Bankura: গুড়ে গন্ডগোল! দিনে দিনে কেন হারিয়ে যাচ্ছে নলেন গুড়ের স্বাদ?
Bankura: দিন যত যাচ্ছে ততই যেন উধাও স্বাদ-গন্ধ, গুড় নিয়ে অসন্তুষ্ট খাদ্যরসিকরা, শিউলিদের দাবি, ক্রেতার চাহিদামতো কমদামে গুড় সরবরাহ করতে গিয়ে নলেন গুড়ে দেদার মেশানো হচ্ছে চিনি। তাতেই কমছে মান।
বাঁকুড়া: শীত মানেই পিঠেপুলি। পিঠেপুলির সঙ্গে আবার আত্মিক যোগ নলেন গুড়ের। বাজার থেকে খাসা রঙ দেখে যে নলেন গুড় বাড়ি বয়ে নিয়ে এলেন সেই গুড়ের স্বাদ গন্ধ কোথায়? এমনটা ঘটলে হতাশ হতে হবে বইকি! কিন্তু কেন উধাও নলেন গুড়ের মন মাতানো স্বাদ আর প্রাণ ভরানো গন্ধ? শিউলিরা বলছেন ক্রেতাদের মানসিকতাতেই লুকিয়ে রয়েছে এর আসল কারণ। এই শিউলিরাই গাছ থেকে খেজুরের রস নামানোর কাজটা করে থাকেন।
নলেন গুড় ছাড়া গৃহস্থের শীতকাল কেমন যেন ম্যাড়ম্যাড়ে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই কমতে কমতে গুড়ের স্বাদ গন্ধটাই এখন যেন মিলিয়ে গিয়েছে, বলছেন খাদ্য রসিকরা। কিন্তু যে স্বাদ গন্ধের জন্য নলেন গুড়ের এত চাহিদা সেই নলেন গুড়ের স্বাদ গন্ধই কেন হঠাৎ হারিয়ে গেল? গুড় তৈরির সঙ্গে যুক্ত শিউলিরা বলছেন প্রথমত, মাটির হাঁড়ির বদলে এখন খেজুর গাছের রস সংগ্রহে দেদার ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাস্টিকের হাঁড়ি। মাটির হাঁড়িতে রস সংগ্রহ করলে সেই রসের স্বাদ ও গব্ধ অটুট থাকে। প্লাস্টিকের হাঁড়িতে তা হয় না। কিন্তু, মাটির হাঁড়ি টাঙালে প্রায়শই তা ভেঙে দেয় স্থানীয়রা। ফলে লোকসান হয়।
দ্বিতীয়ত, খেজুর গাছের নির্ভেজাল রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করলে সেই গুড়ের দাম হয় কমপক্ষে কেজি প্রতি দেড়শো থেকে দুশো টাকা। এত দামে আড়ৎদাররা গুড় কিনতে নারাজ। ক্রেতারাও ওই অঙ্কের টাকা দিয়ে গুড় কিনতে নারাজ। প্রত্যেকেই চান পঞ্চাশ থেকে একশো টাকা কিলো দরে নলেন গুড়। তাছাড়া শিউলিদের দাবি, নির্ভেজাল নলেন গুড়ের রঙ হয় কিছুটা ফ্যাকাসে হলুদ। কিন্তু সেই আসল গুড়কেই নকল বলে ধরে নিয়ে ক্রেতারা তা কিনতে চায় না। অন্যদিকে চিনি মেশানো ভেজাল গুড়ের রঙ হয় টকটকে লাল। যা দেখেই পছন্দ হয়ে যায় ক্রেতাদের। তাই কেনার সময় অগ্রাধিকার পায়।
অর্থাৎ শিউলিরা স্পষ্টতই স্বীকার করে নিচ্ছেন ক্রেতা ধরতে নলেন গুড়ে দেদার মেশানো হচ্ছে চিনি। তাতে শিউলিদের লাভের অঙ্কও বাড়ছে। আর আপনি ট্যাঁকের কড়ি খরচ করে নলেন গুড় খেতে গিয়ে আসলে খাচ্ছেন চিনি মেশানো স্বাদ গন্ধহীন নলেন গুড়।