How Deepfakes Created: আজ রশ্মিকা, কাল আপনি! কীভাবে তৈরি হয় Deepfake ভিডিয়ো?
Deepfake কৌশল কাজে লাগিয়ে মূলত ভুয়ো ছবি, অডিও-ভিডিয়ো তৈরি করা হয়। ডিপফেক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে যে কেউ একজন রাজনীতিবিদ, সেলিব্রিটি বা জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদের জাল ছবি বা ভিডিয়ো তৈরি করতে পারে। একটু মজার ছলে বলতে গেলে, কেউ চাইলে তাঁদের নিজস্ব সুরে প্রিয় বা অপ্রিয় তারকাকে গাওয়াতে বা নাচাতেও পারে। শুধুই ভিডিয়ো নয়, ডিপফেক ব্যাপক ভাবে অডিও ম্যানিপুলেটও করতে পারে।
তিনি নেই, অথচ আছেন! একের মুখে অন্যের মুখ বসিয়ে মানুষকে যে কত বড় বিপদে ফেলা যায়, অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার (মুখ বসিয়ে চালানো) ভাইরাল ভিডিয়ো তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। প্রযুক্তির নাম এআই ডিপফেক (AI Deepfakes)। যে কোনও মানুষের রূপ, গলার আওয়াজ-সহ হুবহু সেই ব্যক্তিকেই অনুকরণ করার সমস্ত কায়দাই জানা আছে এই খতরনাক পদ্ধতির। খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর ডিপফেক সম্পর্কে বলেছেন, ‘ভুল তথ্যের আরও ক্ষতিকারক এবং বিপজ্জনক রূপ।’ রশ্মিকা মান্দানার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকাও অভিনেত্রীর সমর্থনে এগিয়ে আসেন। বিষয়টি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন বিগ বি। তারপরই কেন্দ্রের ইলেকট্রনিক্স ও আইটি মন্ত্রক ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলিকে পরামর্শ দিয়েছে, AI Deepfake ব্যবহার করে তৈরি এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ভিডিয়োগুলিকে 24 ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে দিতে।
ডিপফেক কী
ডিপফেক হল একটি প্রোগ্রাম, যা কৃত্রিম মেধা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের একটি ধরন ডিপ লার্নিংয়ের উপরে ভিত্তি করে তৈরি। এই পদ্ধতিতে মূলত ভুয়ো ছবি, অডিও-ভিডিয়ো তৈরি করা হয়। ডিপফেক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে যে কেউ একজন রাজনীতিবিদ, সেলিব্রিটি বা জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদের জাল ছবি বা ভিডিয়ো তৈরি করতে পারে। একটু মজার ছলে বলতে গেলে, কেউ চাইলে তাঁদের নিজস্ব সুরে প্রিয় বা অপ্রিয় তারকাকে গাওয়াতে বা নাচাতেও পারে। শুধুই ভিডিয়ো নয়, ডিপফেক ব্যাপক ভাবে অডিও ম্যানিপুলেটও করতে পারে।
ডিপফেক আসলে সিন্থেটিক মিডিয়া, যা কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য নিয়ে এই প্রক্রিয়ায় আসল ছবি বা ভিডিয়োর চরিত্রের মুখ, গলার আওয়াজ বদলে তা নকল করা হয়। প্রযুক্তিটির যেমন ইতিবাচক ব্যবহার রয়েছে। সিনেমার ভিজ়্যুয়াল ইফেক্টস, অগমেন্টেড রিয়্যালিটির বিভিন্ন অবতার তৈরি করতে, সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক কাজে, এমনকি শিক্ষাক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যেতে পারে এই প্রযুক্তি। দুর্ভাগ্যবশত, ডিপফেক যখন থেকে প্রকাশ্যে এসেছে, তখন থেকে তার নেতিবাচক ব্যবহারই বেশি। রাজনৈতিক ভাবে ভুল তথ্য, রিভেঞ্জ পর্ন, সেলিব্রিটিদের নিয়ে জঘন্য ভিডিয়ো, সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করার জন্যই তা বেশি ব্যবহৃত হয়েছে।
ডিপফেক কীভাবে তৈরি করা হয়
ডিপফেকের অ্যালগরিদম দুটো মুখের (আসল ভিডিয়োর মুখ এবং যে মুখ সেখানে বসানো হবে) মধ্যে মিল খুঁজে বের করে। মোটামুটি ভাবে তাদের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ডিপফেক ভিডিয়োতে চরিত্রের খুব একটা ক্লোজ় আপ শটের উপরে জোর দেওয়া হয় না। অর্থাৎ এমনই ভিডিয়ো খুঁজে বের করা হয়, যেখানে ক্লোজ় আপ শট প্রায় নেই বললেই চলে।
ডিকোডারের বিভিন্ন সেট থাকে, যা উভয় মুখের জন্যই প্রশিক্ষিত। এবার ডিপফেক তৈরি করার জন্য স্রষ্টাকে কেবলই তার নিজ নিজ ডিকোডার থেকে মুখগুলিকে অদলবদল করতে হয়। বিষয়টিকে আরও সহজ করার জন্য X ব্যক্তির একটি কম্প্রেসড করা ছবি ডিকোডারে দেওয়া হয়, যা আসলে Y ব্যক্তির উপরে আগেই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে বা ইতিমধ্যেই তা প্রশিক্ষিত। এরপরে ডিকোডার Y-এর অভিব্যক্তির উপর ভিত্তি করে X-এর মুখের পুনর্গঠন করে।
সেই চেহারা আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ফ্রেম বাই ফ্রেম এই একই প্রক্রিয়া কাজে লাগানো হয়। সেই কারণেই দেখবেন, ডিপফেক ভিডিয়োর দৈর্ঘ্য খুব একটা বড় হয় না। কারণ, বড় ভিডিয়োর ফ্রেম বাই ফ্রেম এভাবে এডিট একপ্রকার অসম্ভব। জেনারেটিভ অ্যাডভারসারিয়াল নেটওয়ার্ক বা Gan নামে পরিচিত একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেও ডিপফেক তৈরি করা হয়। সেক্ষেত্রেও নিখুঁত ফলাফল পেতে দুটি AI অ্যালগরিদম যোগ করা হয়।