‘কেউ আসছে মেরে দিতে…’আতঙ্কেই বউ-মেয়ের সঙ্গে নৃশংস কাজ যুবকের! নিজের পরিণতিও মর্মান্তিক
Nakshallbari: কিন্তু সন্দেহ বদলে যায় প্রসুনের ঘাড়ের ক্ষত চিহ্ন দেখে। তাঁর ঘাড়ের পিছনের মাংস যেন খুবলে তুলে নেওয়া হয়েছে।
শিলিগুড়ি: ঘরের মধ্যে মেঝেতে পড়ে রয়েছে মা ও সন্তানের দেহ। আর পাশের ঘরেই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন স্বামী। দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান প্রতিবেশীরা। নকশালবাড়ির চা বাগানে একই পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল নকশালবাড়িতে (Nakshallbari)। বাড়ির মালিক প্রসুুন প্রজা, তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা ও আড়াই বছরের শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার হয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সকাল থেকেই প্রত্যেকদিন প্রিয়াঙ্কাকে বাড়ির সামনে কাজে করতে দেখা যায়। কিন্তু এদিন সকাল থেকেই তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। ছোট্ট আড়াই বছরের বাচ্চাটাও বাড়ির সামনে খেলাধুলো করে। তাঁকেও দেখা যাচ্ছিল না। সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের।
বাড়ির দরজা আলদা করে বন্ধ ছিল। ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ আসছিল না। অনেক ডাকাডাকিতেও কোনও সাড়া পাননি কেউ। বিপদ আশঙ্কা করেই প্রতিবেশীরা ঘরে ঢোকেন। দেখেন ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে মা-মেয়ের দেহ। মেঝেতে চাপ চাপ জমাট বাধা রক্ত।
আর ছাদের বাঁশের কাঠামোর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে প্রসুনের দেহ। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা মনে করেছিলেন, হয়তো পারিবারিক অশান্তিতেই স্ত্রী সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন প্রসুন। কারণ আর্থিক অনটনে মাঝেমধ্যেই তাঁদের পরিবারে অশান্তি চলছিল। সেই কারণে মানসিক অবসাদে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন তাঁরা।
কিন্তু সন্দেহ বদলে যায় প্রসুনের ঘাড়ের ক্ষত চিহ্ন দেখে। তাঁর ঘাড়ের পিছনের মাংস যেন খুবলে তুলে নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে গল গল করে বেরোচ্ছে রক্ত। যেন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। নকশালবাড়ির জাবড়া চা বাগানে এখন রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।
একই পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরেই একটা আতঙ্কে ভুগছিলেন প্রসুন। তাঁর মনে হতে শুরু করেছিল, কেউ তাঁদের মেরে ফেলবে। এই নিয়ে অশান্তিও করতেন স্ত্রীর সঙ্গে। রবিবার রাতে ঘর থেকে বেরোতে যান প্রিয়াঙ্কা। সে সময় প্রসুন তাঁকে বাধা দেন। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন প্রিয়াঙ্কা। এরপর মেয়েকেও খুন করেন প্রসুন। তারপর নিজেই গলায় কোপ দেন ও পরে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “এলাকার মধ্যে এত ভয়াবহ ঘটনা এই প্রথম। ছোট্ট শিশুটার দেহও মাটিতে উল্টে পড়ে ছিল। সে দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। কীভাবে এই ঘটনা বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশ এসেছে। তদন্ত করে আসল রহস্য বার করুক। ”
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তিন জনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশও মনে করছে, কেউ খুন করে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত কিছু বলছে না পুলিশও।
আরও পড়ুন: Weather Update: আজ এই জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি, সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া… জেনে নিন এখনই