Siliguri ISI Agent: দিনে টোটো চালাতেন, সন্ধ্যায় টিউশন পড়াতেন, তথ্য পাচার করে ISI এজেন্ট গুড্ডুর মাসিক রোজগার কত?

Siliguri ISI Agent: জানা যাচ্ছে, গুড্ডু মূলত বিহারের চম্পারণের বাসিন্দা। গত দুবছর ধরে শিলিগুড়ির নেতাজিনগরে ছিলেন। সাধারণ থেকে অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন গুড্ডু।

Siliguri ISI Agent:  দিনে টোটো চালাতেন, সন্ধ্যায় টিউশন পড়াতেন, তথ্য পাচার করে ISI এজেন্ট গুড্ডুর মাসিক রোজগার কত?
আইএসআই সন্দেহে গ্রেফতার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 22, 2022 | 1:44 PM

শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার সন্দেহভাজন আইএসআই এজেন্ট মহম্মদ সাকিল ওরফে গুড্ডু। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। এসটিএফ-এর (Special Task Force) হাতে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক তথ্য। জানা যাচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকেই রাজ্যকে কয়েকদিন আগে জানানো হয়, গুড্ডু কুমার নামে এক ব্যক্তি ভারতীয় সেনার তথ্য পাচার করার কাজ করছেন। তারপরই তার গতিবিধির ওপর নজর রাখছিলেন তদন্তকারীরা। শিলিগুড়িতেই একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে থাকতে শুরু করেছিল গুড্ডু কুমার। এলাকায় টোটো চালাত সে। যে বাড়িতে ভাড়া থাকত, বাড়িমালিকের বাচ্চাদেরও সন্ধ্যায় পড়াত বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এলাকায় শিক্ষিত, ভদ্র ছেলে হিসাবেই বেশ নামডাক করে ফেলেছিল গুড্ডু। শিলিগুড়ির নেতাজিনগর এলাকার গুড্ডু যে ঘরে থাকত, বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা গেল স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। পাড়ার গলিগুলিতে অত্যুৎসাহী মানুষের জটলা। গুড্ডুর গ্রেফতারে এলাকার আবহ থমথমে। কস্মিনকালে পাড়ার মধ্যে এমন ঘটনা আদৌ ঘটেছে কিনা, তা ভেবেও কূল করতে পারছেন না তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সাদামাটা ভাবেই থাকত গুড্ডু। ঘরে রয়েছে একটিই ক্যাম্প খাট। ঘরের জানালা প্রায় খোলাই থাকত। গুড্ডুর ঘরে সেভাবে কেউ আসতেনও না। তাঁর গতিবিধিতেও কোনও অস্বাভাবিক কিছু আঁচ করতে পারেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। এক প্রতিবেশী বলেন, “কথা খুব কম বলত। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলত। বাচ্চারা ওর ঘরেও যেত। ঘরে কেউ আসত না।” জানা যাচ্ছে, গুড্ডু মূলত বিহারের চম্পারনের বাসিন্দা। গত দু’বছর ধরে শিলিগুড়ির নেতাজিনগরে ছিল। সাধারণ থেকে অতি সাধারণ জীবনযাপন করত গুড্ডু।

জানা যাচ্ছে, একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে খবর রাখছিল, উত্তর পূর্ব ভারত ও উত্তরবঙ্গের একটা বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আইএসআই-এর নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে। সেই সূত্র ধরে চিহ্নিত করা হয় গুড্ডু কুমারকে। তদন্তকারীদের দাবি, গুড্ডুর মূল কাজ ছিল শিলিগুড়ি ও তার সংলগ্ন এলাকাগুলিতে যে সেনা ছাউনি রয়েছে, সেই সেনাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা।

উল্লেখ্য, শিলিগুড়ি হল সেনার ত্রিশক্তি কোর্পস (XXXIII Corps)-এর সদর দফতর। এটি উত্তর পূর্ব ভারত ও সিকিম-দার্জিলিঙ পাহাড় এলাকার পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে। ত্রিশক্তি কোর্পসের অধীনস্থ ১৭, ২০ ও ২৭ মাউন্টেন ডিভিশন, যারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (LoC) শত্রুপক্ষের উপর নজরদারি চালায়। সেই সেনাবাহিনীর ওপরই নজরদারি চালাত গুড্ডু বলে খবর। এর পাশাপাশি জলাপাহাড় ও লেবংয়ের মতো ক্যান্টনমেন্টেও নজরদারির দায়িত্ব ছিল তার ওপর। সূত্রের আরও খবর, গুড্ডু যে প্রাথমিক পর্যায়ের তথ্য দিত, তার জন্যে যে খুব বেশি টাকা পেত, তেমনটাও নয়। মনে করা হচ্ছে বড়জোর ১০-১৫ হাজার মাসে টাকা পেত সে। তবে এই নেটওয়ার্কে কেবল গুড্ডু একা নয়, বেশ কয়েক মাস আগেই কালিম্পঙ থেকে পীর মহম্মদ নামে এক গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। গোয়েন্দারা মনে করছেন, ৫০-৬০ জন লোক রয়েছে এই নেটওয়ার্কে। তারাই তথ্য দিচ্ছে। সেই নেটওয়ার্কটিরই মূলে পৌঁছতে চাইছে গোয়েন্দা।