Balurghat Poster: পরিচালনার সমিতির সভাপতি হিসেবে পছন্দ নয়, বালুরঘাট ল কলেজে বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে পোস্টার

Balurghat: বালুরঘাট ল কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসেবে পছন্দ নয় রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে।

Balurghat Poster: পরিচালনার সমিতির সভাপতি হিসেবে পছন্দ নয়, বালুরঘাট ল কলেজে বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে পোস্টার
ল কলেজে পড়ল পোস্টার (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2022 | 11:02 AM

বালুরঘাট: ল কলেজে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে পড়ল একাধিক পোস্টার। মঙ্গলবার বালুরঘাট ল কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকের আগেই পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ায় চাঞ্চল্য দেখ দিয়েছে।

কেন পোস্টার পড়েছে?

অভিযোগ, বালুরঘাট ল কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসেবে পছন্দ নয় রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে। তাই এদিন পরিচালন সমিতির সভায় যোগ দিতে আসবার আগেই আন্দোলনে নেমে পড়ল একদল পড়ুয়া। রাতের অন্ধকারে কলেজ ক্যাম্পাসে পোস্টার মারা হয় বলেই অভিযোগ। পাশাপাশি বালুরঘাট ল কলেজের একদল পড়ুয়া এনিয়ে ক্ষোভ দিয়েছে। একই সঙ্গে কলেজের উন্নয়ন সংক্রান্ত বেশ কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে কলেজ চত্বরে পোস্টারে ছয়লাপ করে দেওয়া হয়।

বস্তুত, বালুরঘাট ল কলেজে বর্তমানে পরিচালনার সমিতির সভাপতি রয়েছেন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। গত ফেব্রুয়ারি মাসে অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে এই কলেজের সভাপতি করা হয়েছে বিপ্লব মিত্রকে। এই কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন এখনো অর্পিতা ঘোষ অনুগামীদের হাতেই রয়েছে। ফলে বিপ্লব মিত্রকে সভাপতি করার পর থেকে কলেজে ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনা প্রায়শই ঘটে চলেছে বিক্ষোভ।

এরপর মঙ্গলবার বালুরঘাট কলেজের পরিচালন সমিতির সভা ডাকা হয়েছিল। এই সভাতে নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নতুন একজন অধ্যাপককে দায়িত্ব দেওয়া, কলেজের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি, কলেজের উন্নয়নমূলক কাজের আলোচনা সহ নানা রকম আলোচনা হওয়ার কথা। আর এই সভাতে যোগ দিতে গতকাল দুপুরে বালুরঘাট ল কলেজে আসার কথা ছিল বিপ্লব মিত্রের। কিন্তু তাঁর আসার আগেই কলেজের একদল পড়ুয়া কলেজ ক্যাম্পাসে পোস্টারে-পোস্টারে ছয়লাপ করে দেয়।

যদিও, তাদের দাবি তারা এই পোস্টার লাগান নি। কে বা কারা লাগিয়েছেন তাও জানা নেই। এ দিকে, বিক্ষোভকারীদের দাবি বিপ্লব মিত্রকে রাতের অন্ধকারে সভাপতি করা হয়েছে বলে যেমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। তেমনি কলেজের উন্নয়ন তহবিলের টাকা ব্যবহার না করে পরিকাঠামো বেহাল করে রাখা, কলেজে খাবার জল না থাকা ইত্যাদি অভিযোগ ছাত্রছাত্রীদের।

এদিকে মন্ত্রী আসবার আগেই ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজ ক্যাম্পাস ঘেরাও করে। অন্যদিকে বিক্ষোভ করার খবর পেতেই মন্ত্রী অনুগামী প্রচুর মানুষ ক্যাম্পাসে জমায়েত করতে শুরু করে। বালুরঘাট পুরসভার কয়েক জন কাউন্সিলরকেও ওই ক্যাম্পাসে দেখা যায়। আর এরপরেই আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা অবস্থার বেগতিক দেখে এলাকা ছেড়ে বেড়িয়ে যায়। মন্ত্রী অনুগামীরা কলেজ ক্যাম্পাসে লাগানো বিক্ষোভকারীদের সমস্ত পোস্টারগুলি টেনে ছিঁড়ে ফেলে দেয়। আর এরপরই মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র কলেজের পরিচালন সমিতির সভায় যোগ দিতে আসেন।

এ বিষয়ে কলেজ পড়ুয়া আয়াতুল লোকমন, রজত সাহা ও তনুশ্রী বসাক বলেন, কলেজে আমরা প্রতিবছর ৪০ হাজার টাকা করে উন্নয়নের জন্য দেই। কিন্তু আমাদের ক্লাসরুম গুলির বেহাল অবস্থা ঠিক হয় নি। কমোন রুম গুলির বেহাল অবস্থা রয়েই গেছে। খেলাধুলার সামগ্রী নেই। খাবার জল নেই। অধ্যাপকরা গত এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে কলেজে আসেন না। এমনকি তারা ক্লাস নেন না। এর ফলে তারা পিছিয়ে পড়ছেন। মুখ্যমন্ত্রী ২ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিলেন কিন্তু সেই টাকা কাজ হয়নি। এনিয়ে তারা একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

এদিকে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক জ্যোতি প্রকাশ রায় বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীরা মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত অভিযোগ করেছেন। খাবার জলের ব্যবস্থা আমরা করে রেখেছি। দুই একটি ক্লাস ঘরের সংস্কার প্রয়োজন। সদ্য ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তাই গত ১৩ তারিখ থেকে রীতিমতো ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি নিজে ক্লাস নিয়েছি।’

অন্যদিকে এবিষয়ে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে কোনও পোস্টার দেখিনি। কারা বিক্ষোভ করেছে তাও জানিনা। কিন্তু এই কলেজটিকে তুলে দেওয়ার জন্য কিছু চক্র কাজ করছে। ষড়যন্ত্র চলছে। ওই ষড়যন্ত্র কারীদের এজেন্টরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এমন বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। আমরা তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। বহু বছর আগে যখন আমি দায়িত্বে ছিলাম, তখন এই কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য যাবতীয় চেষ্টা করেছি। আবার দায়িত্ব পেয়েছি, এই কলেজকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় রয়েছি।’

বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, ‘আজকে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরো ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে। অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর উপায় না দেখে চোরের পক্ষে এই ছোট-ছোট বাচ্চাদের রাস্তায় নামচ্ছে। কলেজ কার পক্ষে থাকবে ওদের নিজেদের ভিতরেই গোষ্ঠী কোন্দল এই বিষয়ে চলছে।’