Dunlop: বিশ্বকর্মা পুজোর আনন্দ এখানে ফিকে, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ডানলপ কারখানা

Dunlop: ছাবারিয়ার হাত বদল হয়ে রুইয়ার হাতে গেলেও ডানলপের ভবিষ্যৎ অন্ধকারেই ডুবে গিয়েছে ক্রমশ। দাবি শ্রমিকদের।

Dunlop: বিশ্বকর্মা পুজোর আনন্দ এখানে ফিকে, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ডানলপ কারখানা
বন্ধ ডানলপ কারখানা (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 17, 2022 | 6:23 PM

হুগলি: একসময় হুগলি শিল্পাঞ্চল পরিচিত ছিল গঙ্গাপাড়ের জুটমিল আর কয়েকটি কারখানাকে কেন্দ্র করে। সেই সময়ের গর্ব ডানলপ আর হিন্দুস্থান মোটর এখন অন্ধকারের অতলে তলিয়ে গিয়েছে। কারণ এখন বিশ্বকর্মা পুজোর আনন্দ এখানে আর নেই। সেই উৎসব আলো, মেলা, খাওয়া আর বিশ্বকর্মা পুজো ছিল শ্রমিকদের কাছে দুর্গাপুজোর সমান।

দেশের প্রথম টায়ার কারখানা সাহাগঞ্জের ডানলপ এখন নিলামে উঠেছে। আর দেশের সর্ববৃহৎ অটোমোবাইল কারখানা হিন্দমোটরের হিন্দুস্থান মোটরে ঝুলছে তালা। একসময় এই দু’টি কারখানায় যাকে নিয়ে গর্ব ছিল গোটা রাজ্যের তথা দেশের। হুগলির সাহাগঞ্জে যে কারখানার শ্রমিকরা গর্বের সঙ্গে বলতেন, ‘আমরা ডানলপের শ্রমিক।’ সেই কারখানা গত কয়েক বছরে শ্মশানে পরিণত হয়েছে।

ছাবারিয়ার হাত বদল হয়ে রুইয়ার হাতে গেলেও ডানলপের ভবিষ্যৎ অন্ধকারেই ডুবে গিয়েছে ক্রমশ। দাবি শ্রমিকদের। ২০১১ সালে সাসপেনশানের নোটিশ ঝোলে ডানলপে। এরপর একাধিকবার বৈঠক আলোচনার পরেও ডানলপ আর ডানলপ হয়ে ওঠেনি। সেই তিন শিফটে কাজ শ্রমিকদের ব্যস্ততা সব কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়। শ্রমিকরা তাঁদের পিএফ গ্রাচুইটি বকেয়ার দাবি জানাতে থাকেন।

কাঁচামাল সরবরাহকারী অন্যান্য পাওয়াদাররা মামলা করে হাইকোর্টে। ২০১৭ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে লিকুইডেশনে চলে যায় দেশের প্রথম এ্যারো টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানা ডানলপ। এর আগে তৃণমূল সরকার ডানলপ অধিগ্রহনের চেষ্টা করে। যদিও, কেন্দ্রের সম্মতি না মেলায় তা সফল হয়নি। শতাধিক শ্রমিককে মাসিক দশ হাজার টাকা করে ভাতার ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের নির্দেশে লিকুইডেটর নিলাম করে ডানলপের সম্পত্তি বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করে।

এ রাজ্যের সাহাগঞ্জ ও তামিলনাড়ুর আম্বাতুরে ডানলপের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি নিলাম করে বকেয়া মেটাতে বলে কোর্ট। ডানলপের শ্রমিক পরিবারগুলো যাঁরা কোয়ার্টারে থাকেন তাঁরা আশায় ছিল একদিন হয়ত আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু চোখের সামনে সমস্ত কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে যেতে দেখে সেই বিশ্বাসও ভেঙে গিয়েছে।

শ্রমিকরা তাঁদের সন্তানরা বুঝতে শিখেছে যে কারখানায় কাজ করে তাদের পেট চলত এখন সেই কারখানা আর বাঁচানোর রাস্তা নেই। কারখানা নিলামের টাকায় হয়ত শ্রমিকদের বকেয়া মিটবে কিন্তু শ্রমিক পরিবারের ছেলে মেয়ে যারা পড়াশোনা শিখেছে ডালনপে বড় হয়েছে তাঁদের কী হবে?

কারখানার জমিতে কারখানার দাবিতে মিছিল আন্দোলন হয়েছে। মঞ্চ বেঁধে ধর্না হয়েছে কিন্তু ডানলপের পরিস্থতির বদল হয়নি।বিশ্বকর্মা পুজো ছিল ডানলপ শ্রমিকদের কাছে দুর্গা পুজো।আলোর রোশনাই।খাওয়া দাওয়া শ্রমিকরা খুব আনন্দ করত এখন সেসব অতীত। একই অবস্থা হিন্দুস্থান মোটরের।২০১৪ সালে সাসপেনশানের নোটিশ ঝোলার পর আর খোলেনি কারখানার গেট। শ্রমিক আবাসনের জল বিদ্যুৎ এর লাইন কেটে দেওয়া হয়। চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে হিন্দমোটরের শ্রমিকরা। এমন অবস্থায় পুজো উৎসব হয় না। আর তাই এক সময় হাজার হাজার লোক বিশ্বকর্মা পুজোর দিন যে ভাবে মেতে উঠত সেসব আর দেখা যায় না।