Untold Story of Sakhina : তিরিশে শুধু মাধ্যমিকই নয়, স্বামীর ঘরের যন্ত্রণা ভুলিয়ে সখিনাকে আলো দেখিয়েছে ব্রাহ্মণ পরিবার

Untold Story of Sakhina : প্রসঙ্গত, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছাড়েন সখিনা। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বান্ধবী কাকলি রায়চৌধুরী।

Untold Story of Sakhina : তিরিশে শুধু মাধ্যমিকই নয়, স্বামীর ঘরের যন্ত্রণা ভুলিয়ে সখিনাকে আলো দেখিয়েছে ব্রাহ্মণ পরিবার
বাঁদিকে ইলা রায়চৌধুরি, ডানদিকে সন্তান কোলে সখিনা খাতুন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 24, 2023 | 11:01 PM

মুর্শিদাবাদ : “ও ইদেও আনন্দ করে, দুর্গাপুজোতেও করে। সব মিলিয়ে আমাদের সবটা খুবই ভাল কাটে।” সখিনা খাতুনকে পাশে নিয়ে হাসিমুখে এ কথাই বললেন তাঁর বান্ধবী কাকলি রায় চৌধুরী। এই সখিনাই সম্প্রতি তিরিশ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় (Madhyamik Exam 2023) বসে গোটা রাজ্যবাসীর নজর কেড়েছেন। স্বামীর ঘর ছেড়েছেন বহু দিন আগে। রয়েছে দুই সন্তান। বয়েসও ছুঁয়ে ফেলেছে তিরিশের কোটা। কিন্তু, এই বয়সেও অদম্য জেদ পড়াশোনার। নিশ্চয় ভাবছেন এ আর নতুন কী! তিরিশে তো অনেকেই পড়াশোনা করেন। কিন্তু, তিরিশে মাধ্যমিক দিতে দেখেছেন কাউকে? হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। তিরিশেই মাধ্যমিক দিয়ে ইতিমধ্যেই সকলের নজর কেড়ে নিয়েছেন মুর্শিবাদের হরিহরপাড়ার চোয়া এলাকার বাসিন্দা সখিনা খাতুন। এই সখিনাই থাকেন এলাকার এক ব্রাহ্মণ পরিবারে। ধর্মের বেড়াজালকে ফুৎকারে উড়িয়ে সখিনাকে আপন করে নিয়েছেন ব্রাহ্মণ দম্পতি সুভাষ রায়চৌধুরী ও ইলা রায়চৌধুরী। সখিনা তো বলেই দিলেন, ওখানে তো আমি মেয়ের মতোই থাকি।

প্রসঙ্গত, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছাড়েন সখিনা। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বান্ধবী কাকলি রায়চৌধুরী। জায়গা দিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে। নিজের মেয়ের মতোই সখিনাকে আপন করে নিয়েছিলেন ব্রাহ্মণ দম্পতি সুভাষ রায় চৌধুরী ও ইলা রায়চৌধুরী। তাঁদের বাড়িতে থেকেই রোজা, ইদ, শবেবরাত পালন করেন সখিনা। যদিও কাকলি দেবীর দাবি, পরিবার পাশে ছিল বলেই তিনি সখিনাকে বাড়িতে আনার সাহস দেখাতে পেরেছিলেন। বন্ধুর পাশে বসেই তিনি বলেন, “আমার পরিবার পাশে না থাকলে ওকে আমি বাড়িতে আনতে পারতাম না। পরিবারই সব আমার কাছে। ওদের সিদ্ধান্তেই সবটা হয়েছে। আমি তো ওকে শুরু থেকেই বলেছি, এখানে থাক তুই। তোর ধর্ম তুই পালন করবি। আমার ধর্ম আমি। কোনও কিছুতে আমরা বাধা দেব না। ও ইদেও আনন্দ করে, দুর্গাপুজোতেও করে। সব মিলিয়ে আমাদের সবটা খুবই ভাল কাটে। এখন আমরা চাই ও ভাল রেজাল্ট করে নিজের পায়ে দাঁড়াক। বাচ্চাগুলোর পাশে থাকুক।”  

অন্যদিকে কাকলি দেবীর মা ইলা রায়চৌধুরী বলেন, “আমার মেয়ে আর সখিনা দীর্ঘদিনের বন্ধু। তখন সখিনার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সখিনার বাড়িতে আমার মেয়ে প্রায়ই যেত। কিন্তু, সখিনার বাড়িতে রোজই অশান্তি হতো। সখিনার উপর খুব অত্যাচারও হয়েছে। মারধরও করা হয়েছে। জুতো থেকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরই আমার এখানে ওকে ঠাঁই দিই। আমার মেয়ের মতোই ও এখানে থাকে। এখান থেকেই পড়াশোনা করছে। ওদের ধর্মীয় রীতিতে যা যা আছে সবই ও মেনে চলে। আমার বাড়িতে কোনও বাধাই নেই। ওর ধর্ম ও করে, আমার ধর্ম আমি করি। ওদের পরবের দিন বাড়িতে আনন্দ-অনুষ্ঠান হয়।”