Poushmela in Visva Bharati University: ‘বিদ্যুত্-কালে’ থমকে পৌষমেলা, পথে নামলেন বোলপুর ব্যবসায়ী ও শিল্পীরা
Bolpur: রবিবার পৌষ মেলা করার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করেন শিক্ষক, পড়ুয়া, ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র শিল্পী এবং বাউলরা। তাঁরা বিশ্বভারতীর স্টেট ব্যাঙ্কের সামনে থেকে উপাসনা গৃহ পর্যন্ত মিছিল করেন
বীরভূম: করোনার জেরে গত দেড়বছর ধরে কার্যত বন্ধ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যতিক্রম নয় বিশ্বভারতী। তবে ধীরে ধীরে যখন সবকিছু স্বাভাবিকের পথে যাচ্ছে তখন কবিগুরুর শিক্ষাঙ্গনের ঐতিহ্য মেনে ফের পৌষমেলা চালু হোক এই দাবিতে পথে নামলেন বোলপুরের ব্যবসায়ী, শিল্পী এবং পড়ুয়ারা। রবিবার তাঁরা পৌষ মেলা করার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করেন। তবে এ বার, মেলা হবে কি না তা নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়নি।
রবিবার পৌষ মেলা করার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করেন শিক্ষক, পড়ুয়া, ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র শিল্পী এবং বাউলরা। তাঁরা বিশ্বভারতীর স্টেট ব্যাঙ্কের সামনে থেকে উপাসনা গৃহ পর্যন্ত মিছিল করেন। ওই মিছিলে যোগ দেওয়া বাউল অষ্টম দাস বলেন, ‘‘পৌষ মেলা বিশ্বভারতীর তথা শান্তিনিকেতন-বোলপুরের এক ঐতিহ্য। আর সেই ঐতিহ্য বন্ধ হয়ে গেলে খারাপ তো লাগবেই। এই পৌষ মেলা, বসন্তোৎসব আমাদের বাউল শিল্পীদের আয়ের অন্যতম পথও। সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাউল শিল্পীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা চাই, পৌষ মেলা আবার শুরু হোক।’’
বিশ্বভারতীর এক ছাত্র শুভ নাথ বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু ছাত্র আজ এই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছি। কারণ আমরাও চাই, পৌষ মেলা হোক। মূলত ক্ষুদ্র শিল্প, ব্যবসায়ী এবং শিল্পীদের দ্বারা এই পদযাত্রা আয়োজিত হলেও, তাঁদের সমর্থন করতেই আমরা পা মিলিয়েছি।’’
এর আগে বোলপুর পুরসভার তরফেও বিশ্বভারতীর কাছে পৌষমেলা করতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। যদিও তার কোনও প্রত্যুত্তর মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে পুরসভা সূত্রে। তাই এ বারও পৌষ মেলা না হওয়ার আশঙ্কাই করছেন বোলপুরের অধিকাংশই।
প্রসঙ্গত, গত বছর রীতি মেনে ৭ পৌষ শুরু হয় উৎসব। ৮ পৌষ বিশ্বভারতীতে পালিত হয় প্রতিষ্ঠা দিবস। সেবার আবার বিশ্বভারতীর শতবর্ষ। তা ঘিরে উদযাপন-অনুষ্ঠানও হয়। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। বিশ্বভারতীর ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার জানান, “এই শতবর্ষ উদযাপনে আচার্যর আসার কথা। যদি তিনি না আসতে পারেন সেক্ষেত্রে ভার্চুয়ালি থাকবেন আমাদের সঙ্গে। শিক্ষামন্ত্রী ও রাজ্যপাল আসবেন।” বিশ্বভারতীর কর্মিমণ্ডলীর সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “ আমাদের বিশ্বভারতীর শতবর্ষ। প্রতিষ্ঠা দিবসে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আচার্য ও মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁদের উপস্থিতিতে শতবর্ষের অনুষ্ঠানের যাতে সূচনা করা যায়, চেষ্টা করা হচ্ছে।”
সেই আমন্ত্রণ পেয়ে শতবর্ষের উদযাপনে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই ভার্চুয়াল বৈঠকে খোদ নমো বলেছিলেন, “এই মহামারি আমাদের শিখিয়েছে ভোকাল ফর লোকাল। আমরা যখন আত্মসম্মান, আত্ম নির্ভরতার কথা বলছি, তখন বলি, যারা পৌষ মেলায় গরীব শিল্পীরা আসতেন, চলুন তাঁদের পাশে দাঁড়াই। বিশ্ব বাজারে কীভাবে তাঁদের প্রতিভা পৌঁছে দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করুন। পৌষ মেলা ভোকাল ফর লোকালের আক্ষরিক রূপ।”
প্রত্যেক বছর শান্তিনিকেতনের পৌষমেলাকে ঘিরে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয় রবি-তীর্থে। বাংলার পাশাপাশি অন্য রাজ্য এমনকী বিদেশ থেকেও বহু মানুষ আসেন এই মিলনমেলায় যোগ দিতে। কিন্তু গত বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে সে ছবিতে বদল আনতেই হয় কর্তৃপক্ষকে। অবশ্য় ঐতিহ্যের পৌষ উৎসবে ছেদ পড়েনি। সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে আশ্রমে পালিত হয় বৈতালিক, ছাতিমতলায় উপাসনা, খ্রিস্টোৎসব।
আরও পড়ুন: MLA Madan Mitra And Prabir Ghosal: প্রবীরের পাশেই… ‘যমজ ভাইদের’ মেলাতে তত্পর মদন!