Bankura Awas: উপভোক্তাদের বদলে আবাসের টাকা ঢুকছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারের স্ত্রী-মায়ের অ্যাকাউন্টে! আজব কাণ্ড
Bankura Awas: বিডিওর নির্দেশ অনুযায়ী, ওই দুই উপভোক্তার টাকা সরকারকে ফিরিয়ে দিতেও রাজি বলে ওই ঠিকাদার জানান। বিরোধীদের দাবি পঞ্চায়েত ও শাসক দল তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব এই ঘটনায় যুক্ত না থাকলে কোনওভাবেই এতবড় মাপের দুর্নীতি সম্ভব নয়।
বাঁকুড়া: ফের আবাস যোজনা (Awas Yojona)নিয়ে বড়সড় বেনিয়মের ঘটনা সামনে এল বাঁকুড়া (Bankura) জেলার ইন্দাসে। ইন্দাস ব্লকের আকুই এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের আকুই দক্ষিণপাড়া গ্রামে দুই উপভোক্তার নামে বরাদ্দ টাকা সোজা গিয়ে ঢুকেছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক ঠিকাদারের স্ত্রী ও মায়ের অ্যাকাউন্টে। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় ব্লক প্রশাসন। এমন বেনিয়ম কীভাবে ঘটল জানতে চেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে নোটিস দিয়েছে ব্লক প্রশাসন। বাঁকুড়া ইন্দাস ব্লকের আকুই এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের আকুই দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মায়া সরকার ও রাধা সাউয়ের নামে ২০২০- ২১ অর্থবর্ষে আবাস যোজনায় দুটি পৃথক বাড়ি বরাদ্দ হয়। কিন্তু জানা গিয়েছে, ওই দুই উপভোক্তার জন্য সরকারের বরাদ্দ টাকা গিয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা ও অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। আবাস যোজনার মতো উপভোক্তার বরাদ্দ টাকা কেবলমাত্র তাঁরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে কীভাবে এমন বেনিয়ম হল?
জানা গিয়েছে, নমিতা ও অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থানীয় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক ঠিকাদারের স্ত্রী ও মা। অভিযোগ, আসল উপভোক্তা মায়া সরকার ও রাধা সাউয়ের বদলে নমিতা ও অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাবতীয় তথ্য সরকারিভাবে রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া হয়। জিও ট্যাগিং-এর কাজও হয়ে যায়। ফলে মায়া সরকার ও রাধা সাউয়ের জন্য বরাদ্দ আবাস প্রকল্পের টাকা জমা হয় নমিতা ও অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অ্যাকাউন্টে।
বিরোধীদের দাবি লক্ষ্মীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নামের ওই ঠিকাদার শাসক ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রভাব খাটিয়ে ওই দুই উপভোক্তার টাকা আত্মসাৎ করেছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের মদত ছাড়া এই বেনিয়ম কোনওভাবেই সম্ভব নয় বুঝতে পেরে ইন্দাস ব্লক প্রশাসন ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনায় জরুরি ভিত্তিতে গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে জবাব তলব করেছে।
পাশাপাশি ওই দুই উপভোক্তার জন্য দেওয়া টাকা দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের দাবি, বিডিও র শো কজের জবাব দেওয়া হয়েছে। তবে কীভাবে এমনটা ঘটল তা তাঁদের জানা নেই। এ বিষয়ে আকুল এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লক্ষ্মী সাঁতরা বলেন, “এবিষয়ে তদন্ত চলছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানতে চেয়েছে, তার উত্তর দিয়েছি। এ বিষয়ে কিচ্ছু জানি না।” অভিযুক্ত ঠিকাদার লক্ষ্মীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে যথেষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে। কখনও তাঁর দাবি, পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে কীভাবে টাকা ঢুকেছে তা তাঁর জানা নেই। আবার কখনও তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবেশী উপভোক্তার প্রয়োজনীয় নথিপত্র না থাকায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়ে, তা তুলে আসল উপভোক্তাদের বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন।
বিডিওর নির্দেশ অনুযায়ী, ওই দুই উপভোক্তার টাকা সরকারকে ফিরিয়ে দিতেও রাজি বলে ওই ঠিকাদার জানান। বিরোধীদের দাবি পঞ্চায়েত ও শাসক দল তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব এই ঘটনায় যুক্ত না থাকলে কোনওভাবেই এতবড় মাপের দুর্নীতি সম্ভব নয়। তৃনমূল তাঁদের যোগসাজসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে তৃণমূলের ব্লক নেতা শেখ হামিদ।