Duttapukur Local: দত্তপুকুর লোকালে ব্যাগে করে বাচ্চা চুরি গোটাটাই গুজব, মহিলা আসলেই শিশুটির মা, জানিয়ে দিল GRP

Duttapukur Local: বুধবার সকালে শিয়ালদহগামী দত্তপুকুর লোকালে একটি ভয়ঙ্কর অভিযোগ ওঠে। যা ঘিরে সকাল থেকে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বিরাটি স্টেশন। অভিযোগ ওঠে, মহিলা কামরায় এক মহিলা একটি শিশু ব্যাগে পুরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা প্রথম দাবি করতে থাকেন, ব্যাগের ভিতর বাচ্চাটা ছিল।

Duttapukur Local: দত্তপুকুর লোকালে ব্যাগে করে বাচ্চা চুরি গোটাটাই গুজব, মহিলা আসলেই শিশুটির মা, জানিয়ে দিল GRP
দত্তপুকুরে বাচ্চাচুরি পুরোটাই গুজবImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 26, 2024 | 6:28 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: দত্তপুকুর লোকালে ব্যাগে করে বাচ্চা চুরির গোটা ঘটনাটাই গুজব। প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়ে দিল জিআরপি। আরও বড় বিষয়, শিশুকে ব্যাগে করে নিয়ে যাওয়াই হচ্ছিল না। শিশু কোলেই ছিল। আর যাঁকে চোর অপবাদ দেওয়া হচ্ছে, তিনি আদতেই শিশুটির মা। প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়ে দিল জিআরপি।ওই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। জিআরপি ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, শিশুর বয়স ৬ মা। সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছিলেন মা। তদন্তকারীরা যখন মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, পাশেই ছিল বাচ্চা। বাচ্চাটির ব্যবহারে বোঝা যায় মহিলা পরিচিত। ওই মহিলা পুলিশকে দমদমের একটা ঝুপড়ির ঠিকানা দেন। মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে রেল পুলিশ সেখানে যায়। কিন্তু মহিলা সঠিক ঠিকানা দেখাতে পারেননি। মহিলা মানসিক ভাবে কিছুটা বিকারগ্রস্ত বলে দাবি পুলিশের। তাই আপাতত বাচ্চাটিকে CwC এর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। মহিলার মেডিকেল টেস্ট করানো হচ্ছে। প্রয়োজনে মহিলাকেও হোমে পাঠানো হবে। পরে মহিলার স্মৃতি ঠিক হলে এবং সঠিক ঠিকানা দিতে পারলে প্রয়োজনীয় নথি খতিয়ে দেখে বাচ্চা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

বুধবার সকাল ৮.৪০ মিনিটের শিয়ালদহগামী  দত্তপুকুর লোকালে একটি ভয়ঙ্কর অভিযোগ ওঠে। যা ঘিরে সকাল থেকে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বিরাটি স্টেশন। অভিযোগ ওঠে, মহিলা কামরায় এক মহিলা একটি শিশু ব্যাগে পুরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা প্রথম দাবি করতে থাকেন, ব্যাগের ভিতর বাচ্চাটা ছিল। ব্যাগটা হঠাৎই নাড়াচাড়া করতে দেখে সন্দেহ হয়। প্রথমে মহিলাকে প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু সঠিকভাবে তিনি উত্তর দিতে পারেননি। এরপরই মহিলা কামরায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মহিলাকে প্রাথমিকভাবে মারধর করা হয়। কামরার ভিতরেই শুরু হয় টানাহেঁচড়া। এরপর বিরাটি স্টেশনে ট্রেন থামলে বিক্ষোভকারীরা লাইনে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিরাটি স্টেশনে শুরু হয় রেল অবরোধ। লাইনে নেমে চলতে থাকে বিক্ষোভ-অবরোধ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জিআরপি-আরপিএফ। শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। মহিলাকেও উদ্ধার করে নিয়ে যায় রেলপুলিশ। কেন পুলিশকে মহিলাকে নিয়ে গেল, তা নিয়েও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই মহিলাই বাচ্চা চুরি করে নিয়ে পালাচ্ছিলেন।

কিন্তু প্রশ্ন, কেন এই ‘বাচ্চা চুরির’  দায় নিতে হল এক জন মাকেই? গত কয়েক সপ্তাহে বারাসতের কাজীপাড়া থেকে যে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল, তার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে দত্তপুকুর, খড়দহ, গাইঘাটা-সহ উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায়। বাচ্চা চোর সন্দেহে একাধিক গণপিটুনিরও অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু বারাসতের কাজীপাড়ায় যে শিশুর নিখোঁজ নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত, তার তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসে চরম নৃসংশতা। ওই শিশুটিকে আসলে খুন করেছিলেন তারই জ্যেঠা, তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্য বাচ্চা চুরির গুজব ছড়ান। কিন্তু তারপর থেকে জেলার একাধিক জায়গায় বাচ্চা চুরির গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় কোনও অপরিচিত যুবক-মহিলা দেখেই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। কড়া পদক্ষেপ করা হয় প্রশাসনের তরফ থেকে। গুজবে যাতে কেউ কান না দেন, তার জন্যও প্রশাসনের তরফ থেকে সতর্ক করা হয়। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু তাতেও যে পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি, তারই প্রমাণ মিলল এদিন। এক জন মাকেও দায় নিতে হল তার সন্তান চুরির।