Toilet : বছর পাঁচেক আগেই নির্মল জেলার তকমা, এখনও শৌচগার নেই বহু মানুষের ঘরে
Toilet : নির্মল জেলা হিসাবে ঘোষণার পরেও গ্রামজুড়ে নেই শৌচাগার। মাঠেঘাটে শৌচকর্ম করতে গেলে শিয়াল কামড়াচ্ছে। আতঙ্ক বাড়ছে বালুরঘাটের কালাইবাড়িতে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
বালুরঘাট: বছর পাঁচেক আগেই নির্মল জেলা ঘোষণা হয়েছে। তারপরও বালুরঘাট (Balurghat) ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কালাইবাড়িতে বেশিরভাগ বাড়িতে নেই শৌচাগার। বলা চলে শৌচাগার (Toilet) নেই আস্ত একটি গ্রাম জুড়ে। তাই শৌচকর্ম করতে মাঠে ঘাটেই যেতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। এদিকে মাঠে শৌচকর্ম করতে গিয়ে প্রায়শই শিয়ালের হানার সম্মুখীন হতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। বিগত কয়েকদিন মাঠে শৌচকর্ম করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয়েছে তিন গ্রামবাসীকে। ভয়ে ঘুম উড়েছে বালুরঘাটের কালাইবাড়ি আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দাদের। সরকারি শৌচগার না মেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ক্ষোভ ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাপানউতর শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিজেপি। এলাকার বিজেপি কর্মীরা দাবি করছেন, তাঁরা শাসকদলের কাছ থেকে কোনও সুবিধাই পাচ্ছেন না।
তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা। প্রসঙ্গত, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির লক্ষ্যে রাজ্য সরকার শুরু করে নির্মল বাংলা অভিযান। এই প্রকল্পের হাত ধরেই বাড়ি বাড়ি শৌচাগার তৈরি করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এদিকে বছর পাঁচেক আগেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাকে নির্মল জেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ জেলার প্রতিটি বাড়িতেই শৌচাগার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। খোলা মাঠে যাতে মানুষ আর শৌচকর্ম করতে না যায়, তা আটকাতে জোরকদমে প্রচারেও নেমেছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন।
কোথাও কোথাও আবার মাঠে ঘাটে শৌচকর্ম করার জন্য জরিমানাও করতে দেখা গিয়েছে প্রশাসনকে। প্রতিটি পঞ্চায়েত নির্মল ঘোষণার পরেই জেলাকে নির্মল ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। কিন্তু আজও ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের কালাইবাড়ির আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলির সিংহভাগ বাড়িতেই নেই শৌচাগার। যদিও অনেকেই নিজেদের উদ্যোগে বানিয়েছে শৌচাগার। অর্থাভাবে সেটা করতে পারেননি অনেকে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সূর্য মার্ডি, সৌলেন পাহান ও লক্ষ্মী পাহান বলেন, গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতেই নেই শৌচাগার। যার ফলে মাঠেঘাটে যেতে হয় শৌচকর্ম করতে। মাঠে যাওয়ার ফলে গ্রামের বেশ কয়েকজনকে শিয়াল কামড়েছে। এর ফলে সকলেই আতঙ্কে রয়েছেন। কিন্তু, মাঠঘাট ছাড়া শৌচকর্ম করার জায়গা নেই৷
এ বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা মীরা মণ্ডল বলেন, শুধু ওই আদিবাসী পাড়াতেই নয় আমাদের পুরো সংসদীয় এলেকায় শৌচাগার নেই প্রচুর বাড়িতে। আমি বিজেপি থেকে জিতেছি বলে কোনও কাজই দেওয়া হয় না। গ্রামবাসীদের সঙ্গেও বঞ্চনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূল জেলা কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকী জানান, “অভিযোগ সত্য নয়, এটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে যাতে দ্রুত কাজ করা হবে।”
অন্যদিকে এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, “শৌচাগারের জন্য আমাদের পোর্টালে আবেদন হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে পরিস্থিতি যাচাই করে শৌচালয় করে দেওয়া হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে অনেক উপভোক্তাকে শৌচালয় করে দেওয়া হয়েছে। আরও দেওয়া হবে। তবে কোথাও না থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”