Howrah Road Accident: মর্মান্তিক! টিউশন পড়ে ফেরার পথে ময়লা ফেলার গাড়ির চাকায় পিষে মৃত্যু কিশোরীর
Howrah: পুরসভার গাড়িটি পিছন দিক থেকে পিষে দিয়ে চলে যায় ছোট্ট মেয়েটিকে।
হাওড়া: পুরসভার ময়লা ফেলার গাড়ির চাকায় পিষে মৃত্যু এক নাবালিকার। লিলুয়ার বেনারস রোডের কাছে কিউ রোড ক্রসিংয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাইভেট টিউশন থেকে পড়ে বাড়ি ফেরার সময় মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে।
মৃতের নাম সাক্ষী সাউ (১৩)। সাক্ষী অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। আজ দুপুর একটা নাগাদ ওই নাবালিকা প্রাইভেট টিউশন থেকে পড়ে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় ডাম্পারটি পিছন দিক এসে কিশোরীকে পিষে দিয়ে চলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। আচমকা এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন স্থানীয়রা। বেনারস রোডর উপর বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। এদিকে, পুরসভার গাড়িতে ধাক্কায় মারায় উত্তেজনা আরও ছড়ায়।
বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, রাস্তা জুড়ে ভ্যাটের জঞ্জাল পড়ে থাকায় রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে থাকে সর্বদা। আর তার জন্যই এদিন এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সামনে বেলগাছিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড থাকায় প্রায়দিনই দিনের ব্যস্ত সময় পুরসভার বড় বড় ডাম্পার ঢোকে। তৈরি হয় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ডাম্পারটি খালি ছিল। সেটি ময়লা তুলতে আসছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পরই পালিয়ে যায় ডাম্পারটির চালক। তবে ডাম্পারটিকে আটক করেছে লিলুয়া থানা। এদিন এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের জেরে কিছুটা যানজট হলেও পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনা প্রসঙ্গে পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। খোঁজ নিয়ে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ডাম্পারটি একটি বেসরকারি সংস্থার। তারা পুরসভার বিভিন্ন ভ্যাট থেকে ময়লা তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলার কাজ করে। এদিন ওই ডাম্পারটি পুরসভার ময়লা ফেলার কাজ করতে গিয়েই কিশোরীকে ধাক্কা মেরেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়লা ফেলার কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুরসভা।” প্রয়োজনে মৃত কিশোরীর পরিবারের পাশে থাকারও আশ্বাস এদিন দেন মুখ্য প্রশাসক।
এদিকে, এদিন দুর্ঘটনার পর মৃত কিশোরীর কাকা উমেশ সাউ অভিযোগ করেন, তাঁর ভাইঝি হেঁটে যাচ্ছে দেখেও ডাম্পারের চালক ডান দিকে চেপে চাপা দিয়ে দেয় তাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা এমনটাই জানিয়েছেন। চালকের কড়া শাস্তির দাবি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, লিলুয়ার ওই রোডের বাসিন্দা সাক্ষী স্থানীয় একটি হিন্দি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করতো। তার বাবা সন্তোষ সাউ কাগজ কুড়িয়ে তা বিক্রি করেন। হতদরিদ্র পরিবারে সাক্ষীর দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে। দুর্ঘটনায় মেয়ের মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে মা পুজারাণী সাউ এদিন বার বারই জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। বাবা সন্তোষও কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।