Hooghly: কর্তার মৃত্যুতেই যেন সব শেষ, তীব্র মানসিক অবসাদ উত্তরপাড়ার পরিবারকে ঠেলে দিল হাসপাতালের দরজায়?
Hooghly: শ্যামলী দেবী নিজে স্নাতক পাশ। তাঁর ছেলেও স্নাতক। মেয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। গগনবাবু নিজে কেন্দ্রীয় সংস্থায় কাজ করতেন। দিল্লিতে ছিল পোস্টিং। ছেলে কাজ করতেন নির্মাণ সংস্থায়। টাকার অভাব খুব একটা ছিল না।
হুগলি: মৃত্যু হয়েছে বাড়ির কর্তার। তারপরেই যেন বিষাদের মেঘ ছেয়ে ফেলেছে গোটা বাড়ি। মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন স্ত্রী-সহ দুই সন্তান। বর্তমানে সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সকলেই। প্রসঙ্গত, উত্তরপাড়ার রাজেন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা গগনবরণ মুখোপাধ্যায় কয়েকদিন আগেই মারা যান। তারপর কেটেছে বেশ কয়েকটা দিন। বাড়িতে স্ত্রী শ্যামলী মুখোপাধ্যায় (৮০), ছেলে সৌরভ (৫৮) ও মেয়ে চুমকি (৫২)। শোনা যায়, গগনবরণবাবুর মৃত্যুর পর থেকে কার্যত নিজেদের গৃহবন্দী করে নেন বাড়ির সকল সদস্যই। একদিন আগেই এসেছিল চাঞ্চল্যকর খবরটা। পাশের এলাকার এক আত্মী বৈষ্ণব দাস মুখোপাধ্যায়ের কাছে সৌরভ ফোনে জানান তাঁরা মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন।
এই খবর পেয়ে আর ঠিক থাকতে পারেননি বৈষ্ণববাবু। ছুটে যান সৌরভদের বাড়িতে। গিয়ে দেখেন সত্যিই তাঁদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা একদম ভেঙে পড়েছে। খবর যায় উত্তরপাড়ার চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও পুলিশের কাছে। তাঁরাই তাঁদের উত্তরপাড়ার রাজেন্দ্র অ্যাভিনিউে গগন ভিলা থেকে তাঙা ভেঙে উদ্ধার করেন। ভর্তি করা হয় উত্তরপাড়া হাসপাতালে। বর্তমানে শ্যামলী দেবী কিছু সুস্থ হলেও তাঁর ছেলে ও মেয়ে এখনও সঙ্কটজনক।
শ্যামলী মুখোপাধ্যায় বলছেন, প্রায় ২০ দিনের বেশি সময় তাঁদের কারও সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না। কোনও খোঁজ নেয়নি প্রতিবেশীরা। ঘরে যা ছিল তা দিয়ে কোনওমতে দিন চলেছে। ঠিক করে রান্নাও করতে পারেন না বয়সের কারণে। তারপরেও কোনওমতে দুমুঠো ভাত করে শয্য়াশায়ী ছেলে-মেয়ের মুখে তুলে দিয়েছেন। কিন্তু, শেষ ক’টা দিন কীভাবে কেটে তা এখন আর ঠিক করে মনে করতে পারছেন না তিনি।
প্রসঙ্গত, শ্যামলী দেবী নিজে স্নাতক পাশ। তাঁর ছেলেও স্নাতক। মেয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। গগনবাবু নিজে কেন্দ্রীয় সংস্থায় কাজ করতেন। দিল্লিতে ছিল পোস্টিং। ছেলে কাজ করতেন নির্মাণ সংস্থায়। টাকার অভাব খুব একটা ছিল না। বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর যাবতীয় চিকিৎসা করেছিলেন ছেলেই। কিন্তু, বাবার মৃত্যুর পর সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন সৌরভ। একই অবস্থা মা ও বোনেরও। তীব্র মানসিক অবসাদই ভেঙে দেয় তিনজনের শরীর। এমনটাই মনে করছেন এলাকার লোকজন। এদিন তাঁদের দেখতে হাসপাতালে আসেন উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও।