Pathashree: পথশ্রীর পথ বদল! ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার লোকজন
Bankura: উপপ্রধানের অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির একাংশের মদতেই এই ঘটনা ঘটেছে। বাঁকুড়ার আঁধারথোল গ্রামপঞ্চায়েতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোটের মুখে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ সামনে আসছে। এক্ষেত্রেও বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ সামনে এনেছে।
বাঁকুড়া: পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তা তৈরির জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে এক মৌজায়। এদিকে রাস্তা হয়ে গেল আরেক মৌজায়। অভিযোগ, তারই প্রতিবাদ করতে গিয়ে ঠিকাদারের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধানকে। বাঁকুড়ার আঁধারথোল গ্রামপঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিযোগ, জনবহুল এলাকায় রাস্তা তৈরির কথা থাকলেো প্রোমোটারদের সুবিধার জন্য অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তৃণমূল নেতাকে কেন হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে?
উপপ্রধানের অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির একাংশের মদতেই এই ঘটনা ঘটেছে। বাঁকুড়ার আঁধারথোল গ্রামপঞ্চায়েতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোটের মুখে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ সামনে আসছে। এক্ষেত্রেও বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ সামনে এনেছে।
বাঁকুড়ার আঁধারথোল গ্রামপঞ্চায়েতের নতুনগ্রামে একটি জনবহুল এলাকার কাঁচা রাস্তা পথশ্রী প্রকল্পে পাকা করার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। রাস্তার মাপজোকও হয়। অভিযোগ, এরপর কাজ আর এগোয়নি। আঁধারথোল গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ স্থানীয়দের একাংশের দাবি, নতুন গ্রামের রাস্তার জন্য বরাদ্দ অর্থে বরাত পাওয়া ঠিকাদার কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করেন পার্শ্ববর্তী পাহাড়পুর গ্রামে। আর এতেই ক্ষোভের পারদ চড়তে থাকে নতুনগ্রামে।
নতুনগ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, শুধুমাত্র জমির প্রোমোটারদের স্বার্থ রক্ষা করতে ঠিকাদার নতুনগ্রামের জনবহুল রাস্তা ছেড়ে পাহাড়পুর গ্রামে ফাঁকা জায়গায় মেঠো রাস্তা পাকা করছেন। প্রতিবাদ করে উপপ্রধান হুমকিও পেয়েছেন বলে অভিযোগ। আরিফুল মল্লিকের কথায়, “বর্ষাকালে এক হাঁটু জল জমে এখানে। কিছুদিন আগে মাপামাপি হল। অথচ এখানে রাস্তা না করে অন্য কোথাও রাস্তা করে দিল। ঠিকাদার করেছে এসব।”
আরেক বাসিন্দা মোজারুল মোল্লার কথায়, “৫ বছর ধরে এ রাস্তা হল না। অথচ অন্য গ্রামের অলিগলি হয়ে গিয়েছে। ঠিকাদার এখানে রাস্তা করল না, পাহারপুরে রাস্তা করে দিল। পয়সা খেয়ে এসব করেছে। আর আমাদের উপপ্রধান বলছে বলে ঠিকাদার বলছে কাপড় খুলে নেবে। আমাদের রাস্তা চাই।”
হুশিয়ার খান ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হন। তিনি বলেন, “আমাদের এখানে রাস্তা হওয়ার কথা ছিল। করল না। কিন্তু যেখানে লোকজন নেই সেখানে রাস্তা করিয়ে নিল। যেটা হওয়ার কথা সেটা হল না। আমাদের স্থানীয় নেতারা মনে হচ্ছে টাকার লেনদেন করে কিছু একটা ঘোটালা করেছে। আমি নিজে তৃণমূল করি। দলকে কেউ কেউ কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইলে তার দায় তো দলের না। দল তো দোষী না।”
বাঁকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার কাছে খবরটা এসেছে। বিশদে খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে যে রাস্তা তৈরি হচ্ছে সবই পথশ্রীর আওতায়। পথশ্রীর ক্ষেত্রে নিয়ম বেশিরভাগ এলাকার সাধারণ মানুষ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে ফোন করে এলাকার উন্নয়নের জন্য জানান। সেখান থেকেই সিলেকশন করে ব্লক থেকে জিপিতে যায়। খতিয়ে দেখে তারপর রিপোর্ট হয়, টাকা বরাদ্দ হয়, টেন্ডার হয়, রাস্তা হয়। আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। আর এই গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির। আর উপপ্রধান কিন্তু আমাকে কিছু জানাননি।”
বিজেপির বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ ঘোষের কথায়, “তৃণমূলের নেতারা কাটমানি ছাড়া কিছুই বোঝে না। প্রোমোটারদের কাছে টাকা খেয়ে রাস্তা করেছে। আর ওরা বলছে গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান বিজেপির। কিন্তু এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তো তৃণমূলের। তার মানে তৃণমূলের সদস্য কাজ দেখেশুনে করাচ্ছেন। প্রধানের তো কিছু করার নেই।”