Rinku Singh: ক্লাস নাইনে ফেল, ঝাড়ুদার থেকে ৫ ছক্কার রূপকথা! রিঙ্কু সিংয়ের অজানা গল্প শুনেছেন?
KKR, IPL 2023: রাতারাতি নায়ক হয়ে ওঠার গল্প ক্রিকেট কেন, সব খেলাতেই কিছু কম নেই। কিন্তু অন্ধকার পেরিয়ে তাঁদের আলোয় পৌঁছনোর গল্প রিঙ্কুর মতো যন্ত্রণার নয়।
কলকাতা: গত বছরের মে মাস ফিরে ফিরে আসছে। লখনউ সুপার জায়ান্টসের ২১১ রানের টার্গেট তাড়া করে মাত্র ৩ রান পিছনে থেমে গিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ওই ম্যাচে এক বিস্ফোরক ইনিংস দেখেছিল আইপিএলের (IPL) দুনিয়া। ছোটখাটো চেহারার একটা ছেলে ৪টে ছয় ও ২টো চার মেরে চমকে দিয়েছিলেন। সে দিন এভিন লুইসের দুরন্ত ক্যাচ ওই ছেলেটিকে এবং কেকেআরকে (KKR) নিরাশ করেছিল। সেই ছেলেই এক বছর পর এক বিস্ফোরক ইনিংস খেললেন। শেষ ওভারে পর পর ৫টা ছয় মেরে চমকে দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বকে। বাইশ গজে ৬ বলে ছ’টা ছয় মারা ব্যাটারের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু কোনও ক্রিকেট ম্য়াচে শেষ ওভারে পর পর ৫টা ছয় মেরে কেউ তাঁর টিমকে জেতাচ্ছেন, এমনটা ঘটনা কার্যত বিরল। গুজরাট টাইটান্সের ক্যাপ্টেন রশিদ খানের হ্যাটট্রিক প্রায় শেষ করে দিচ্ছিল। কে জানত, রিঙ্কু সিং (Rinku Singh) নামের এক ক্রিকেটার সব ওলোটপালোট করে দেবেন। এই রিঙ্কুর উত্থান শেষ ওভারে টানা পাঁচটা ছয় মারার মতোই নাটকীয়। বিস্তারিত TV9 Bangla -য়।
রাতারাতি নায়ক হয়ে ওঠার গল্প ক্রিকেট কেন, সব খেলাতেই কিছু কম নেই। কিন্তু অন্ধকার পেরিয়ে তাঁদের আলোয় পৌঁছনোর গল্প রিঙ্কুর মতো যন্ত্রণার নয়। শুধু ক্রিকেটের টানে মাঠে থেকে না গেলে হয়তো এই রিঙ্কুকে চিনতই না ক্রিকেট দুনিয়া। কার্যত ঝাড়ুদার হয়ে যাচ্ছিলেন আলিগড়ের ছেলে। রিঙ্কুর বাবা বাড়িতে বাড়িতে এলপিজি গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন। তাঁর দাদা চালান অটো। আর এক দাদা কোচিংয়ে পড়ান। অভাব যে বাড়ির নিত্য অতিথি, সেখানে যে স্বপ্নের হাউই উড়বে আকাশে, তাতে আর আশ্চর্য কী! কিন্তু এই স্বপ্ন দেখতে গেলেও তো সাহসী হতে হয়। ক্লাস নাইনের বেশি পড়া হয়নি রিঙ্কুর। দিনভর ক্রিকেট খেলেই কাটত। যতটুকু আয় হত, পরিবারের ধার শোধ করতেই কেটে যেত।
২০১৮ সালেই বিবর্ণ গল্পটা ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছিল। ২০১৮ সালের নিলামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সঙ্গে লড়াই করে ৮০ লক্ষ টাকায় নাইটরা তুলে নিয়েছিল রিঙ্কুকে। তখন অনেকেই প্রশ্ন করেছিল কেকেআরের মনোভাব নিয়ে। নাইটরা যে ভুল করেনি, তার প্রমাণ মিলল। রিঙ্কু পাঁচ বছর আগে বলেছিলেন, ‘ভেবেছিলাম ২০ লক্ষ টাকায় কোনও একটা টিম কিনে নিতে পারে আমাকে। আমার দর যে ৮০ লক্ষ হতে পারে, ভাবিইনি। কেকেআর আমাকে নেওয়ার পর একটাই জিনিস মাথায় এসেছিল, দাদার বিয়েতে কিছু টাকা দিতে পারব। বোনের বিয়ের জন্য কিছু টাকা রাখতে পারব। আর একটা ঠিকঠাক বাড়ি নেব। যেখানে থাকতে পারবে পরিবার।’
ছোট ছোট গল্প ঘিরেই তো উপন্যাস তৈরি হয়। যন্ত্রণা, কষ্টের সেই গল্প সংকল্পন বিরল রূপকথারও জন্ম দেয়। যে রূপকথা আগে কখনও শুনিনি আমরা। রবিবার সন্ধেয় বছর পঁচিশের রিঙ্কু সিং তেমনই এক আশ্চর্য কাহিনি শুনিয়ে গেলেন মোতেরায়। রিঙ্কুর এই গল্প চিরকাল থেকে যাবে আলোচনায়।