Ram Navami: বীরভূমে রামনবমীর মিছিলে শতাব্দী, কোন সমীকরণ ‘বাধ্য’ করছে শাসককে?
Birbhum TMC: অনুব্রত মণ্ডল যতদিন তৃণমূলের জেলা সংগঠনের দেখভাল করেছেন, ততদিন শাসক শিবিরকে রামনবমীর অনুষ্ঠানে এমন তামঝাম করে সামিল হতে দেখা যায়নি বীরভূমে। কিন্তু এখন কেষ্ট মণ্ডল গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিহাড়ে বন্দি। তাই কি ভোটের আগে রামনবমীর শোভাযাত্রায় সামিল হয়ে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানার প্রয়াস?
সিউড়ি: কেষ্ট-হীন বীরভূমে এবার রামনবমীতে এক ভিন্ন ছবি ধরা পড়ল তৃণমূলের। সিউড়িতে রামনবমীর এক শোভাযাত্রায় আজ পা মেলাতে দেখা গেল বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়কে। বিদায়ী সাংসদের সঙ্গে ছিলেন বীরভূমের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীও। অনুব্রত মণ্ডল যতদিন তৃণমূলের জেলা সংগঠনের দেখভাল করেছেন, ততদিন শাসক শিবিরকে রামনবমীর অনুষ্ঠানে এমন তামঝাম করে সামিল হতে দেখা যায়নি বীরভূমে। কিন্তু এখন কেষ্ট মণ্ডল গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিহাড়ে বন্দি। তাই কি ভোটের আগে রামনবমীর শোভাযাত্রায় সামিল হয়ে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানার প্রয়াস?
গত লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বীরভূমে বিধানসভা ভিত্তিক পরিসংখ্যান দেখলেই স্পষ্ট শতাব্দীর দিল্লির দৌড় খুব একটা মসৃণ ছিল না। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সাতটি বিধানসভা আসন – সিউড়ি, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, সাঁইথিয়া, নলহাটি, মুরারই ও হাসান। এই সাতটির মধ্যে উনিশের লোকসভা ভোটে চারটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই লিড নিয়েছিল বিজেপি। সিউড়ি, দুবরাজপুর, রামপুরহাট ও সাঁইথিয়া এই চারটি বিধানসভা থেকে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে বাকি তিনটি বিধানসভা থেকে বড় মাপের লিড পাওয়াতেই সে বার জয়ী হয়েছিলেন শতাব্দী।
এদিকে আবার তৃণমূলের লিড নেওয়া তিনটি বিধানসভার মধ্যে গত পঞ্চায়েত ভোটে বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত দখল করেছে বাম-কংগ্রেস। পাশাপাশি জেলার রাজনৈতিক মহলের দাবি, আরএসএসেরও বেশ দখল রয়েছে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে। সিউড়ি, রামপুরহাট ও নলহাটির বেশ কিছুটা জায়গায় এবং সাঁইথিয়া এবং দুবরাজপুরের কিছু কিছু পকেটে ভাল দখল রয়েছে সংঘের। গত বছর আবার সিউড়ির সভা থেকে অমিত শাহ রাম নবমীর শোভাযাত্রার ইস্যুতে নাম না করে তৃণমূলকে একহাত নিয়েছিল।
সেই কারণেই কি এবার কেষ্টর অনুপস্থিতিতে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানতে মরিয়া চেষ্টা তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায়ের? তাহলে কি কোথাও গিয়ে হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ভাটা পড়েছে শাসক শিবিরে? বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা মনে করছেন, মরিয়া হয়েই তৃণমূল এখন বিজেপির পথে হাঁটতে চাইছে। তাঁর কথায়, ‘হিন্দু ভোটকে কাছে পেতে বাধ্য হচ্ছে তৃণমূল।’ যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ তৃণমূল প্রার্থী। শতাব্দীর বক্তব্য়, জয় শ্রীরাম স্লোগান কারও একার নয়। ভগবান রাম সবার। এটা ভগবানের প্রার্থনা করার স্লোগান।
শাসক শিবিরের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরীও বিজেপির দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট দাবি, ‘সংগঠনের কোনও অভাব নেই। আমি হিন্দু। হিন্দু ধর্মের সমস্ত কিছু আমি পালন করব, এটা আমার অধিকার। এতে কেউ বাধা দিতে পারে না। রাম সবার। অনুব্রত মণ্ডলের যে সংগঠন বীরভূমে রয়েছে, নির্বাচনী বৈতরণ পার করতে সেটাই যথেষ্ট।’