Mamata Banerjee: ‘সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খবর পজিটিভলি করুন…বিজ্ঞাপন নিশ্চই পাবেন’
Howrah: বাংলা সংবাদমাধ্যমের প্রতি কিঞ্চিত্ উষ্মা প্রকাশ করেই বলেন, "একটা নেগেটিভ জিনিসকে পজিটিভ করা যায়। বাংলায় আমরা লক্ষ্য করি, সারাদিন নেগেটিভিটি করে বেড়ায়।"
হাওড়া: বঙ্গে পুরভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। তার আগে একের পর এক প্রশাসনিক বৈঠক সারছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হাওড়ায় (Howrah) প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। সেখানে নরমে-গরমে কাজের খতিয়ান চান তিনি। খোঁজ নেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের। সেখানেই স্পষ্ট গ্রামীণ পত্রিকাগুলির কর্ণধারদের জানিয়ে দেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরলেই মিলবে বিজ্ঞাপন।
প্রশাসনিক বৈঠকে ঠিক কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? এক গ্রামীণ পত্রিকার কর্ণধার প্রশাসনিক সভাতেই বলেন, “দিদি, আমরা গ্রামীণ পত্রিকায় কাজ করি। আমার কাগজ গত ১১ বছর ধরে চলছে। কিন্তু আমরা যারা তথাকথিত ছোট পত্রিকায় কাজ করি তাদের আর্থিক অবস্থা খুব সঙ্গীন। কারণ আমরা বিজ্ঞাপন পাই না। এ ব্যাপারে যদি একটু নজর দেন তবে ভাল হয়।”
উত্তরে, মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যে গ্রামীণ পত্রিকাগুলো সরকারের ডেভলপমেন্ট কাজ পজিটিভলি, পজিটিভ ভাবে করবেন, আমি ডিএমকে বলব, তাদের যেন আমরা বিজ্ঞাপনটা দিই।”
এখানেই না থেমে তাঁর আরো সংযোজন, “সরকার সবসময় তার মেশিনারি দিয়ে পাবলিসিটি করে না। আজ এতগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন হল, বড় বড় টিভিরা একবার দেখাবে, ছেড়ে দেবে। কিন্তু, গ্রামীণ এই পত্রিকাগুলো লিখে কিন্তু গ্রামে গ্রামে এটা পৌঁছয়। সুতরাং লোকাল যারা রয়েছে তাদের কিন্তু আমাদের দেখে নিয়ে, যারা পজিটিভ এই কাজ টা করে…কেউ একটা থাকবে…ডিআইসিও, ডিএমের সঙ্গে কথা বলে দেখে নেবেন। আর তাঁরা যে কাজটা করছেন, প্রতিদিন একটা করে কপি ডিএম অফিসে পাঠাবেন। ডিআইসিওকে পাঠাবেন। পুলিশের এসপি এবং পুলিশ কমিশনারেটকে পাঠাবেন।”
মুখ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, “কেন বলছি, পুলিশকে পাঠাবেন, কারণ, তারাও দেখে নেবে যে নেগেটিভ খবর না পজিটিভ করছে। যত পজিটিভ দেখবেন তত বিজ্ঞাপন দেখবেন। তার কারণ আমি চাই, তারা ভাল করে কাজ করুক, ভাল জিনিসগুলো তুলে ধরুক।” এরপর, বাংলা সংবাদমাধ্যমের প্রতি কিঞ্চিত্ উষ্মা প্রকাশ করেই বলেন, “একটা নেগেটিভ জিনিসকে পজিটিভ করা যায়। বাংলায় আমরা লক্ষ্য করি, সারাদিন নেগেটিভিটি করে বেড়ায়। পজিটিভটা আর করে না। পজিটিভ করুন। বিজ্ঞাপন নিশ্চই পাবেন।”
এখানেই শেষ নয়, সংবাদমাধ্য়মের কর্মীদের জন্য মুখ্য়মন্ত্রী আরও বলেন, “‘মাভৈ’-তে যখন সমস্যা হচ্ছে, তখন, এক কাজ করি। ‘মাভৈ’-টা স্বাস্থ্যসাথীতে কনভার্ট করে দিই। তাহলে সকলের সুবিধা হবে। সকলেই ওই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।” পাশাপাশি, হাওড়া ভূমি দফতরের কাজে গাফিলতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দৃশ্যতই রেগে যেতে দেখা যায় তাঁকে। মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘কারা এত বড় বড় নেতা দেখি একটু।’ মমতা বলেন “ল্যান্ড ডিপার্টমেন্টের অনেকে ইচ্ছে করে ডিলে করিয়ে দিচ্ছে। আগে আমরা একটা সিস্টেম করেছিলাম। সেটা বন্ধ হয়েছে কেন? কার নির্দেশে হয়েছে? কারা এত বড় বড় নেতা দেখি”। এর পর কাজের খতিয়ান শুনে মমতা জিজ্ঞেস করেন কেন দীর্ঘদিন ধরে না হওয়া কাজ পড়ে রয়েছে।
এর পর শিল্পোদ্যোগের কথায় আসেন মমতা। বলেন, ‘আমরা বাংলা ডেয়ারি করছি’। উল্লেখ্য, গত আগস্টেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের দুগ্ধশিল্পকে চাঙ্গা করতে মাদার ডেয়ারি, মেট্রো ডেয়ারির পর সম্পূর্ণরূপে রাজ্য সরকারি উদ্যোগে দুগ্ধজাত পণ্যের নতুন সংস্থা চালু হবে। যার নাম হবে ‘বাংলার ডেয়ারি’। সদ্য উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীই ‘বাংলার ডেয়ারি’র রূপরেখা জানিয়েছিলেন মমতা। এদিনও এ নিয়ে বিস্তারিত জানান তিনি।
আরও পড়ুন: Post Poll Violence: ‘শুভেন্দুর চক্রান্তে সিবিআই তলব’! হাজিরা এড়ালেন ৩ তৃণমূল নেতা