডা মারতে শুরু করে দেয়।’

এই নিকোলাকে যদি ময়দানে প্রতিষ্ঠা পেতে হয়, শুধু ম্যাচ জেতালে হবে না। ট্রফি দিতে হবে। ডুরান্ডে খেতাব জয় থেকে আর মাত্র একধাপ দূরে মহমেডান। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় যুবভারতীতে একরাশ প্রত্যাশা নিয়ে ভিড় জমাবেন সাদা-কালো সমর্থকরা। তাঁদের মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্ব নিতে হবে নিকোলা স্তোজানোভিচকে।

আরও পড়ুন: Cristiano Ronaldo: ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এখন যেন ‘সিআর টাইম’