North Bengal: জমি মাফিয়াদের দাপটে সাফ জঙ্গল, মাথা তুলছে রিসর্ট-রেস্তরাঁ, বুলডোজার কোথায়? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা
North Bengal: রাতারাতি দখল হয়ে যায় বহু খাস জমি। ভোরের আলো প্রকল্পের চারধারে গড়ে ওঠে একাধিক বেসরকারি রিসর্ট, ফার্ম হাউস। খাস জমির দখলের এই কারবারে শাসক নেতাদের একাংশের নামও সামনে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের কথা বললেও প্রশাসনের অবশ্য হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ।
শিলিগুড়ি: এ যেন একেবারে হরির লুট। প্রকাশ্য দিবালোকে গজিয়ে উঠেছে রিসর্ট, রেস্তরাঁ। অনুমতির বালাই নেই। জমি দখল আর তারপরেই রিসর্ট, রেস্তরাঁ খুলে ফেলার অভিযোগ। বিরোধীরা বলছে, তাতেই ফুলেফেঁপে উঠছেন শাসক নেতা থেকে তাঁদের অনুগামীরা। মুখ্যমন্ত্রী জিরো টলারেন্স বললেও সব জেনেও ঘুমাচ্ছে প্রশাসন, অভিযোগ এমনটাই।
গজলডোবায় মেগা ট্যুরিজম হাব তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগও করেছে সরকার। ঢেলে সাজানো হয়েছে ভোরের আলো প্রকল্পকে। এখানে রয়েছে হেলিপ্যাড, ভোরের আলোয় পর্যটন দফতরের কটেজ এবং একাধিক বেসরকারি হোটেল, যুব আবাস ইত্যাদি। এই প্রকল্পে পর্যটকদের টানতে শুরু করতেই জমি মাফিয়াদের নজর পড়ে এলাকার খাস জমিগুলিতে। রাতারাতি দখল হয়ে যায় বহু খাস জমি। ভোরের আলো প্রকল্পের চারধারে গড়ে ওঠে একাধিক বেসরকারি রিসর্ট, ফার্ম হাউস। খাস জমির দখলের এই কারবারে শাসক নেতাদের একাংশের নামও সামনে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের কথা বললেও প্রশাসনের অবশ্য হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ। বিরোধীরা বলছেন, কাজ দেখানোর নামে বুলডোজার নিয়ে কর্তারা ছুটলেও একটিও রিসর্ট, রেস্তরাঁ চোখেই পড়ছে না তাঁদের।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য সামনে আসতেই তড়িঘড়ি শিলিগুড়ির তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মার দখলে থাকা জমিটি অবশ্য পুনরুদ্ধার করেছিল প্রশাসন। কিন্তু পাশেই থাকা একাধিক রিসর্ট, রেস্তরাঁয় অভিযান হয়নি।
কী কী বেনিয়ম গজলডোবায়?
রঞ্জন শীলশর্মার প্রশ্ন, তিনি ছাড়াও শাসক কাউন্সিলর দুলাল দত্ত জমি দখলে রেখেছিলেন। সে জমি উদ্ধার হল কোথায়? সূত্রের খবর, এলাকাতেই রয়েছে শাসক তৃণমূলের এক প্রয়াত নেতার রিসর্ট। বহাল তবিয়তে তা চললেও কেন দেখেও দেখে না প্রশাসন। রঞ্জন শীলশর্মার জমিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হলেও কেন মেয়র গৌতম দেবের প্রতিবেশী তথা তৃণমূল ঘনিষ্ট এক নেতার রেস্তরায় অভিযান নয়? সেই প্রশ্নও উঠছে। অভিযোগ, গজলডোবায় চাষের জমির দখল সত্ব কিনে আমাজন পার্ক ও ওয়াটার পার্ক গড়ছেন এক হোটেল মালিক। কীভাবে ছাড়পত্র সে প্রকল্পে? সেই প্রশ্নও থাকছে।
যদিও এরইমধ্যে এক বিজেপি নেতার রিসর্টে অবশ্য গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, বিজেপি নেতা বৈধ কাগজ দেখালে চলে যান প্রশাসনিক কর্তারা। এরপর বিতর্কের আবহেই বীর বিক্রমে দুদিন আগে রঞ্জন শীলশর্মার দখল থেকে পুনরুদ্ধার হওয়া জমিতে থাকা ফার্ম হাউস ভেঙে বিকালে ফিরে হাফ ছাড়েন প্রশাসনিক কর্তারা। সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, তৃণমূলের প্রশ্রয়েই এই কারবার। এলাকায় জমির কারবারে আর নিয়ন্ত্রন নেই সরকারের। নেতারা নিজেই রিসর্ট গড়ছেন। সব বেআইনি। খাস জমিতে তৈরি।
বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষে বলছেন, “হরির লুট চলছে। ফুর্তির রিসর্ট হচ্ছে এলাকায়। সব জেনেও না জানার ভান করছে প্রশাসন। জিরো টলারেন্স কথার কথা। আদতে সবটাই লোক দেখানো।” এলাকার বিধায়ক তথা গজলডোবা উন্নয়ন পর্ষদের তরফে খগেশ্বর রায়ের দাবি, “গজলডোবা উন্নয়ন পর্ষদের অফিসের জন্য বরাদ্দ জমিই বেহাত হয়ে গিয়েছে। কাউকে ছাড়ব না। সমস্ত রিসর্ট, দখলে থাকা জমি পুনরুদ্ধার করব। এলাকায় সমীক্ষা হচ্ছে।”